কক্সবাজারে ৩ মাসে তিনগুণ লবণ উৎপাদন

fec-image

কক্সবাজারে লবণ উৎপাদনে নতুন রেকর্ড হতে চলেছে। গত মৌসুমের তুলনায় এই মৌসুমে তিনগুণের চেয়ে বেশি লবণ উৎপাদন হয়েছে।

বিসিক জানিয়েছে, গত ২০২১-২২ মৌসুমে এই পর্যন্ত লবণ উৎপাদন হয়েছিল ৮৭,০১৮ মেট্রিক টন। চলতি ২০২২-২৩ মৌসুমে যার উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ২৯০,৩৪৭ মেট্রিক টন। যা অতীতের তুলনায় তিনগুণের চেয়ে বেশি। সাধারণত নভেম্বর মাস থেকে লবণের মৌসুম ধরা হয়।

বিসিক কক্সবাজারের লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয় ২২ জানুয়ারি থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত লবণ উৎপাদন, চলাচল, মজুদ, বাজারদর সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

পরিদর্শক (উন্নয়ন) মো. ইদ্রিস আলীর মাধ্যমে পাওয়া সাপ্তাহিক ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ ৮৮,৪৪৫ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হয়েছে কুতুবদিয়ার লেমশীখালীতে। যেখানে গত মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল ২৯,৭০০ মেট্রিক টন।

গতবছর যেখানে ৬,৫৬৩.৪৮ একর জমিতে লবণ উৎপাদন হয়েছিল, সেখানে এই বছর ১৫,০০০ একরে চাষ হচ্ছে।

ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত ও আমদানি না হওয়ার খবরে চাষীরা উৎসাহের সাথে লবণ উৎপাদনের মাঠে নেমে পড়েছে। যার সুফল মিলছে মৌসুমের শুরুতেই।

এই ধারা অব্যাহত থাকলে এই মৌসুমে লবণ উৎপাদনে রেকর্ড হবে বলে জানিয়েছে চাষী ও ব্যবসায়ীরা।

বিসিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ পর্যন্ত লবণ উৎপাদন হয়েছে মহেশখালীর উত্তর নলবিলা ১৭,৩৪০, গোরকঘাটা ৮,৫০০, মাতারবাড়ি ৮,২৬০, ঈদগাঁও গোমাতলী ৯,২৯০, সদরের চৌফলদন্ডী ১৭,২০০, দরবেশকাটা ২২,০০০, চকরিয়া ৮,০০০, ডুলাহাজারা ১১০, ফুলছড়ি ৩,২৩০ এবং টেকনাফে ১৪,২৮২ মেট্রিক টন। এছাড়া চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পূর্ব বড়ঘোনায় ৬,৫৭৭ একরে ৭২,২৬০ মে.টন এবং সরলে ১,৫৯৯ একরে ২০,০৭০ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হয়েছে।

বিসিকের প্রদর্শনী কেন্দ্র সমূহের ৯৪.৫২ একর জমিতে এপর্যন্ত পেয়েছে ১,১৬০ মেট্রিক টন লবণ।

এবছর লবণের দাম মণপ্রতি গড়মূল্য ৪৫০ টাকা।

২০২১-২২ মৌসুমে লবণ জমির পরিমাণ ছিল ৬৩,২৯১ একর। চলতি ২০২২-২৩ মৌসুমে লবণ জমির পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৭৩,৬৩০ একর।

তবে, এ সপ্তাহে সমগ্র লবণ উৎপাদন এলাকায় দিনের প্রথমাংশে কুয়াশা বিরাজ করায় লবণ উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিসিক।

এ বছর দেশে লবণের চাহিদা ধরা হয়েছে ২৩.৮৫ লক্ষ মেট্রিক টন। যা গত বছর ছিল ২৩.৩৫ লক্ষ মেট্রিক টন। গত মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ১৮,৩২,০৩৬ মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমের শুরুতে (৩০/১০/২২ পর্যন্ত) মাঠ পর্যায়ে লবণ মজুদ ছিল ০.৪০ মেট্রিক টন।

বিসিকের হিসেবে লবণ উৎপাদনকারী/চাষী রয়েছে ৩৭,২৩১ জন। চলতি মৌসুমে দেশে লবণ জমির পরিমাণ নিরূপণে জরিপ কাজ প্রক্রিয়াধীন।

লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয় (বিসিক) কক্সবাজারের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. জাফর ইকবাল ভূইয়া জানিয়েছেন, লবণের ন্যায্য মূল্য না থাকায় গত মৌসুমে অনেক চাষযোগ্য জমি অনাবাদি ছিল। এবার সেসব জমিও চাষাবাদের আওতায় এসেছে। সঠিক মূল্য পাওয়ায় চাষীরা খুশি। এই পর্যন্ত লবণ উৎপাদন গত মৌসুমের তিনগুণের চেয়ে বেশি বেড়েছে।

ন্যায্যমূল্য ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লবণের উৎপাদন রেকর্ড ছড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন ডিজিএম মো. জাফর ইকবাল ভূইয়া।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, লবণ উৎপাদন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন