কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি

fec-image

কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। কুতুবদিয়া, সেন্টমার্টিনসহ উপকূলীয় এলাকার ত্রাহি অবস্থা। কক্সবাজার সদর, রামু, ঈদগাঁও, চকরিয়া, উখিয়া ও টেকনাফের অধিকাংশ জায়গা রেকর্ড পরিমাণ প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার মানুষদের চরম দুর্দিন যাচ্ছে।

বিভিন্ন এলাকায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্ষেতখামার। টানা বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও পাহাড় ধসে এ পর্যন্ত ২০ জনের প্রাণহানির খবর রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ করছে প্রশাসন। চলছে মাইকিং। অনেক এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছে মানুষজন।

২৮ জুলাই পর্যন্ত জেলায় ৫১ হাজার ১৫০টি পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। দুর্গত মানুষদের সহায়তায় স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, সামাজিক ব্যক্তিবর্গ সাধ্য মতো মানবিক সহায়তায় এগিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা দুর্গতদের জন্য কাজ করছে।

এদিকে, কক্সবাজার জেলায় সাম্প্রতিক বন্যা ও পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৫০ মে. টন চাল, নগদ ১০ লক্ষ টাকা, শুকনো ও অন্যান্য খাবার মিলে ২ হাজার প্যাকেট বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ২৯ জুলাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শাহজাহান স্বাক্ষরিত পত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগ পরিস্থিতিতে বিশেষ সভা করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) বিকালের ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার বলেছেন, টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের ৫১টি ইউনিয়নের প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। পরিস্থিতি দিনদিন ভয়াবহ হচ্ছে। পানিবন্দি মানুষকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে খাবার। পাহাড় ধসে ও বানের পানিতে নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শ্রাবস্তী রায়, সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা) মো. নাসিম আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বিভীষণ কান্তি দাশ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুএমং মারমাসহ বিভিন্ন দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা শেষে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন সংশ্লিষ্ট কর্মীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ করা হয়। জেলার ৪১ ইউনিয়নের ৪১৩ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দিনদিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন