৪ শতাধিক হোটেল-রেস্তুরা সহ ৭ হাজার বাড়ির বর্জ্য

কক্সবাজারে ৪ শতাধিক হোটেলসহ ৭ হাজার বাড়ির বর্জ্য অপসারণে মাত্র ২টি ট্রাক

fec-image

কক্সবাজারের কলাতলীর ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল- রেস্তোঁরাসহ এলাকার (১২নং ওয়ার্ড ) ৭ হাজার বসতঘরের বর্জ্য অপসারণে মাত্র ২টি ট্রাক কাজ করছে। শুধু হোটেল-রেস্তোঁরাতেই দৈনিক সৃষ্টি হয় ৮৪ টনের বেশি আর্বজনা। এই আর্বজনা অপসারণে অন্তত ১৫টি ট্রাক প্রয়োজন। এছাড়া ওই এলাকায় ঝাড়ুদারসহ পরিচ্ছন্ন কর্মী রয়েছে মাত্র ৬৫ জন। প্রয়োজন ২ শতাধিক। তারমধ্যে আর্বজনা অপসারণে নির্দিষ্ট ডাম্পিং ব্যবস্থা না থাকায় শহরের কস্তুরাঘাটে আর্বজনা ফেলে তা পুড়ানো হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অসন্তুষ্ট শহরবাসীসহ খোদ পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে হিমশিত খাচ্ছে সেবা প্রদানে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের (১২নং ওয়ার্ড) কাউন্সিলর এমএ মঞ্জুর জানান, দেড়’শ বছরের পৌরসভায় ১২নং ওয়ার্ডের বয়স মাত্র ১২ বছর। যেখানে এই মুহূর্তে হোটেল-মোটেল-কটেজ-গেস্ট হাউজ ও রেস্তোঁরার সংখ্যা ৪ শতাধিক। বেশিরভাগ হোটেলের সাথে যুক্ত রয়েছে রেস্টুরেন্ট। এছাড়া এই ওয়ার্ডে বসতঘর রয়েছে ৭ হাজারের বেশি। যেখান থেকে শত শত টন বর্জ্য বের হয়। পর্যটন মৌসুমে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। এই বর্জ্যগুলো অপসারণের জন্য যতগুলো গাড়ি এবং লোকবল প্রয়োজন তা নেই বললেই চলে। রয়েছে মাত্র ২টি ট্রাক। যা দৈনিক সর্বোচ্চ ৫-৬ বারের বেশি বর্জ্য নিতে পারেনা। তার মধ্য শুক্রবারে থাকে বন্ধ। এমনও রয়েছে একটি বড় হোটেলের আর্বজনাতেই দুই ট্রাক ভর্তি হয়ে যায়। ফলে কলাতলীর আর্বজনা পরিষ্কার করলে লাইট হাউস রয়ে যায়। আবার লাইট হাউস পরিষ্কার করলে সুগন্ধা রয়ে যায়। তার মধ্যে রেস্তুরার আর্বজনা পঁচনশীল হওয়ায় সঠিক সময়ে সরাতে না পারলে খুবই বাজে অবস্থা হয়। এই ক্ষেত্রে মেশিনারি সাপোর্ট সহ পর্যাপ্ত লোকবল দরকার। ২টি ট্রাকের জায়গায় প্রয়োজন অন্তত ১৫টি। তিনি আরো জানান, পর্যটকের সমাগম স্থান ওই ওয়ার্ডে দুই দফায় কাজ করা ১৩ ঝাড়ুদারসহ পরিচ্ছন্নতা কর্মী রয়েছে ৬৫ জন। যেখানে প্রয়োজন দুই’শতাধিক। বর্তমানে পৌরসভার সড়ক ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় ঝাড়ুদারসহ পরিচ্ছন্নতা কর্মী বাড়ানো জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শহরের কস্তুরাঘাট এলাকায় আর্বজনা ফেলে পুড়ানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি কোনভাবেই পরিবেশসম্মত নয়। এই অব্যবস্থাপনায় স্থানীয়দের পাশাপাশি অসন্তুষ্ট খোদ পৌর মেয়র। অনেকটা অপারগ হয়ে ওখানে আর্বজনা ফেলা হচ্ছে। তবে শহরের বর্জ্য ফেলার জন্য রামু উপজেলার চেইন্দায় আধুনিক মানের বড় ডাম্পিং স্টেশন করার প্রস্তাবনা রয়েছে। যেখানে আর্বজনাগুলো সার হিসেবে তৈরি করা হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে চমৎকার একটি আবর্জনা অপসারণ ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে।

এত সীমাবদ্ধতার মাঝেও পৌরসভার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এই শহর পরিষ্কার রাখতে। এদিকে হোল্ডিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন পৌর করের বিষয়ে জনগণের সহযোগিতা কম। যার কারণে পৌরসভায় অর্থনৈতিক সংকট রয়েই যাচ্ছে। এসব মোকাবিলা করেই নিজস্ব আয়ের মধ্য দিয়ে শত শত কর্মীদের বেতন দিতে হয়।

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার পৌরসভার কনজারভেন্সি ইন্সপেক্টর (সি.আই) কবির হুসাইন জানান, শুধু হোটেল-রেস্তোঁরাতেই দৈনিক ৮৪ টনের বেশি আর্বজনার সৃষ্টি হয়। মেশিনারি সার্পোট, লোকবল সংকটসহ নানা সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান হবে। এতে করে প্রতিদিন পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন একটি পর্যটন নগরী পাওয়া যাবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, বর্জ্য
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন