parbattanews

কাপ্তাই পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় ফলের উৎপাদন

কাপ্তাই প্রতিনিধি:

কাপ্তাই  উপজেলাস্থ রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে দেশ থেকে বিলুপ্ত প্রায় ৫২ প্রজাতির ফলের গাছ উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

দেশীয় অনেক সুস্বাদু ফল ইতোমধ্যে সারাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেলেও কাপ্তাই পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে বিলুপ্ত প্রায় এসব ফলের একটি স্বতন্ত্র বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। ফলের উৎপাদনের পাশাপাশি বিলুপ্ত ফল গাছের নতুন ও উন্নতজাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে এসব গাছের চারা ও কলম সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলতাফ হোসেন বলেন, একসময় বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে যেসব গ্রামীণ ফলজ ছিল এবং যেসব ফল এখন বিলুপ্ত প্রায়। যা আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে। দেশীয় ফল সংরক্ষণ এবং এসব ফলের নতুন নতুন জাত দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

বিলুপ্ত দেশীয় ফলের জাত সংরক্ষণে গবেষণা কেন্দ্রে প্রায় ২ একর জায়গা জুড়ে ৫২ প্রজাতীর দেশীয় বিলুপ্ত প্রায় ফলের একটি বিশেষায়িত বাগান গড়ে তোলা এবং কার্যক্রম ব্যবস্থা নিয়েছে। বিলুপ্ত প্রায় ফলসমূহের মধ্যে রয়েছে অরবড়ই, সাদা করমচা, কদবেল, ফলসা ফল, পিচফল, বিলাম্বি, রামবুটান, এবোকেডো, গোলাপজাম, জাম, চালতা, আমলকী, কেওয়া, জিলাপী ফল ইত্যাদি।

সরেজমিনে পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বিশেষায়িত বাগানে গেলে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম ফলের বাগান গুলো দেখান এবং এর বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় ফল সম্পর্কে অবহিত করেন। এর মধ্যে অনেক বিলুপ্ত ফল পাহাড়ি কেন্দ্রে ধরে আছে।

প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, এর মধ্যে আমরা নতুন ভাবে বীজ বিহীন বারি পেয়ারা-৪ উদ্ভাবন করেছি। যা দেশ তথা পার্বত্য অঞ্চলে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। দেশীয় বিলুপ্ত ফলগুলো আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যেরও অংশ যা ক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় এসব ফলের উৎপাদন থাকলেও তা অতি নগন্য এবং এগুলোও ক্রমে বিলুপ্ত হচ্ছে। এর ফলে বর্তমান প্রজন্মের শিশুরা দেশীয় অনেক ফলের চেহারা দেখা দূরে থাক নামও জানে না। এই অবস্থায় বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় ফলের উৎপাদন ধরে রাখতে পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে বিলুপ্ত ফলের বাগান গড়ে তোলা হয়েছে এবং এসব ফলের উন্নত জাত উদ্ভাবন ও দেশব্যাপী এসব গাছের চারা, বীজ, কলম ইত্যাদি ছড়িয়ে দিতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এ উদ্যোগ সফল হলে আমাদের গ্রামে গ্রামে কিংবা শহরে বিত্তশালীদের বাড়ির বিলাসী আঙ্গিনায় দেশীয় ফলের গাছ আবার শোভা বর্ধন করবে। আজকের আধুনিক শহরে শিশুরাও এসব গ্রামীণ বিলুপ্ত প্রায় ফল ও এর স্বাদ সম্পর্কে জানতে পারবে।

রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বাগানে এখন বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় ফলের উৎপাদন দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসছে।

Exit mobile version