parbattanews

করোনার প্রভাবে ক্ষতির মুখে বাঘাইছড়িতে তরুণ উদ্যোক্তা

রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার তরুণ উদ্যোক্তা আবু নাছের যে বয়সে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় খেলাধুলায় মেতে থাকার কথা ঠিক সে সময়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট একটি ফার্ম দিয়ে শুরু করে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন। আস্তে আস্তে শ্রম ও মেধা খাটিয়ে তিনি সময়ের সাথে সাথে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বড় করতে থাকেন গড়ে তোলেন মিশ্র ফলজ বাগান ।

ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে পোল্ট্রি ফার্মে পাশাপাশি ডেইরি ফার্ম গড়ে তোলেন। সেই ডেইরি ফার্মের দুধ বিক্রির জন্য বাজারে একটি ভেরাইটিস শপ খোলেন। সেখানে নিজের ফার্মের উৎপাদিত দুধ বিক্রয়‘সহ কনফেকশনারি পন্য বিক্রয় করতেন।

বাঘাইছড়িতে তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি একজন মডেল হিসেবে পরিচিতি পান। সবার যখন লেখা পড়া শেষ করে ভালো কোন সরকারি চাকরি প্রত্যাশা করেন, সেখানে আবু নাছের ব্যতিক্রম। সে উদ্যােক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। নিজের প্রতিষ্ঠানে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন, সেই চিন্তা সব সময় পুষে রাখতেন।

কিন্তু সম্প্রতি সারা বিশ্ব যখন মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে সারা দেশ যখন লকডাউন করা হয়েছে, ঠিক তখনি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার এই তরুণ উদ্যােক্তার জীবনে নেমে আসে কালো আঁধার। তার উদ্যোক্তার স্বপ্ন হঠাৎ হয়ে উঠে দুর্বিসহ।

সে ছোট বেলা থেকেই অনেক শ্রম ও মেধা খাঠিয়ে তিলে তিলে গড়ে তোলেন তার এই স্বপ্নের পোল্ট্রি ফার্ম, ডেইরি ফার্ম, মিশ্র ফলজ বাগান, ও দুধ বিক্রয় সেন্টার ভেরাইটিস শপ।

বিশ্বের এই মহামারিতে তার ওপর হঠাৎ বিপর্যয় আসে। গত ৫ই এপ্রিল অজ্ঞাত কারনে তার স্বপ্নের বাগান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেখানে প্রায় তিন শতাদিক আম, লেচু, মাল্টা, থাই পেয়ারা, লেবুসহ বিভিন্ন প্রকারের গাছের মুকুলসহ পুড়ে যায়।

এতে করে বড় ধরনের আর্থিক ও মানুষিক ক্ষতির মুখে পড়ে যায়। এর রেশ কাটতে না কাটতে পোল্ট্রি ফার্মের এক হাজার রেডি মুরগী লকডাউনের কারনে বাজারজাত করতে না পারা এবং লকডাউনে খাদ্য সংকট থাকায়, মুরগির ঠিক মত খাবার দিতে না পারায়, অনেক মুরগী মারা যায়। এখানেও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ে।

এদিকে লকডাউন এর কারনে ডেইরি ফার্মের দুধ বিক্রয় করতে না পারায়, সেখানেও সে দৈনিক দুধ বিক্রির যে আয় সেটা না থাকায় এবং গৈ খাদ্য পর্যাপ্ত মজুদ না থাকায় ও গৈ খাদ্যের দাম বেড়া যাওয়ায় অনেক বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ে।

লক ডাউনে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালীন দোকান বন্ধের ঘোষণা থাকায় তার দুধ বিক্রয় কেন্দ্র ও চৌমুহনী সদরে তার ভেরাইটিস শপ বন্ধ থাকলেও একেবারে ভেঙ্গে পড়েন।

এ ব্যাপারে এই তরুণ উদ্যোক্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি খুব সুন্দরভাবে এগুচ্ছিলাম কিন্তু আমার তিল তিল করে গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠানগুলো এভাবে ভেঙে পড়বে কখনো কল্পনা করি নাই। কিভাবে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করবো বুঝতে পারছি না।

তবে আমার এই দুঃসংবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমার মিশ্র ফলজ বাগানে যখন আগুন লাগে তিনি ঐসময় বাগান পরিদর্শন করেন এবং আমাকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

Exit mobile version