parbattanews

‘কোমেন’র আঘাতে লণ্ডভণ্ড কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা

Coxs Afer Komen  (4) copy

স্টাফ রিপোর্টার:
ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করার আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরছে উপকূলীয় লোকজন। শুক্রবার ভোর থেকেই তারা ঘরে ফেরা শুরু করে। কোমেন’র আঘাতে জেলার টেকনাফের সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন।

তবে এখনো উপকূলীয় নিন্মাঞ্চলে জোয়ারের পানি রয়ে গেছে। শুক্রবার সকাল ১০টার জোয়ারেও পানি ঢুকে পুনরায় প্লাবিত হয়েছে উপকূলীয় বেশ কিছু নিচু এলাকা। সামুদ্রিক নৌযান গুলো এখনো নিরাপদ স্থানে নোঙর করে আছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ চট্টগ্রাম হয়ে সন্দীপ উপকূল অতিক্রম করার পর ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে দেয়া ৭নং বিপদ সংকেত তুলে নিয়ে ৩নং সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মাছ ধরার সকল ট্রলারকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। শুক্রবার থেকে কক্সবাজারে ভারি বর্ষণ কমতে পারে।

কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় কোমেন’র আঘাতে কুতুবদিয়ার উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের বেড়িবাঁধে ক্ষতি হয়েছে। পূর্বাংশেও ক্ষতির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। এগুলোর সংস্কার দ্রুত করা না হলে জোয়ারের পানি ঢুকে পুনরায় দুর্ভোগে পড়বেন দ্বীপবাসী।

টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে শাহপরীরদ্বীপ। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে দ্বীপের বিশাল একটি অংশ। জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বীজ তলা, ফসলী জমি, চিংড়ি ঘের ও ঘর বাড়ি তলিয়ে গেছে। দুর্গত এলাকার লোকজন শুকনা খাবার খেয়ে সময় কাটাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। টেকনাফ সদর থেকে কোন ধরণের কাঁচামাল আনা-নেওয়া করা যাচ্ছেনা। ফলে অর্থনৈতিকভাবেও চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এখানকার বাসিন্দারা।

সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, কোমেন’র আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেন্টমার্টিনে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় গাছ চাপা পড়ে মোহাম্মদ ইসলাম (৫০) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছে।

তিনি বলেন, জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। হারিয়ে গেছে ২টি ফিশিং ট্রলার, একটি সার্ভিস বোট, ছোট বড় ৮টি নৌকা ডুবে গেছে। উড়ে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। সব মিলে অন্তত তিন কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মহেশখালীর সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বকর জানিয়েছেন, কোমেন’র আঘাতে দ্বীপের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক স্থানে ঘরবাড়ি ও গাছপালা উপড়ে গেছে। তবে বড় ধরণের ক্ষতি হয়নি।

কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক অনুপম সাহা বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ লাখ মানুষের মাঝে শুকনা খাবার সরবরাহ করা হয়। আগাম প্রস্তুতি থাকায় ঘূর্ণিঝড় কোমেন’র আঘাতে বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যেখানে ক্ষতি হয়েছে সেখানে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত হয়েছে।

Exit mobile version