parbattanews

করোনাভাইরাস নিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সচেতনতামূলক সভা

দেশে করোনা রোগী শনাক্তের পর কক্সবাজার জেলাজুড়ে মাস্ক, ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সংকট দেখা দিয়েছে। ফার্মেসি ও দোকানগুলোতে দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে।

রবি ও সোমবার (৯ মার্চ) করোনা রোগী শনাক্তের পর আরেক দফা বেড়ে গেছে পরিচ্ছন্নতা সামগ্রীর দাম। মিলছেই না হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সংকট আছে হ্যান্ড ওয়াশের উপকরনও। মাস্কের চাহিদা আকাশচুম্বি। বেশি দামেও মিলছে না।

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কক্সবাজার জেলা কমিটির সচেতনতামূলক সভা সোমবার(৯ মার্চ) বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিতকরণে সার্বিক প্রস্তুতি, গৃহীত পদক্ষেপ ও করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এতে জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন, অতিরক্তি জেলা প্রশাসক মো: মাসুদুর রহমান মোল্লা, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক উপস্থিত ছিলেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম, তাই এমন সংকট।

এদিকে কক্সবাজার শহরের ফুটপাত, চায়ের দোকান, পরিবহনসহ সবখানেই আলোচনার ইস্যু করোনা। সাধারণ মানুষের মধ্যে রোগটি নিয়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি পরিহার করতে হবে জনসমাগম।

শহরের পেট্রোল পাম্প এলাকার ভ্রাম্যমান হকার আবদুর রশিদ বলেন, কক্সবাজারে মাস্ক সংকট হয়েছে কয়েকদিন ধরে। বলতে গেলে আমার দোকানে চায়না কোম্পানীর কোন মালামাল নেই এখন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, চীনে করোনাভাইরাস হওয়ার পর ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে কিছু ব্যবসায়ী কক্সবাজার এসে দ্বিগুন দাম দিয়ে ক্রয় করে সমস্ত মাস্ক নিয়ে গেছে। এ কারনে পর্যটন শহরে এখন তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে সোমবার বিকালে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে সরেজমিনে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের আপাতত আতংক পরিলক্ষিত হয়নি। বরাবরের মতো পর্যটকের আনাগোনা রয়েছে। তবে কিছুটা আতংক দেখা দিয়েছে মাস্ক সংকট ও সচেতনতা নিয়ে।

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক হাবিব হাসান বলেন, যেহেতু কক্সবাজার পর্যটন নগরী তাই এখানে ছুটে আসে দেশি বিদেশী পর্যটক। সরকারের এখনই উচিত বিমান বন্দর, রোহিঙ্গা ক্যাম্প, বাসটার্মিনালে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করার অত্যাধুনিক স্কেনার বসিয়ে চেক করে শহরে প্রবেশ করানো।

স্থানীয় পেশাজীবী ফরিদুল আলম বলেন, কক্সবাজার হলো পর্যটন এলাকা এখানে আসে হাজার হাজার পর্যটক। আবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসে হাজারো বিদেশী কাজ করতে বিভিন্ন এনজিওতে। তাই এই মুহুর্তে প্রশাসনের উচিত হয়ত তাদের সাময়িক নিষিদ্ধ করা অথবা কঠোর নজরদারীতে রাখা।

অপরদিকে মাস্কের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে কক্সবাজার শহরে অভিযান চালিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।

সোমবার (৯ মার্চ) বিকেলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরফাত হোসাইনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।

এ সময় কক্সবাজার শহরের পান বাজার রোডের আল নিজাম মার্কেটেস্থ নুর সার্জিক্যালকে অতিরিক্ত দামে মাস্ক বিক্রির অভিযোগে ভোক্তা অধিকার আইনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও দোকানের মালিককে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য দোকানের মালিকদেরও সতর্ক করে দেওয়া হয়।

অভিযানে নেতৃত্বদানকারী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরফাত হোসাইন জানান, ব্যবসায়ীরা সংকটময় মূহুর্তকে পুঁজি করে বেশি দামে মাস্ক বিক্রি করছিলেন, এমন খবরে আমরা বাজারে অভিযানে নেমে এর সত্যতা পাই। জানতে পারি ১০-২০ টাকার একটি মাস্ক ২৫০ টাকা দামে পর্যন্ত বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

তিনি বলেন, আমরা সিভিল পোশাকে লোক পাঠানোর পর এর সত্যতা পেয়ে সোমবার বিকেলে অভিযান চালায়। মাস্কের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরফাত হোসাইন। শুধু কক্সবাজার জেলা শহরে নয়, পুরো কক্সবাজারেই এ অভিযান নিয়মিত চালানো হবে।

Exit mobile version