কচ্ছপিয়া-গর্জনিয়ার তামাক পুড়াতে প্রকাশ্যে বনের কাঠ সংগ্রহ

fec-image

কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী রেঞ্জ অফিস আওতাধীন কচ্ছপিয়া ও গর্জনিয়ায় তামাক পুড়াতে বন থেকে কাঠ কেটে প্রকাশ্যে বন চুল্লি এলাকায় স্তূপ করা হচ্ছে শতশত মণ কাঠ। এ দু’ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে কম বেশী এ অপতৎপরতা চালাচ্ছে এক শ্রেণির লোভী প্রকৃতির ব্যবসায়ী এবং তামাক চাষি।

ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর আদলে টোব্যাকো কোম্পানী গুলোর কিছু দালাল এ অপ-কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে বন বিভাগকে ম্যানেজ করে। সোমবার এ দু ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে অনুসন্ধান চালালে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, কচ্ছপিয়া ও গর্জনিয়া এলাকাটি কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে। আর বাঁকখালী রেঞ্জ অফিস নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পার হয়ে যাতায়াত করতে
৭/৮ কিলোমিটার বিচ্ছিন্ন এলাকা বিশেষ। সে হিসেবে ডিএফও এবং রেঞ্জ কর্মকর্তা থাকেন বন বিভাগ থেকে অনেক দূরে।

শহরে বনকর্মকর্তা আর বনদস্যূ থাকে বনাঞ্চলে। আর বনবিভাগের মাঠকর্তারা বনদস্যূদের ভাই ভাই। এভাবে দূর্গম এলাকা হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এখানকার বন দস্যুরা তামাক চাষিদেরকে বনের কাঠ সরবরাহ করছে পানির দামে। যা তারা শুরু করছে সপ্তাহ তিনেক আগে থেকেই।

এর আগে সংগ্রহ করেছে তামাক চুল্লি তৈরীর খুটি আর তামাক পুড়ানোর পায়া আর অন্যান্য সরঞ্জামাদি। এ ধ্বংস যজ্ঞের সহায়তায় রয়েছে দৌছড়ি, কচ্ছপিয়া ও গর্জনিয়া ইউনিয়ন কেন্দ্রিক কিছু অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী। যারা স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির ওনতা বা সদস্য। আবার অনেকে সমিতির বাইরেও আছেন।

স্থানীয় আবুল কালাম ও জসিম উদ্দিনসহ একাধিক সচেতন লোক জানান, তারা প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষ করছেন যে, একদল চিহ্নিত যুবক তামাক চাষিদের জন্যে দিন দুপুরে কাঠ এনে বিক্রি করছে তামাক চুল্লিতে। স্থানীয় পাহাড় থেকে এসব কাঠ কেটে এ বেআইনী কাজটি করছে বন বিভাগকে ম্যানেজ করে। যা রাত-দিন করছে প্রকাশ্যে-দিন দুপুরে।

তারা আরো জানান, বর্তমানে এ দু ইউনিয়নে হাজারাধিক চুল্লিতে তামাক পোড়াচ্ছে তামাক চাষিরা। স্তূপ করে রাখা হচ্ছে মণকে মণ অবৈধ কাঠ। এসব কারণে এখন এখানকার গ্রাম গুলো হয়ে পড়ছে ধোঁয়া আর দূষনের নগরী। আর নিধন হচ্ছে বনাঞ্চল। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। সব ক্ষতি সরকার ও জনগনের। আর লাভবান হচ্ছে দূর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তা আর বনদস্যূ কাঠুরিয়া-কাঠ ব্যবসায়ীদের।

উল্লেখ্য, এ দু ইউনিয়নে বন বিভাগের ২টি বিট থাকলেও তারা গাছ ও কাঠ ব্যবসায়ীদের সাথে আড্ডায় সময় পার করেন প্রতিনিয়ত। সন্ধ্যা হলে তারা সারাদিনের হিসেব নিতে অপেক্ষায় থাকেন গর্জনিয়া বাজার ও বেলতলী বাজারে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ঘিলাতলী বন বিট কর্মকর্তা আবুল কালমের সাথে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করলেও তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায় নি। এছাড়া মৌলভী কাটা কচ্ছপিয়া বনবিট কর্মকতা শেখ মিজানুর রহমানের সাথেও একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার সংযোগও না পাওয়ায় তার বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কাঠ, চুল্লি, তামাক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন