parbattanews

কারাগারে আসামীর মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে কোর্টে মামলা

খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারে মিলন বিকাশ ত্রিপুরা নামে পর্ণোগ্রাফি মামলার এক আসামীর মৃত্যুর ঘটনায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি কারাগারের জেলার মো. দিদারুল আলম ও ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজ্জাদ হোসেনকে বিবাদী করে মৃত মিলন বিকাশ ত্রিপুরার বাবা মনসারাই ত্রিপুরা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার কোর্টে মামলা রুজু করেন।

অতিরিক্ত চিফ জ্যুডিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বৃহস্পতিবার দুপুরে সি আর ১৫৪/২১ মামলাটি দায়ের করা হয়। বাদীপক্ষকে আইনগত সহায়তা করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী এডভোকেট সৃজনী ত্রিপুরা ও বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থার পক্ষে আইনজীবী এডভোকেট মহিউদ্দিন কবির বাবু। তাদের সহায়তা করেন আইনজীবী গৌরি প্রভা। বাদী পক্ষ এ মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ যথাযথ ক্ষতিপুরণ ও ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ২২ জুন আদেশের দিন ধার্য রেখেছে বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সৃজনী ত্রিপুরা। এদিকে, মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. নুপুর কান্তি দাশ।

গত ২৮ মে পর্ণোগ্রাফি মামলার আসামি মিলন বিকাশ ত্রিপুরা খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারে তার মৃত্যু হয়। কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কারাগারের টয়লেটে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করে।

কারাগারে আসামীর মৃত্যুর ঘটনায় ইতোমধ্যে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি অপরটি কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়। দুটি তদন্ত কমিটিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। গত ২৯ মে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: সাজ্জাদ হোসেন।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত কমিটিতে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিনিয়া চাকমা ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মিটন চাকমা। কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়।

এছাড়া কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ডিআইজি (প্রিজন) আরো একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে রাঙ্গামাটির জেলা কারাগারের জেল সুপার মতিউর রহমান। অপর দুই সদস্য হলেন বান্দরবান জেলা কারাগারের ফোরকান ওয়াহিদ, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন ডা. শামিম রেজা। উক্ত কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

গত ২৮ মে শুক্রবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের টয়লেটের ভেন্টিলেটরের রডে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলন বিকাশ ত্রিপুরা(২৬)র মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মিলন রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার অরুন পাড়া এলাকার মনসারাই ত্রিপুরার ছেলে। গত ১৬ মে খাগড়াছড়ির গুইমারা থানায় দায়ের করা একটি পর্ণগ্রাফি মামলায় মিলনকে আটক করা হয়। পরের দিন ১৭ মে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। সেই থেকে মিলন কারাগারে ছিল।

২৮ মে বিকালে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে পারিবারিকভাবে তার দাহক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

Exit mobile version