কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ: যেখানে হিন্দু-শিখ ছাত্রীরাও রোজা রাখে

ইসলামিয়া নার্সিং কলেজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

 কলকাতার পার্ক সার্কাস ইসলামিয়া হসপিটাল স্কুল অব নার্সিং কলেজ। এখানে রয়েছে মুসলিম, হিন্দু, শিখসহ নানা ধর্মের শিক্ষার্থী ও স্টাফ। তবে ভিন্ন ধর্মের হলেও সবার জন্যই নিয়ম এক। আর সে নিয়মেই সবাইকে রাখতে হয় রোজা। ভোর রাত হতেই সবাই হই হই করে ঘুম থেকে উঠে সেহেরি খাচ্ছে, আবার মাগরিবে সাড়ছে ইফতার।

গত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরেই ইসলামিয়া হসপিটাল স্কুল অব নার্সিং কলেজের হোস্টেলে চলে আসছে এ রীতি। এখানকার সব ধর্মের শিক্ষার্থী ও স্টাফরা রোজা রাখে।

ইফতারের আয়োজনেও নেই কমতি। বড় বড় প্লেটে সাজানো ছোলা, কলা, খেজুর, আনারস, সুজি, মুড়ি। খাবারের আগে চলে মোনাজাত। তখন হাত তুলে আল্লাহর কাছে রোজা কবুলের আবেদন জানায় তাহেরা খাতুন, শুভশ্রী পান্ডা, বিবি কাউর, জয়শ্রী সরকার, তনুজা মন্ডল, জুবেদা খাতুন, চৈতালি মন্ডল, যুথিকা পারভিনরা।

হাওড়ার বেবি কাউর বলেন, ‘এই নার্সিং কলেজের অভিজ্ঞতা কোনোদিন ভুলবো না। কলেজ থেকে পাস করার পরও এই একমাস রোজা রাখার অভ্যাস চালিয়ে যেতে পারলে খুশি হবো।’ ডায়মন্ড হারবারের তনুজা মন্ডল বলেন, ‘প্রথম প্রথম একটু অসুবিধা হতো। পরে তা মানিয়ে নিয়েছি।’ পাঁশকুড়ার চৈতালি মন্ডল বলেন, ‘রোজা ভাঙার দিন (ঈদের দিন) প্রার্থনা করবো। জেনেছি সেদিন প্রার্থনা করলে মনোবাঞ্ছনা পূরণ হয়।’

একই কথা জানিয়ে নন্দীগ্রামের জয়শ্রী সরকার বলেন, ‘রোজা পালন করলে শরীর সুস্থ থাকে। হাসপাতালের ওয়ার্ডে কাজ করার সময় আরো বেশি সজাগ থাকা যায়। আসলে ব্যাপারটা মনে রাখার মতো।’

কলেজ হোস্টেলের ভারপ্রাপ্ত সুপার তিনিও হিন্দু। নাম রেখা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘হোস্টেলের এ নিয়মে আমি গর্বিত। ১৭ বছর ধরে হোস্টেলের দায়িত্বে আছি। কেউ আলাদা করে শেখায় না। তবু প্রথম বর্ষ থেকে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীদের মধ্যে রোজা পালনের রেওয়াজ চলে আসছে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন