কাপ্তাই হ্রদকে রক্ষা করা গেলে মাছ চাষের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা সম্ভব

Picture-02-07-13-02

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:
কাপ্তাই হ্রদকে রক্ষা করা গেলে মাছ চাষের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা সম্ভব বলে মত প্রকাশ করেছেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা। তিনি বলেন, এ জন্য পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত সকল মানুষকে সম্মিলিত ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। আজ ২ জুলাই রাঙ্গামাটিতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান।

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা মৎস্য অধিদপ্তর রাঙ্গামাটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তফা কামাল। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তরুন কান্তি ঘোষ, রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার আমেনা বেগম, বিএফডিসি রাঙ্গামাটির ব্যবস্থাপক কমান্ডার হোসাইন জামান খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, রাঙ্গামাটি জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান মিয়া। মৎস্যজীবিদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন প্রদীপ দাশ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরো বলেন, কাপ্তাই হ্রদের পার্বত্য অঞ্চলের অনেক লোকের জীবিকা নির্ভর করছে। এই হ্রদে মাছ শিকার করে হাজার হাজার জেলে পরিবার ও ব্যবসায়ী তাদের আয়ের উৎস সৃষ্টি করছে। কিন্তু এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী মাছ শিকার বন্ধ থাকাকালীন সময়ে হ্রদে জাল ফেলে মা মাছ মেরে ফেলে জেলেদের ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি ঐ সব অসাধু ব্যবসায়ীদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় সোপর্দ করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মৎস্য ও প্রাণী সম্পদকে গুরুত্ব দিয়ে পার্বত্য রাঙ্গামাটিতে গত অর্থ বছরে ৬৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই অর্থ বছরে প্রকল্প গুলো সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে মাছের ঘাটতি অনেকাংশে কমে আসবে। তিনি বলেন, সরকার মাছ শিকার বন্ধ কালীন সময়ে জেলে পরিবার গুলোকে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। যা অতীতের কোন সরকার করেনি।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, বর্তমান সরকার কাপ্তাই হ্রদের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য কাপ্তাই হ্রদের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত সকল জেলে পরিবার গুলোকে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তার পরও একটি মহল কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার করে আগামী দিনে বড় অংকের মুনাফা থেকে জেলেদেরকে বঞ্চিত করছে। তিনি অসাধু জেলেদেরকে আইনের আওতায় আনতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি রাঙ্গামাটি বিএফডিবির সুত্র দিয়ে বলেন, বিএফডিসির মতে কাপ্তাই হ্রদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে ৯ হাজার ৭৭৩ জন জেলে। কিন্তু বর্তমান সরকার ১২ হাজার ৬৯৬ জন জেলে পরিবারকে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য শষ্য সহায়তা দিচ্ছে। বর্তমানে এশিয়ার বৃহত্তম কাপ্তাই হ্রদকে রক্ষা ও কসাই মৎস্য ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করা না গেলে এই ১২ হাজার ৭৯৬ পরিবারকে আগামীতে বাঁচানো যাবে না। তিনি অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

এর আগে মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে মাছে মাছে ভরবো দেশ গড়বো সোনার বাংলাদেশ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালীটি রাঙ্গামাটির প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙ্গামাটি পৌরসভা কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। র‌্যালীতে সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তা এবং মৎস্য জীবি ও ব্যবসায়ীরা অংশ গ্রহণ করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন