parbattanews

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের বেহাল অবস্থা; ধানের চারা রোপন করে প্রতিবাদ

কোটবাজার জনবহুল স্টেশনে ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী

কক্সবাজার-টেকনাফ (শহীদ এটিএম জাফর আলম) সড়কটি দীর্ঘদিনেও মেরামত কিংবা সংষ্কার না হওয়ায় সড়কের কোটবাজার জনবহুল স্টেশনে ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

বুধবার (৩১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কোটবাজার এলাকায় সড়কে ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানান তারা। সড়কে চারা রোপণে অংশ নেয় স্থানীয় বাসিন্দা, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ পথে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় পথচারী প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক সংস্কারে ধীরগতির কারণে যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে জেলার সাধারণ যাত্রীরা। সড়কের ৫০ কিলোমিটার অংশের সংস্কার কাজ শুরু হলেও গত পাঁচ মাসে কাজ এগিয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, টানা ১২ দিনের বৃষ্টির কারণে সড়কের ওপরে আগে থেকে থাকা বিটুমিনের আস্তরণ তোলা সম্ভব হয়নি। এ কারণে সড়কের মূল কার্পেটিংয়ের কাজও শুরু করা যাচ্ছে না।

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার। এর মধ্যে তিনটি পৃথক প্রকল্পের আওতায় ৭৯ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার ও উন্নয়নকাজে ৪৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। সড়ক বিভাগের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এই কাজের তত্ত্বাবধান করছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দুটি প্রকল্পের অধীনে ৫০ কিলোমিটারের সংস্কার কাজ শুরু হয়। পাঁচ মাসের কাজে অগ্রগতি হয়েছে ৩০ শতাংশ। যার কারনে দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে স্থানীয় পথচারীদের। পরিশেষে অভিনব প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষেরা।

ভুক্তভোগীরা জানান, রোহিঙ্গা শিবিরে কর্মরত আছেন ২ হাজার বিদেশিসহ অন্তত ১১ হাজার চাকরিজীবী। তাঁদের আনা–নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে ২ হাজারের বেশি প্রাইভেট কার। রোহিঙ্গা শিবিরে দৈনিক গড়ে ৪ শতাধিক ট্রাকে মালামাল পরিবহন হচ্ছে। এ ছাড়া টেকনাফ সীমান্ত বাণিজ্যে আমদানি-রপ্তানির ট্রাক, পর্যটকদের গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে আরও এক হাজারের বেশি। ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা, জিপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলে আরও ৭ হাজার। ফলে সড়কটিতে যানবাহন চলাচলে চাপে লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে সড়ক।

প্রতিবাদকারীরা অভিযোগ করে জানান, রোহিঙ্গা আসার পর থেকে অতিরিক্ত যানবাহন বেড়ে যাওয়ায় সড়কের কোটবাজার, মরিচ্যা, উখিয়া সদর, কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী পর্যন্ত প্রায় ৪৫ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে বড় বড় পাঁচ শতাধিক খানাখন্দ ও ভাঙা রয়েছে। খানাখন্দ অতিক্রম করে মালবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস চলছে ঝুঁকি নিয়ে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রতিদিন দেশি বিদেশি ভিআইপিরা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলেও উখিয়া-টেকনাফের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছেনা।

সওজ কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, সড়কের দুই পাশে নালা খনন, বৈদ্যুতিক খুঁটি, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ভূগর্ভস্থ টিঅ্যান্ডটি ও ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড লাইন অপসারণ ও মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। সাম্প্রতিক টানা ভারী বর্ষণে সড়কের উন্নয়নকাজ ব্যাহত হয়েছে। বৃষ্টির কারণে সড়কের ওপরে ‘কালো চামড়াথ অর্থাৎ বিটুমিন তুলে ফেলা সম্ভব হয়নি। বিটুমিন তুলে ফেলার পরই সেখানে পাঁচ ইঞ্চি পুরু কার্পেটিং হবে। আগামী ২০২০ সালের জুনের মধ্যে অবশিষ্ট ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করা হয়ে যাবে।

Exit mobile version