করোনায় কমেছে পূজার আমেজ : রাঙ্গামাটির ৪০টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব

fec-image

করোনা পরিস্থিতিতে এবার রাঙ্গামাটি জেলার ৪০টি মন্ডপে সীমিত আকারে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপন হবে। পূজার সকল প্রস্তুতি এখন শেষের দিকে। পূজাকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন মন্ডপে কর্মরত মৃৎশিল্পীরা। যেন শিল্পীদের রঙ তুলির আঁচড়ে প্রতিমাগুলো জীবন্ত হয়ে উঠছে। এরপর উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা সম্পন্ন করতে প্রতিমাসহ মন্ডপে শেষ হবে আলোকসজ্জার কাজ।

রাঙ্গামাটি জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এবার রাঙ্গামাটি সদরে ১৪টি, কাপ্তাই উপজেলায় ৭টি, কাউখালি উপজেলায় ৪টি, বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৪টি, রাজস্থলী উপজেলায় ৩টি, লংগদু উপজেলায় ২টি, নানিয়ারচর উপজেলায় ২টি, বিলাইছড়ি উপজেলায় ১টি, জুরাছড়ি উপজেলায় ১টি, বরকল উপজেলায় ২টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

সূত্রে আরো জানা গেছে, এবার মহালয়া হয়েছিল ১৭ সেপ্টেম্বর। তবে পঞ্জিকার হিসাবে এবার আশ্বিন মাস “মল মাস” অর্থাৎ অশুভ মাস। সেকারণে এবার আশ্বিনে না হয়ে দেবীর পূজা হবে কার্তিক মাসে। সেই হিসাবে এবার দেবী দুর্গা মর্ত্যে আসবেন মহালয়ার ৩৫ দিন পরে।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, ২২ অক্টোবর মহাষষ্ঠী তিথিতে দেবীর বোধন হবে। পরদিন সপ্তমী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গোৎসবের মূল আচার অনুষ্ঠান। ২৬ অক্টোবর মহাদশমীতে বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

রাঙ্গামাটি জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পঞ্চালন ভট্টাচার্য্য বলেছেন, ইতিমধ্যে পূজার সকল প্রস্তুতি শেষের দিকে। তবে এবছর মহামারি করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে পূজা উদযাপিত হবে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে রাঙ্গামাটিতে সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় পূজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হবে এবং কোন শোভাযাত্রা বা র‌্যালি হবে না, স্ব-স্ব মন্দিরের প্রতিমা স্ব-স্ব স্থানে বিসর্জন দেওয়া হবে।

রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর কবির বলেছেন, প্রতিটি মন্ডপে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশের মোবাইল টিম টহলে থাকবে এবং পাশাপাশি বিট পুলিশিং টিমও কাজ করবে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, এবার পূজা উদযাপন করার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে পূজা উদযাপন পরিষদ, মন্দির ও পূজা কমিটির কাছে ২৬ দফা নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এতে উল্লেখ রয়েছে, প্রতিমা তৈরি থেকে পূজা সমাপ্তি পর্যন্ত প্রতিটি মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভক্ত-পূজারি ও দর্শনার্থীদের জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখা, সকলে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরা, দর্শনার্থীদের মধ্যে ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, পূজামণ্ডপে নারী-পুরুষের যাতায়াতের আলাদা ব্যবস্থা করা, বেশিসংখ্যক নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক রাখার কথা বলা হয়েছে, “সন্দেহভাজন” দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশির ব্যবস্থা রাখতে হবে। আতসবাজি ও পটকা ফাটানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

প্রতিটি পূজামণ্ডপে রাখতে হবে সিসি ক্যামেরা। ভক্তিমূলক সংগীত ছাড়া অন্য কোনো গান যেন বাজানো না হয়, মাইক বা পিএ সেট যেন ব্যবহার করা না হয়, পূজামণ্ডপে “প্রয়োজনের অতিরিক্ত দীর্ঘ সময়” কোনো দর্শনার্থী যেন না থাকে এবং সন্ধ্যার বিরতির পর দর্শনার্থীদের প্রবেশে যেন নিরুৎসাহিত করা হয়- সেসব বিষয়ও আছে নির্দেশনায়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: করোনা, পূজা, রাঙামাটি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন