parbattanews

কুতুবদিয়ায় ১৩ মাস পর বাল্য বিয়ে ভাঙতে মামলার নির্দেশ

বাল্য বিবাহ

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

কুতুবদিয়ায় সাড়ে ১১ বছর বয়সের মেয়েকে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার ১৩ মাস পর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন ইউএনও। দু‘দফা অফিযোগ শেষে তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি এ নির্দেশ দেন।

জানা যায়, গত বছর ২৭ মে উপজেলার দক্ষিণ ধুরুং মশরফ আলী বলির পাড়া গ্রামের আব্দুল মোতালেব আত্মীয়তার সূত্রে মফিজ আলমের পুত্র জিয়াবুল করিমকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে মোতালেব‘র কন্যা উম্মে সালমার সাথে জোরপূর্বক কাবিন নামা করে জিয়াবুলকে ছেড়ে দেয়া হয়। উম্মে ছালমা স্থানীয় দারুল হিকমাহ আল মালেকিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০১৩ সালে ইবতেদায়ী পরীক্ষায় “ডি” গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়। প্রশংসাপত্র অনুযায়ি তার জন্ম ০৪ জুন ২০০৪। অপর দিকে জিয়াবুল করিম ডিংগাভাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৭ সালে পিএসসি পরীক্ষায় ‘এ’ গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। তার জন্ম তারিখ ১৮ নভেম্বর ১৯৯৫।

মেয়ের পিতা আব্দুল মোতালেব উম্মে সালমার নাম পরিবর্তন করে জমিলা বেগম রেখে ডিংগাভাংগাস্থ মহিউচ্ছন্নাহ আরাবিয়া এতিমখানা থেকে ভূয়া প্রত্যয়ন সংগ্রহ করেন। একই প্রতিষ্ঠান থেকে বর জিয়াবুল করিমের নামের আংশিক পরিবর্তন করে আরেকটি প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে। ভূয়া দু‘টি প্রত্যয়ন দিয়ে দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম সনদ নিয়ে কাবিন সম্পন্ন করে। এ ঘটনার পর জিয়াবুল বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়ায়।

গত ২ জুলাই তারিখে জিয়াবুলের মা জাহানারা বেগম জোরপূর্বক কাবিননামা বাতিলের আবেদন জানিয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। তৎসময়ের ইউএনও মো. মমীনুর রশীদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দক্ষিণ ধুরুং ইউপি চেযারম্যানকে নির্দেশ দেন। কিন্তু সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ দীর্ঘ এক বছরেও অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা নেননি। এ দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য সহ একাধিক জন প্রতিনিধি এ বাল্য বিয়ের পক্ষ নিয়ে ছেলের কাছ থেকে কাবিনের অর্থ আদায়ের অপচেষ্টায় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিরূপায় হয়ে জাহানারা বেগম বর্তমান নির্বাহি অফিসারকে আরেকটি আবেদন করলে তিনি পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। প.প. কর্মকর্তা বিধান কান্তি রুদ্র সরেজমিন তদন্তে ভূয়া প্রত্যয়নপত্র, জন্ম সনদ, নাম পরিবর্তন ইত্যাদি পর্যালোচনা করে বাল্য বিয়ে/কাবিন করায় সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করেন গত ২৫ মে।

উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সালেহীন তানভীর গাজী জানান, বাল্য বিয়ের তদন্ত রিপোর্টের পর মামলা রুজুসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানায় প্রেরণ করেছেন। এ দিকে গত এক সপ্তাহ আগে ফাইলটি থানায় পৌছিলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলা রুজু হয়ািন। ইউএনও অফিস থেকে পাঠানো নির্দেশনার বিষয়টির খোঁজ নিতে থানায় গেলে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহজাহান বলেন, তিনি মেয়ের পিতাকে থানায় ডেকেছিলেন, কিন্তু সে আসেনি। মামলা রেকর্ড হয়নি, রেকর্ড হলে তদন্ত করে সংশ্লিস্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

Exit mobile version