parbattanews

কাকরাইলের জোড়া খুনের পরিকল্পনা হয় রাঙ্গামাটিতে

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

ছয়মাস আগে তৃতীয় স্ত্রী মডেল শারমিন মুক্তাকে নিয়ে রাঙ্গামাটিতে ঘুরতে যান আবদুল করিম। সেখানেই প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহারকে খুন করার পরিকল্পনা করেন তিনি। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা গেছে।

আবদুল করিমের বেপরোয়া জীবন-যাপনে প্রধান বাধা ছিল প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার। তার একাধিক বিয়ে নিয়ে শামসুন্নাহারের সঙ্গে পারিবারিক কলহ লেগেই ছিল। যেহেতু কাকরাইলের বাড়িটিসহ শামসুন্নাহারের নামে অনেক অর্থসম্পদ ছিল। সেহেতু মুক্তাও চিন্তা করে তাকে সরিয়ে দিতে পারলে সকল সম্পত্তি ভোগ করতে পারবে সে।

এদিকে মুক্তার ভাই জনি ছিল বেকার। তার সঙ্গে স্ত্রীর ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় তার সন্তানকে দেখাশোনা করতো বোন মুক্তা। তার সামগ্রিক খরচও বহন করতে হতো মুক্তাকে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তা শামসুন্নাহারকে খুন করার ব্যবস্থা করতে তার ভাই জনিকে বলে। তখন জনি বোনের প্রলোভনে গত ১ নভেম্বর কাকরাইলের বাসায় ঢুকে শামসুন্নাহারকে ছুরিকাঘাত করে খুন করে। এ সময় তার ছোট ছেলে শাওন এ ঘটনা দেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু জনি পেছন থেকে দৌঁড়ে বাসার সিঁড়িতে শাওনকেও ছুরিকাঘাত করে খুন করে।

এরপর সন্দেহজনকভাবে নিহতের স্বামী আব্দুল করিম ও তার তৃতীয় স্ত্রী শারমিন মুক্তাকে আটক করে পুলিশ। পরদিন শামসুন্নাহারের ভাই আশরাফ আলী বাদী হয়ে করিম, মুক্তা ও জনির নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।

রিমান্ডে করিম ও মুক্তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানাযায়, করিম দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর মুক্তাকে বিয়ে করেন। এসব নিয়ে প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহারের সঙ্গে করিমের প্রায়ই ঝগড়া হতো। রাঙ্গামাটি যাওয়ার পর মুক্তাকে সঙ্গে নিয়ে শামসুন্নাহারকে খুন করার পরিকল্পন করে। মুক্তাও তার ভাইকে বলে, এ কাজটা করে দিতে হবে।

আরও জানাযায়, ঘটনার দিন জনি একটি ছুরি নিয়ে কাকরাইলের বাসায় প্রবেশ করে গলাকেটে শামসুন্নাহারকে খুন করে। বিষয়টি দেখে ফেলে তার ছোট ছেলে শাওন। শাওন দৌঁড়ে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় জনি পেছন থেকে ধরে সিঁড়িতে শাওনকেও ছুরিকাঘাত করে খুন করে।

হত্যাকাণ্ডে করিম এ ঘটনায় তৃতীয় স্ত্রী মুক্তা ও তার ভাই জনিকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চিন্তা করেছিল। তাতে সে সব ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়ার আশা করেছিল বলেও পুলিশের কাছে তথ্য দিয়েছে। করিম ও মুক্তা বর্তমানে রিমান্ডে আছে এবং জনিকে শনিবার ভোরে গোপালগঞ্জর মোকসেদপুর থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

শনিবার দুপুরে সার্কিট হাউজ মসজিদে নিহত দুইজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

Exit mobile version