কেমন ছিলো রাঙামাটির ২০১৯: ফিরে দেখা
২০১৯ সালটি কেটেছে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। গেল বছর সবচেয়ে বড় যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে তাহলো, ১৮ মার্চ বাঘাইছড়ি উপজেলায় নির্বাচনী কাজ শেষে করে ফেরার পথে নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাড়িতে ব্রাশ ফায়ার করে সন্ত্রাসীরা। এতে ৮ জন নিহত হন, আহত হন অন্তত ১৬ জন। এর মধ্য দিয়ে শান্তিচুক্তির পর প্রথম সরকারি কর্মকর্তাদের উপর হামলা হলো।
এসেছে নতুন বছর ২০২০। বিদায় নিয়েছে পুরনো বছর ২০১৯। নতুন বছরে সকলের আশা, পাহাড়ে মৃত্যুর মিছিল যেন আর দীর্ঘ না হয়। সবুজ পাহাড় যেন আরও সবুজ হয়ে উঠে, রক্তের হোলি খেলা যেন বন্ধ হয়।
গত বছরের শুরুতেই ৪ জানুয়ারি বাঘাইছড়ির বাবু পাড়ায় ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয় বসু চাকমাকে। এরপর থেকে ২০১৯ সালটি কেটেছে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। গেল বছর সবচেয়ে বড় যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে তাহলো, ১৮ মার্চ বাঘাইছড়ি উপজেলায় নির্বাচনী কাজ শেষে করে ফেরার পথে নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাড়িতে ব্রাশ ফায়ার করে সন্ত্রাসীরা। এতে ৮ জন নিহত হন, আহত হন অন্তত ১৬ জন।
এর মধ্য দিয়ে শান্তিচুক্তির পর প্রথম সরকারি কর্মকর্তাদের উপর হামলা হলো। সরকারি তদন্ত কমিটি এ ঘটনার জন্য শান্তিচুক্তি সাক্ষরকারী জেএসএসকে দায়ী করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান এ ঘটনাকে শান্তিচুক্তি শর্ত লংঘন বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এদিকে রাঙামাটির ইতিহাসে গেলো বছর ১৬ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আগমন করেন। তার সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিলো পাহাড় থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক নির্মূল করা। এজন্য তিনি সরকারের উচ্চপদস্থ একটি দল নিয়ে আসেন এবং পাহাড়ের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে পাহাড়ে র্যাব মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ বৈঠকের পরই সরকার পাহাড়ে র্যাব ব্যাটালিয়ানের জনবল কাঠামো অনুমোদন করেছে।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তিন পার্বত্য জেলা থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক নির্মূল করা হবে। শান্তি চুক্তির নিয়মানুযায়ী যেসব স্থান থেকে সেনা ক্যাম্প উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে সেখানে বিজিবি, পুলিশ এবং র্যাব মোতায়েন করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, পুলিশ এবং বিজিবি’র জন্য আধুনিক সরঞ্জমাম এবং হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য যাবতীয় লজিস্টিক সাপোর্ট (যন্ত্রপাতি সহযোগিতা) প্রদান করা হবে।
মন্ত্রী আরও জানান, আমাদের দু’পাশে ভারত এবং মিয়ানমার সীমান্ত রয়েছে। তাই সারাদেশের ন্যায় তিন পার্বত্য জেলায় খুব শীঘ্রই বর্ডার রোডের কাজ শুরু করা হবে। রোডগুলোর কাজ শুরু করা হলে সন্ত্রাসীরা টিকে থাকতে পারবে না। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত করা হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা গেলে সন্ত্রাস নির্মূল হয়ে যাবে।
এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব সুদত্ত চাকমা, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর-মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, পুলিশের মহা-পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানের (র্যাব) মহা-পরিচালক বেনজীর আহমেদ, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশন চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর মহা-পরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ ও তিন জেলার প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে অনুষ্ঠিত সভা সূত্রে জানা গেছে, তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে রাঙামাটি থেকে বেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১টি বন্দুক, ১টি রিভলবার ৪টি পিস্তল, ৯টি এলজি, ১টি শাটারগান, ১টি জি থ্রি রাইফেল, ২টি ম্যাগজিন, ৩৮টি কার্তুজ, ১১২টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
চোরাচালান বিরোধী টাস্কফোর্স সংক্রান্ত ১২ হাজার ২৬৫টি অভিযান পরিচালনা করেছে। এই অভিযানে আটককৃত পণ্যমূল্য ২ কোটি ৪৬ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫৪৫ টাকা। এ সংক্রান্ত ৭৮টি মামলায় ৯০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে খাগড়াছড়ি জেলায় অস্ত্র আইনে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অস্ত্র আইনে ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বান্দরবানে অস্ত্র আইনে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১টি বন্দুক ও আগস্টে ২টি বন্দুক, ১৫টি সীসার বল, ১টি ছুরি ও ১টি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়।
চোরাচালান বিরোধী টাস্কফোর্স ৩ হাজার ৫১৬টি অভিযান চালায়। এতে ৩৯ কোটি ৮৬ লক্ষ ৮০ হাজার ১১২ টাকার পণ্য উদ্ধার করা হয়। এই ব্যাপারে ৪২২টি মামলা দায়ের করা হলেও কোনো আটক নেই বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
গেলো বছরে সবচেয়ে যে সমস্যাটি নিয়ে পাহাড়ের বাসিন্দারা আন্দোলন-সংগ্রামে করছে তা হলো ভূমি সমস্যা। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি আইন সংশোধনের দাবিতে পাহাড়ের বাঙালি জনগণ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। ২৩ ডিসেম্বর এ বিষয় নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগিরক পরিষদ নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় কমিশনের চেয়ারম্যান পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের নেতাকর্মীদের বলেন, এই আইন নিয়ে যতই লাগবেন, ততই জটিলতা বাড়বে। আর এই আইন হলে বাঙালি এবং পাহাড়িদের উভয়ের জমি রেকর্ড হবে এবং একটি ডকুমেন্টেশন হবে।
তবে পুরো বছরজুড়ে পাহাড়ে কোনোভাবেই থামানো যায়নি হত্যাকাণ্ড। একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৩৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূল কারণ হলো- সশস্ত্র দলগুলো তাদের আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ, এলাকা দখল এবং নিজেদের স্বার্থদ্ব›দ্ব নিয়ে প্রতিনিয়ত বন্ধুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। আর এ যুদ্ধের মধ্যে সশস্ত্র ক্যাডাররা নিহত হচ্ছে।
২০১৮ সালের চেয়ে গত বছর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটেছে। ২০১৮ সালে রাঙামাটিতে খুনের শিকার হয় ২৮ জন। চলতি বছরের নভেম্বরের ১৮ তারিখে সর্বশেষ খুন হওয়া তিনজনসহ এ পর্যন্ত হত্যার শিকার হয়েছে সর্বমোট ৩৯ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ২, ফেব্রুয়ারিতে ৪, মার্চ মাসে ১০, এপ্রিল মাসে ৭ মে মাসে ২, জুন মাসে ১, জুলাই মাসে ২, আগস্ট মাসে ৪, সেপ্টেম্বর মাসে ২, অক্টোবর মাসে ২, নভেম্বর মাসে ৩ জনসহ সর্বমোট ৩৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে।
সরকারি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারির ৪ তারিখে বাঘাইছড়ির বাবু পাড়ায় ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয় বসু চাকমাকে। বাঘাইছড়ি থানার মামলা নং-০২, তারিখ-০৫/০১/২০১৯ইং।
২৯ জানুয়ারি লংগদুতে পবিত্র কুমার চাকমাকে হত্যা করা হয়। লংগদু থানার মামলা নং-০৬, তারিখ-৩০/০১/১৯ইং।
ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখে চন্দ্রঘোনার পূর্ব কোদালায় হত্যা করা হয় মিতালী মারমাকে। চন্দ্রঘোনা থানার মামলা নং-০১, তারিখ: ০৩/০২/১৯।
৪ তারিখে চন্দ্রঘোনার ভাল্লুকয়ায় গুলি করে মো. জাহেদ (২৫) ও মংসুইনু মারমা (৪০)কে হত্যা করা হয়। চন্দ্রঘোনা থানার মামলা নং-০২, তারিখ: ০৫/০২/১৯।
একইদিনে রাঙামাটি সদরের বালুখালী ইউপিস্থ ২নং ওয়ার্ডের মধ্যপাড়া গ্রামস্থ কাপ্তাই হ্রদ থেকে তাকে ভোতা অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ পাওয়া যায়। কোতয়ালী থানার মামলা নং-০৭, তারিখ-০৪/০২/১৯।
মার্চের ৭ তারিখে বাঘাইছড়ির বঙ্গলতলী বি-ব্লকে উদয় বিকাশ চাকমা ওরফে চিক্কোধন চাকমা (৩৮)কে গুলি করে হত্যা করা হয়। বাঘাইছড়ি থানার মামলা নং-০২, তারিখ: ২২/০৪/২০১৯।
১৮ মার্চে নির্বাচন শেষে ফেরারপথে বাঘাইছড়ির নয়কিলো এলাকায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ব্রাশ ফায়ারে মো. আমির হোসেন (৩৭), মো. আলা আমিন (১৭), মিহির কান্তি দত্ত (৪০), জাহানারা বেগম (৪০), বিলকিস আক্তার (৪০), মন্টু চাকমা (২৫) ও আবু তৈয়বসহ মোট ৮ জনকে হত্যা করা হয়। বাঘাইছড়ি থানার মামলা নং-০২, তারিখ-২০/০৩/২০১৯ ইং।
মার্চের ১৯ তারিখে বিলাইছড়িতে আওয়ামী লীগের নেতা সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। বিলাইছড়ি থানার মামলা নং-০১, তারিখ-২৩/০৩/২০১৯ ইং।
এপ্রিলের ৩ তারিখে রাজস্থলীর পোয়াইতু পাড়ায় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলিতে ৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গেলেও প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তবে স্থানীয় একাধিক সূত্র থেকে সেদিন গোলাগুলির খবরটি জানা গিয়েছিলো।
মে মাসের ৮ তারিখে রাঙামাটির বরকল উপজেলায় হত্যার শিকার হয় আপ্রুসে মারমা (৩২)। ১৯ মে চন্দ্রঘোনায় আ’লীগের নেতা ক্যহলাচিং মারমা (৪৭) কে গুলি করে হত্যা করা হয়। চন্দ্রঘোনা থানার মামলা নং-০১, তারিখ: ২০/০৫/১৯ইং।
জুন মাসের ২৭ তারিখে শুভলংয়ে সৃতিময় চাকমা ওরফে কোকো (৩২)কে গুলি করে হত্যা করা হয়। বরকল থানার মামলা নং-০৪, তারিখ-২৯/০৬/২০১৯।
জুলাইয়ের ১ তারিখে চন্দ্রঘোনায় ম্রাসাং খই মারমা (৬০) ও মেয়ে মে সাংনু মারমা(২৯)কে নিজ বাসার ভেতরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। চন্দ্রঘোনা থানার মামলা নং-১, তারিখ-০৩/০৭/২০১৯।
১১ আগস্ট ২০১৯ বাঘাইছড়িতে এ্যানো চাকমা এবং তার সহযোগী স্বতঃসিদ্ধি চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে। বাঘাইছড়ি থানার মামলা নং-০২, তারিখ-১৪/০৮/২০১৯।
১৮ আগস্ট ২০১৯ রাজস্থলীর পোয়াতু পাড়ায় সেনাবাহিনীর সৈনিক মো. নাসিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। রাজস্থলী থানার মামলা নং-০২, তারিখ-২৬/০৮/২০১৯।
২৩ আগস্ট তারিখে বাঘাইছড়ির সাজেকে কসাই সুমন ওরফে লাকির বাপ (৪৫) কে গুলি করে হত্যা করা হয়। সাজেক থানার মামলা নং-০৪, তারিখ-২৩/০৮/২০১৯।
সেপ্টেম্বর মাসের ১৭ তারিখ বাঘাইছড়িতে হত্যা করা হয় রিপেল চাকমা (২৫) ও বর্ষণ চাকমা (২৪) নামে দুইজনকে।
অক্টোবর মাসের ৯ তারিখ ভোররাতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাঙ্গালহালিয়ার কাকড়াছড়ি সুইচ গেট এলাকায় অংসুইঅং মারমা (৪৫) নিহত হয়।
২৩ অক্টোবর রাজস্থলী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হেডম্যান দ্বীপময় তালুকদারকে গুলি করে হত্যা।
সর্বশেষ গত মাসের গত ১৮ নভেম্বর ২০১৯ সোমবার সন্ধ্যারাতে গাইন্দ্যা ইউনিয়নের বালুমুড়া মারমা পাড়া এলাকায় গুলি করে হত্যা করা হয় তিনজনকে। রাজস্থলী থানায় দায়েরকৃত মামলা নাম্বার-১। তারিখ: ২০/১১/২০১৯ইং।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের দাবি, পাহাড়ে শান্তি আনার প্রধান অন্তরায় অবৈধ অস্ত্র ও আধিপত্য বিস্তারের লড়াই এবং উপজাতীয় আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সহযোগিতার অভাব। চুক্তির এত বছর পার হলেও পাহাড়ে এখনো অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করা যায়নি।
এর মূল রহস্য হলো- চাঁদাবাজি, এলাকা নিয়ন্ত্রণ এবং নিজেদের শক্তি জানান দিতে সন্ত্রাসী দলগুলো প্রতিনিয়ত সশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত হয়। পাহাড় থেকে যদি অবৈধ অস্ত্র বন্ধ করা না যায় তাহলে এ হত্যাকাণ্ড কোনভাবে বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
রাঙামাটি পুলিশ সুপার আলমগীর কবির বলেন, একদিকে পাহাড়ি এলাকা, অন্যদিকে পুলিশের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই ইচ্ছা থাকলেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাসময়ে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। যদি পুলিশের কাছে অভিযান পরিচালনার জন্য সরঞ্জাম থাকতো তাহলে পাহাড় থেকে সন্ত্রাসীদের উৎখাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যেতো।