কোনো ধরণের সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিয়ানমারের সংলাপ 

fec-image

কোনো ধরণের সিদ্ধান্ত ব্যাতিরেকেই শেষ হলো রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের বৈঠক। এটি ছিলো বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের তৃতীয় দফার সংলাপ।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে এ সংলাপের সমাপ্তি ঘটে। মিয়ানমারে ফেরত গিয়ে সরকারের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধিরা।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তৃতীয়বারের মতো কথা বলতে বুধবার কক্সবাজারে আসেন মিয়ানমার ও আসিয়ানের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। দুইদিনের সফরে আসা এই কর্মকর্তারা ৪৭ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করেন। বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই দিন উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক্সটেনশন-৪ ক্যাম্পে রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে মিয়ানমার ও আসিয়ান প্রতিনিধি দলের সংলাপ হয়।

সংলাপ শেষে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সংস্থা বিভাগের মহাপরিচালক চ্যান অ্যায়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ দুইদিন ধরে সংলাপ করেছি। বরাবরই তারা (রোহিঙ্গা শব্দ ব্যবহার করেননি) আমাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া দিয়েছেন। আমরা শুনেছি। বিষয়টি মিয়ানমারের ফেরত গিয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরবো এবং দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবো।’

সংলাপে অংশ নেওয়া রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতারা বলেছেন, সংলাপে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরে যেতে প্রতিনিধি দলটি বার বার অনুরোধ করেছেন। বিদেশি পরিচয়ে প্রথমে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) নিতে হবে। এরপর মিয়ানমার যাচাই-বাচাই করে নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। এজন্য তারা আগের মতোই এবারও প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছেন। তারা মিয়ানমারে গিয়ে ফের নির্যাতনের শিকার হতে চান না।

মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সংস্থা ও অর্থনীতিক বিভাগের পরিচালক চ্যান অ্যায়ের নেতৃত্বে ৯ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন, শ্রম ও অভিবাসন এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। আর সাত সদস্যের আসিয়ান প্রতিনিধি দলে ছিলেন আসিয়ানভুক্ত রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা। সংলাপে অংশ নেন ৪১জন রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা ও ছয় জন কমিউনিটি নারী নেত্রী।

কক্সবাজার শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক অতিরিক্ত সচিব শামশুদ্দোজা নয়ন জানিয়েছেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে একই স্থানে পুনরায় সংলাপ শুরু হয়ে ২টার দিকে শেষ হয়। প্রতিনিধি দলটি দুইদিনের সফর শেষে বিকালে ঢাকার উদ্দেশে কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন।’

এর আগে চলতি বছরের ২৭ জুলাই মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে’র নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর করেন। এসময় আসিয়ানের প্রতিনিধি দলটিও সঙ্গে ছিলেন। সে সময়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তারা যৌথভাবে সংলাপে অংশ নেন।

এছাড়াও ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী উইন মিয়াট আয়ে’র নেতৃত্বে আরও একটি প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলতে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসেছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: প্রত্যাবাসন, মিয়ানমার, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন