parbattanews

কাউখালীতে টেন্ডার ভাগাভাগি করে নিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সমানে ও অফিসের ভেতরে রীতিমত পাহাড়া বসিয়ে সাধারণ ঠিকাদারদের জিম্মি করে কাউখালী উপজেলা এলজিইডির ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার কাজ ভাগাভাগি করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।

দরপত্র বিক্রির শেষ দিনে পর্যন্ত স্থানীয় এমনকি রাঙ্গামাটি সদরের কোনো ঠিকাদারকে সিডিউল কিনতে দেয়নি ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা কর্মীরা।
এলজিইডি কাউখালী সূত্রে জানা যায়, কাউখালীর পোয়াপাড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও বেতবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ফার্ণিচার (হাই ও লো ব্যাঞ্চ) সরবরাহের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে গত ২৪ মে পত্রিকায় টেন্ডার আহ্বান করা হয়। জুনের ৩ তারিখ হতে সিডিউল বিক্রির দিন ধার্য্য করা হয়। কাউখালী উপজেলা এলজিইডি থেকে রাঙ্গামাটি সদর এলজিইডিতেও বিক্রির জন্য সিডিউল পাঠানো হয়।

কিন্তু ৩ মে (সোমবার) থেকে ৯ মে (রবিবার) পর্যন্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হায়দারের নেতৃত্বে উপজেলা এলজিইডির ভেতরে বাইরে অবস্থান নেন ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীরা। ফলে কোন ঠিকাদার সিডিউল কেনার জন্য অফিসে প্রবেশ করতে পারেননি।

পরে স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৬ জুন উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম পুলিশ ফোর্সের জন্য কাউখালী থানায় লিখিতভাবে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষনাৎ পুলিশ পাহারা বসানে হলেও ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের তোপের মূখে কোন ঠিকাদার এলজিইডি অফিস থেকে সিডিউল ক্রয় করতে পারেনি।
প্রথম দু’দিনে উপজেলা চারটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স অংপাথোয়াই মারমা, ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজ, মজিদ ট্রেডিং কর্পোরেশন, মেসার্স সুখময় চাকমার প্রতিষ্ঠান সিডিউল ক্রয় করে। কিন্তু গতকাল সিডিউল জমা দেয়ার শেষ তারিখে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের কেউ সিডিউল জমা দিতে পারেনি।

বিকেলে শুধুমাত্র ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নিয়ন্ত্রিত চারটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সিডিউল জমা পড়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে মেসার্স ব্যাজিও এন্টারপ্রাইজ, অনুপন এন্টারপ্রাইজ, আলিম এন্টারপ্রাইজ, অভি এন্টারপ্রাইজ।

অনিয়ম ও টেন্ডার বক্স দখলের বিষয়ে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনোনয়ারা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জনান, ঠিকাদারদের সিডিউল ক্রয় করতে না পারার বিষয়টি আমি জেনেছি এবং তৎক্ষনাৎ পুলিশ পাহারা বসিয়েছি। কিন্তু দাখিল করার বিষয়ে আমাকে কোন ঠিকাদার অভিযোগ করেনি। তিনি বলেন কেউ অভিযোগ না করলে সেক্ষেত্রে আমার করার কিছু থাকেনা।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, ছাত্রলীগ নেতারা অফিসের ভিতরে ও বাইরে পাহারা বসিয়ে সাধারণ ঠিকাদারদের সিডিউল কেনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করায় আমরা গত বৃহস্পতিবার থকে পুলিশ পাহারা বসিয়েছি। ছাত্রলীগ কর্তৃক টেন্ডার বাজির কথা অস্বীকার করে উপজেলা প্রকৌশলী জানান, যথানিয়মে টেন্ডারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এলজিইডি ও উপজেলা প্রশাসনের কেউ ছাত্রলীগকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কোন সহযোগিতা করেনি।

এব্যাপারী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হায়দারের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

Exit mobile version