parbattanews

কানাডার দাবানলে পালাচ্ছে মানুষ, আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে

ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ইয়েলোনাইফ শহর। শত শত সক্রিয় দাবানল এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ফলে প্রদেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দাবানলের কারণে এরই মধ্যে ৩৫ হাজার মানুষকে বিভিন্ন এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগুন লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ায় প্রাণ বাঁচাতে বিমানে করে সরে যাচ্ছেন অনেকে। কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে, সামনে আরও কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা

কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া। প্রদেশটির প্রধান ড্যানিয়েল ইবি স্বীকার করেছেন, এর আগে কখনো এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েনি ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বাসিন্দারা। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে প্রদেশের বিভিন্ন শহরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে ৩৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে এনেছি। শিগগিরই আরও ৩০ হাজার মানুষকে সরানো হবে। কিন্তু আগুন যে গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে সব উপদ্রুত এলাকায় উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারবেন না। এ কারণে প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার জনগণের প্রতি অনুরোধ ‘বিপদের আঁচ পাওয়া মাত্র বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটে যাবেন। পরিস্থিতি খুবই ভয়ানক।’

কানাডার দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশজুড়ে এক হাজার ৬২টি দাবানল সক্রিয় আছে। সেসবের এক-তৃতীয়াংশই অবস্থান করছে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায়। দাবানল সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলোতে। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রাদেশিক সরকারে জরুরি অবস্থা বিষয়কমন্ত্রী বাওইনিন মা বলেন, ‘আমরা এখানে বসে যা ভাবছি, উপদ্রুত এলাকাগুলোর পরিস্থিতি তার চেয়ে অনেক বেশি খারাপ। অকল্পনীয় দ্রুতগতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে এবং যেসব শহর দাবানলের কবলে পড়েছে, প্রবল ধোঁয়ার কারণে আগুন কতদূর এগিয়েছে, তা বোঝার উপায় নেই। তবে লোকজনকে সরিয়ে নিতে আমরা এরই মধ্যে বিমান পাঠানো শুরু করেছি। আশা করছি, হতাহতের সংখ্যা শূন্যের পর্যায়ে থাকবে।’

গ্রীষ্মকালের গরম বাতাস এবং পার্বত্য এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা কুয়াশাপূর্ণ বাতাসের মিথস্ক্রিয়ায় সৃষ্ট বিদ্যুৎ ঝলক এবং গ্রীষ্মের কারণে শুষ্ক বনাঞ্চল এই দাবানলের জন্য মূলত দায়ী। এর তেজ আরও বাড়িয়ে তুলছে জোরালো বাতাস।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার কামলুপস শহরের ফায়ার সার্ভিস উপ-ব্যবস্থাপক জেরাড স্ক্রোয়েডার বলেন, ‘গ্রীষ্ম এখনো শেষ হয়নি। দ্রুত বৃষ্টিপাত না ঘটলে সামনের দিনগুলোতে বিপর্যয়ের মাত্রা আরও বাড়বে।’ ইয়েলোনাইফ শহরের দাবানল বিষয়ক তথ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সবাই এখানে চরম বিপদের মধ্যে আছি। যারা এর মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন, তাদের বলছি দ্রুত ফিরে আসার কোনো প্রয়োজন নেই। এখন ফিরে আসা নিরাপদ নয়।’

গত শুক্রবার জরুরি অবস্থা জারির পর থেকে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বিভিন্ন শহর থেকে মানুষজন দলে দলে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছে। অনেকে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ছেড়ে অন্যান্য প্রদেশেও পাড়ি জমিয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এরই মধ্যে কানাডার ১০টি প্রদেশ ও তিনটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের সরকার প্রধানদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক এবং কেন্দ্র থেকে যাবতীয় সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন

Exit mobile version