parbattanews

কামার শিশুর স্কুলে ভর্তির দায়িত্ব নিল কাপ্তাই পুলিশ

কামার ছেলেকে দোকান থেকে নিয়ে স্কুলে ভর্তি করাচ্ছে পুলিশ অফিসার আতাউল হক চৌধুরী

টুং টাং লোহার হাতুড়ির পিটানো বাবা আর পারছিনা, আমার হাতে ব্যথা করে। একটু কস্ট করো সব ঠিক হয়ে যাবে। বাবা -ছেলের মধ্যে কামারের দোকানে কাজ নিয়ে কথাপোকথন হচ্ছে। যে ছেলের বয়স মাত্র দশ, স্কুলে যাওয়া ও খেলাধুলার কথা আর সেই ছেলেকে নিয়ে বাবার নিজ দোকান(কামার), হাতুড়ি দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এবং বড় বড় লোহা পিঠানো হচ্ছে। কাপ্তাই নতুন বাজার এলাকায় মোঃ আরিফ(কামার) দীর্ঘ দিন যাবৎ কাজ করছে। সংসারের স্ত্রীসহ তিন ছেলে মেয়ে। দোকানের আয় দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। অন্য কোন কর্মচারি দিয়েও কাজ করানো সম্ভব নয়।

তাই নিজ ছেলেকে স্কুলে না পাঠিয়ে অভাবের তাড়নায় দোকানে লোহা, রড়, দা, ছুরিসহ বিভিন্ন কিছু তৈরির নিজ দোকানে (কামার) কাজ করাচ্ছে। হঠাৎ ঐ দোকনে কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউল হক চৌধুরীর লোহার কিছু কাজ করতে গিয়ে দেখা হল ছোট ছেলে শিশু শ্রমের কাজ করছে।

দোকানের মালিক মোঃ আরিফকে বলল এ শিশু মোঃ রাকিব(১০) কি হয় তোমার। জবাবে উত্তর আমার ছেলে। তাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছ কেন? কি করব স্যার সংসারের অভাব লেখা-পড়া করাতে খরচ বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব নয় তাই দোকানে কাজ করাচ্ছি।

কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বলল, আমি যদি এর লেখা পড়ার সব খরচ বহন করি স্কুলে ভর্তি করে দেই তুমি লেখা-পড়া করাবে? জবাবে বলল তাহলে তো স্যার ভাল হয়। যেই কথা সেই কাজ।

কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউল হক চৌধুরী শিশু রাকিব ও তার বাবাকে নিয়ে কাপ্তাই বি,এফ,আই,ডি,সি মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউসুফ মিয়ার সাথে কথা বলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভতি করিয়ে দেয়। প্রধান শিক্ষক ইউসুফ বলেন, ছেলের লেখাপড়ার আগ্রহ আছে ইচ্ছে বা একটু দেখভাল করলে সামনে আগাতে পারবে। এদিকে কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউল হক চৌধুরী বলেন, আমি দেখলাম সুন্দর একটি ছেলে লেখা পড়ে না করে অকালে ঝড়ে পড়বে তাই দায়িত্ব মনে করে সকল খরচ দিয়ে নিজ ছেলে মেয়ের মত মনে করে নিজে স্কুলে ভর্তি করে দিয়ে আসি। এবং সব সময় ঐ ছেলের খোঁজ খবর নিচ্ছি এটা আমার দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলে মনে করি।

Exit mobile version