কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে দেশের প্রথম সিসিইউ’র আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নবপ্রতিষ্ঠিত করোনারী কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে সিসিইউ চালুর ঘটনা এটাই দেশে প্রথম।

বৃহস্পতিবার(২৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে সিসিইউ’র নাম ফলক উন্মোচনের মধ্যদিয়ে উদ্বোধন করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

উদ্বোধনী কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর তিনি ঘুরে দেখেন সিসিইউ এবং আইসিইউ চিকিৎসা কার্যক্রম। এরপর যান হাসপাতালের নবজাতকের বিশেষ ইউনিটে। হাসপাতালে সিসিইউ প্রতিষ্ঠাকে জেলার স্বাস্থ্য সেবা খাতে ‘নতুন দিগন্তের সূচনা’ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের জীবন রক্ষায় তাৎক্ষনিকভাবে এই ইউনিটে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে।

জেলা সদর হাসপাতালের বর্তমান মূল ভবনের চার তলায় ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) পাশে স্থাপন করা হয়েছে সিসিইউ। ইতোমধ্যে ইউনিটে শয্যাসহ প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা সামগ্রী এবং যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। ইউনিটের মূল ফটকে লাগানো হয়েছে সাইনবোর্ড। সিসিইউতে এক কোটি টাকার বেশি যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সামগ্রী সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. পু চ নু, সিভিল সার্জন ডা. আবদুস সালাম, সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীন আবদুর রহমান।

জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শাহীন আব্দুর রহমান বলেন, ‘এই হাসপাতালে হৃদরোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য করোনারী কেয়ার ইউনিট চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পূরণ হয়েছে কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত একটি স্বপ্ন। প্রাথমিকভাবে চার শয্যা নিয়ে এ ইউনিট চালু করা হলেও পরবর্তীতে শয্যা আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে অত্যাধুনিক মনিটর, শয্যা যুক্ত করা হয়েছে। থাকছে সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। ইকোকার্ডিওগ্রাম এবং অন্যান্য পরীক্ষা থাকছে। তবে ক্যাথল্যাব না থাকায় এনজিওগ্রাম বা অপারেশন আপাতত হবে না। আমরা পর্যায়ক্রমে এ ইউনিটকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পুচনু বলেন, ‘সিসিইউতে একজন জ্যেষ্ঠ হৃদরোগ পরামর্শক, একজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন কনিষ্ঠ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া সিসিইউ পরিচালনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চারজন চিকিৎসা কর্মকর্তা ও চারজন সেবিকা (নার্স) সার্বক্ষণিক পালা করে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রাথমিকভাবে এতে চার শয্যা রাখা হয়েছে। অর্থাৎ একই সাথে চারজন রোগীকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দেয়া যাচ্ছে।’

হাসপাতাল সূত্র জানায়, কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে একটি তীব্র অবস্থা হয়। ওই অবস্থায় এসব রোগীকে সিসিইউতে রাখা হয়। হৃদরোগীকে পুরোপুরি নিরাময়ের জন্য স্ট্রোক-পরবর্তী পুনর্বাসন জরুরী। সিসিইউতে এই কাজটাই করা হয়।

ডা. পুচনু বলেন, ‘আমি এই হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব নেয়ার পর দেশের প্রথম জেলা হাসপাতাল হিসেবে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে আইসিইউ চালু করা হয়। যা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন। এবার সিসিইউ যুক্ত হলো। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে সিসিইউ চালুর ঘটনাও দেশে প্রথম। চিকিৎসা সেবা খাতে কক্সবাজারবাসীর জন্য এটি বিশাল প্রাপ্তি বলা যায়।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন