কাউখালীতে পাহাড় কাটার মহৌৎসব: ভ্রাম্যমান আদালতে তিন জনের কারাদণ্ড

kawkhali-news-pic-21-10-16-2

কাউখালী প্রতিনিধি:

ইটভাটার মাটির যোগান দিতে রাঙ্গামাটির পুরো কাউখালী উপজেলা জুড়ে চলছে পাহাড় কাটার মহৌৎসব। উপজেলার ব্রিকফিল্ড পাড়া হিসেবে খ্যাত সুগারমিল আদর্শগ্রাম, গাড়ীছড়া, তারাবনিয়াসহ আশপাশের অন্তত ১০ ইটভাটায় দিন রাত প্রকাশ্যে এসব পাহাড় কাটা চলছে।  গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার বেলা ১২টায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে তিন ব্যাক্তিকে পাহাড় কাটাসহ ভিন্ন ভিন্ন অপরাধে দণ্ডিত করে। রাঙামাটির এনডিসি মো: ফারুক সুফিয়ান এ অভিযান পরিচালনা করেন।

দনণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আবুল বশর (৩৫), নাসের হুসেন (৪৬) এবং হোসেন আহাম্মদ (৫৯)। এদের মধ্যে আবুল বশর ও নাসের হুসেন ড্রাইভারকে পাহাড় কেটে ইট তৈরীর কাজে অবৈধভাবে মাটি মজুদের দায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ইউবিএম ইট ভাটার ম্যানেজার হোসেন আহাম্মদকে সরকারী সম্পদ ধ্বংস করে পাহাড় কাটার দায়ে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়াও নিয়মবহির্ভূতভাবে ধারন ক্ষমতার বাইরে ইট বহন করে রাস্তার ক্ষতিসাধন করায় ৬টি ট্রাকের প্রায় সাত হাজার ইট নিলাম দেয়া হয়। জব্দ করা হয়েছে ইটভাটা ইউবিএম ও কেবিএম’র ৪টি মাটি কাটার স্কেভেটর।

ইটভাটার শ্রমিক ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, জেবিএম ইটভাটার মালিক পাইথুই অং মারমা প্রকাশ পার্থিক বাবু, ইউবিএম এর মালিক রিদোয়ান, কেবিএম এর মালিক ছৈয়দ কোম্পানি ও দিদার কোম্পানি ব্যাপক হারে পাহাড় কেটে সাবাড় করে চলেছেন। যদিও ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে খবরে ইটভাটাগুলোর মালিক ও ব্যবস্থাপকেরা আগেই সটকে পড়ে।

উপজেলার সুগারমিল আদর্শগ্রাম, গাড়ীছরা, ডাক বাংলো, তারাবনিয়া, মাঝের পাড়াসহ আশপাশের অন্তত ১০ ইটভাটায় গত একমাস যাবৎ পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ইটভাটায় দু’ থেকে চারটি পর্যন্ত স্কেভেটর মজুদ রাখা হয়েছে। এসব মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে নিমিষেই কেটে ফেলা হচ্ছে কালের স্বাক্ষী পরিবেশের অন্যতম ধারক এসব পাহাড়। রাত দিন প্রকাশ্যে এসব পাহাড় কেটে প্রতিটি ইটভাটার জন্য মজুদ করা হচ্ছে মাটি।

রাঙ্গামাটির এনডিসি মো: ফারুক সুফিয়ান সাংবাদিকদের জানান, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। সরকারী সম্পদ নষ্টকারীরা যত ক্ষমতাধরই হোক না কেন তাদের ছাড় দেয়া হবেনা।

কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া আখতার জানান, অবৈধ ইটভাটা ও পাহাড় নিধনকারীদের বিরুদ্ধে সামনের দিনগুলোতে আরো কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন