কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ভেসে এলো মাছের ঝাঁক
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ভেসে এসেছে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ। ছোট আকারের বিভিন্ন প্রজাতির এসব মাছ সবই মৃত। সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে ডায়াবেটিস পয়েন্ট পর্যন্ত মাছে ছেয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে জোয়ারের তোড়ে এসব মরা মাছ কূলে ভেসে আসে।
সকালে কূলের কাছেই দুটি বোট জাল বসিয়ে মাছ ধরছিলেন। মাছের বড় একটি ঝাঁক এসে জাল ছিঁড়ে ফেলে। পরে জালসহ কূলে ভেসে আসে।
এই মৃত মাছ দেখতে ও কুড়াতে উৎসুক জনতার ভিড় নামে সৈকতে। এই মাছ নিয়ে নানা মন্তব্য করছে অনেকে।
কেউ বলছেন, ট্রলিং জাহাজ থেকে ছোট মাছগুলো ফেলে দেওয়ায় কূলে ভেসে এসেছে। আবার কেউ বলছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে এমনটা হতে পারে।
সৈকতে লাবণী পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে-পর্যটক আর স্থানীয় কুড়িয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার মাছ। সেখানে আছে পোয়া, ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ।মূল টানা জালে এসব মাছ পড়ার পর জেলেরা নিতে পারছে না। সেগুলো সৈকতে ফেলে যায়। অনেক জেলে জালও ফেলে গেছে।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ল্ডফিশের সহযোগী গবেষক আরিফুল ইসলাম এটি নিয়ে আগে গবেষণার দরকার বলে জানান।
এফবি আরিফের মাঝি আবুল কাসেম বলেন, ১০টার দিকে লাবণী ও শৈবাল পয়েন্টের মাঝামাঝি জায়গায় জাল ফেলেছি। টানার সময় আমরা বুঝতে পারতেছিলাম। আমাদের ট্রলার ছোট। আমরা নেয়ার পরও অনেক মাছ জালে থেকে যায়। সেগুলো সৈকতে ফেলে চলে যাচ্ছি। আমাদের মতো আরও অনেকে ফেলে যাচ্ছে। আজকে সবচেয়ে বেশি মাছ পড়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক শামীম হোসেন বলেন, যখন সৈকতে মাছ পড়ে আছে। আমিও নিয়েছি এক বস্তা। অনেকে মাছ কুড়িয়ে নিয়েছে। পোয়া, ইলিশ, ছুরিসহ বিভিন্ন রকমের মাছ রয়েছে এখানে। যেটা জেনেছি। অতিরিক্ত মাছ পড়ায় জাল তুলতেও পারে জেলেরা। তাই ছেড়ে দিয়েছে।
স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকরাও কুড়িয়ে নিচ্ছেন মাছ জানিয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, অনেক পর্যটকও মাছ কুড়িয়েছে। তারা অবশ্যই সৈকতেই বিক্রি করে ফেলছেন। আবার অনেকে বস্তায় করে নিয়ে যাচ্ছে।
সৈকতের লাইফগার্ড ইনচার্জ ওসমান গণি বলেন, সকাল সৈকতে মাছ ভেসে আসতে দেখা যায়। তারপর পর্যটক ও স্থানীয়রা এসব মাছ কুড়িয়ে নিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে জেলেদের জালে অতিরিক্ত মাছ ধরা পড়েছে। তাই অতিরিক্ত মাছগুলো নিতে না পারে সাগরে ফেলে দিচ্ছে জেলেরা।
বিচকর্মী মাহাবুবুর রহমান বলেন, ফেলে দেয়া মাছগুলো মূলত সৈকতে পড়ে আছে। সেগুলো সবাই নিয়ে যাচ্ছে। সৈকতে তৈরি হয়েছে এক উৎসব মুখর পরিবেশ।
জেলা প্রশাসন বলছে, এটি একটি ব্যতিক্রম ঘটনা। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নাকি অন্যকোন কারণে এই ঘটনা ঘটেছে সেটি গবেষণা করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
এর আগে গত কয়েক মাসের ব্যবধানে কয়েক দফায় সাগরে ভেসে এসেছিলো অসংখ্য জেলেফিশ। এর আগে সমুদ্রসৈকতে থেকে ভেসে এসেছিল কয়েকটি মৃত তিমি এবং কয়েক হাজার টন বর্জ্য।