মহেশখালী উপজেলার অন্তর্গত কুতুবজোম ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের চরপাড়া এলাকায় কতিপয় নেতার ছত্রছায়ায় জনৈক গোলাপশাহ ও হেলাল উদ্দিন এর নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে দেশিয় বাংলা মদ তৈরির কারখানা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুতুবজোম চরপাড়ার পশ্চিমে প্রভাবশালী নেতার চিংড়ী ঘেরের কাকড়া ব্যবসায়ীর বাসার পাশে প্রতি রাতে তৈরি হচ্ছে দেশীয় বাংলা মদ। নয়াপাড়ার চরপাড়ার
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাংলা মদ তৈরির কারখানার উৎপাদন কুতুবজোমের কিছু দাগি সন্ত্রাসী ও কতিপয় নেতার ছত্রছায়ায় বংশপরম্পরায় ৩০-৪০ বছর ধরে চলে আসছে। যদিও এদের কয়েকজন এখন জেলহাজতে। তবুও থেমে নেই তাদের মদ তৈরির কাজ। নিয়মিত চলে আসছে তাদের চোলাই মদের ব্যবসা।
মদ তৈরি বন্ধ করার জন্য স্থানীয় এলাকাবাসী বহু চেষ্টা করেও বন্ধ করতে পারেনি।
সম্প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে কিছুদিন গা ঢাকা দিয়েছিল তারা ৷
পুনরায় এলাকায় ফিরে এসে বর্তমানে পুরোদমে চালু রেখেছে মদের উৎপাদন।
প্রতিদিন সূর্যের আলো দেখা দেওয়ার আগেই দেশীয় তৈরি মদ বিশেষ পলিথিন ব্যাগে চটের বস্তায় করে টমটম অটোরিকশার মাধ্যমে সড়ক পথে চলে যায় মহেশখালীর বিভিন্ন মাদক স্পটে।
ঐসকল মাদক কারবারিরা মদ তৈরি করে গড়েছে সম্পদের পাহাড় ।কুতুবজোম চরপাড়ায় বাংলা মদ উৎপাদন কেন্দ্রে পৌঁছতে মদ উৎপাদনকারীদের রয়েছে তিন স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বেস্টনি। ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকতে মদ উৎপাদনকারিরা ব্যবহার করছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। ফলে অনেক সময় সাংবাদিক পুলিশ তাদের হাতে নাজেহাল হওয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ।
প্রথম প্রথম নিজ নিজ বাড়িতে দেশিয় মদ তৈরি করতো এরা। মহেশখালী থানা পুলিশের বিভিন্ন অভিযান ও ধরপাকড়ের কারনে এরা নিরাপদ দূরত্বে চিংড়ী ঘেরে গড়ে তুলেছে দেশিয় মদ তৈরির কারখানা।
সন্ধ্যা নামতেই চিংড়ী ঘেরের মাঝখানে কালো পলিথিনে ঘেরা কাকড়া চাষের বাসায় ফজরের আযানের আগ পর্যন্ত চলে বিরতিহীন উৎপাদন।
দৈনিক উৎপাদন হয় মিনিমাম এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার লিটার চোলাই মদ। পাইকারী ক্রেতাদের কাছে বিক্রি হয় প্রতি লিটার ৬-৭ শত টাকা।
মাদকের আস্তানায় আনাগোনা রয়েছে মানবপাচারকারী ও বিভিন্ন মামলার দাগি আসামিদের ৷ তারা নির্দ্বিধায় বিচরণ করছে আগ্নেয়াস্ত্র সহকারে ।
গোপন সংবাদের সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ জন স্থানীয় যুবক রাতদিন চুক্তিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে।
দেশি মদ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় পচা আখের গুড় আর রাসায়নিক উপাদানসহ ঘুমের ওষুধ।
আশপাশের অনেক ভদ্র পরিবার মানসম্মানের ভয়ে দূরে বা অন্যত্র পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেছে। মদ্যপাড়ায় বসবাস করলে বিয়ের উপযুক্ত ছেলেমেয়ে ভালো পরিবারে বিয়ে দিতে পারে না বলে তারা জানায় ৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুতুবজোম চরপাড়া এলাকার স্থানীয় কয়েকজন জানান- আমরা সামাজিকভাবে অনেক চেষ্টা করেছি মদ উৎপাদন বন্ধ করতে, কিন্ত তাদের হাত অনেক লম্বা তাই আমরা পারি না। নীরবে চোখ-কান বন্ধ করা ছাড়া উপায় নেই আমাদের।
মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা খুবই কঠোর অবস্থানে আছি ৷ মাদক নির্মূলে থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে ৷
মদ তৈরির এলাকাতে যথাসময়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।