কটেজ জোনের নিরাপত্তায় ৮ সিদ্ধান্ত, ২৯ পয়েন্টে বসছে সিসি ক্যামেরা

fec-image

পর্যটন শহর কক্সবাজারের সৈকত ও সরন আবাসিক এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২৯টি পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ ৮টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বিকালে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের কনফারেন্স হলে কটেজ মালিকদের সঙ্গে যৌথ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বেশকিছু কটেজে পর্যটক হয়রানি, প্রলোভন ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণা, জোরপূর্বক আটকে রেখে টাকা আদায়, ব্ল্যাকমেইল করাসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সভাটির আয়োজন করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. জিললুর রহমান।

যৌথ সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তসমূহ হলো:
১. কটেজ জোনের চারটি প্রবেশ পথের চিহ্নিত ২৯টি পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন
২. যে সকল কটেজে অপরাধমূলক কাজ ঘটে তাদের মালিকদের বলে এসব বন্ধ করার ব্যবস্থা
৩. সকল কটেজের স্টাফদের আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক
৪. পর্যটক ও কটেজ স্টাফ ছাড়া বাইরের লোকজনের আড্ডা বা অপ্রয়োজনে ঘোরাঘুরি বন্ধ
৫. কোন সিএনজি বা অটোরিকশা বা টমটম সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেনা। যাত্রী নিয়ে বা নামিয়ে দিয়ে চলে যেতে হবে
৬. প্রত্যেক কটেজের সামনে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে
৭. প্রত্যেক প্রবেশপথে গেট লাগানো হবে এবং রাত ১২ টার পর শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পূর্ব পাশের মেইন প্রবেশপথ খোলা থাকবে
৮. পর্যটকদের এনআইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন কার্ডসহ রেজিস্ট্রার খাতায় এন্ট্রি করাতে হবে

আগামী ২০ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নে কটেজ মালিকপক্ষ একমত হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে সভায় ৬১ টি কটেজের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

কটেজের প্রতিনিধিদের মধ্যে সি এঞ্জেল, শিকদার রিসোর্টসহ বেশ কয়েকজন তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। কটেজ জোনের ব্যবসায়ীরা বলেন, তাদের মধ্যে অল্প কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য পুরো কটেজ জোনের বদনাম হচ্ছে। অনেকেই দালাল নির্ভর ব্যবসা করে। ৫/৬ টি কটেজ পর্যটকদের হয়রানিসহ ব্ল্যাকমেইলিংয়ের সাথে জড়িত। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ট্যুরিস্ট পুলিশকে অনুরোধ জানান। তাছাড়া তারা স্থানীয় বখাটে ও কিশোর গ্যাংদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মো. জিললুর রহমান বলেন, আপনার সবাই ধর্ম বিশ্বাস করেন। তাহলে কেন এসব অবৈধ আয় করা লাগবে? এসব বাদ দেন। পর্যটনের স্বার্থে আপনাদের কটেজ জোনের পরিবেশ উন্নয়ন করেন। আমরা ট্যুরিস্ট পুলিশ আপনাদের পাশে সবসময় থাকব। অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের মত বিনিময় শেষে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, যেহেতু আপনাদের সরকারি অনুমোদন নেই। আমরা চাইলে আমরা আপনাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারি। কিন্তু সেটা ভাল কোন সমাধান নয়। আসুন সবাই মিলে সবার সহযোগিতায় একটা সুন্দর কটেজ জোন তৈরি করি। তখন আপনারা এমনিতেই পর্যটক পাবেন। আপনারা সবাই সংশোধন হলে আমরাও আপনাদের প্রচার করব।

মতবিনিময় সভা শেষে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিমের নেতৃত্বে একটি টিম কটেজ জোন পরিদর্শনে যান। তারা কটেজ জোনের ব্যবসায়ীদের নিয়ে অপরাধপ্রবন ও সাইনবোর্ড বিহীন কটেজগুলো চিহ্নিত করে মূল মালিকদের সাথে ফোনে কথা বলেন এবং দ্রুত সমস্যা সমাধান করতে বলেন।

এসময় কয়েকটি কটেজ ভিজিট করে গেস্ট লিস্ট রাখা, ভাড়ার তালিকা ঝুলিয়ে দেয়াসহ নানা দিক নির্দেশনা প্রদান করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন