“রাতে রাস্তায় দিনের তুলনায় জ্যাম খানিকটা কম ”

ক্রেতা যতক্ষণ দোকান খোলা ততক্ষণ

fec-image

রাত ১১টায় রওনা দিলাম। রাস্তায় সিগন্যাল এবং পানবাজার রোডের সামনে জ্যাম লেগে আছে। আর এ ছালাম শপিং কমপ্লেক্সের ভেতর ঢুকে তো মনে হলো রাত নয়, এই তো দিনের বেলা গৃহকর্মীর জন্য গয়না, নিজের জন্য ওড়নাসহ টুকিটাকি কিনলাম। ওড়নার সাইড পিকু করে বাসায় ফিরতে ফিরতে একটা বেজে যায়।

গত শুক্রবার রাতে ঈদের বাজার করতে যাওয়ার এমন অভিজ্ঞতার কথা জানালেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জেসমিন আক্তার। তিনি বললেন, অফিস থেকে ফিরে সবার ইফতারি, রাতের খাবারের আয়ােজন করে রাতে ঈদবাজার করা ছাড়া আর উপায় নেই। রাতে রাস্তায় দিনের তুলনায় জ্যাম খানিকটা কম থাকে। তবে মার্কেটের ভেতরে ভিড় থাকে।

রবিবার সকাল থেকে বিকেল ও রাতে নিউমার্কেট, সুপার মার্কেট, পৌরসভা মার্কেট, ফিরোজা মার্কেট, হকার্স মার্কেট এবং বার্মিজ মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, প্রচণ্ড গরমকে উপেক্ষা করে সাধ ও সাধ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কেনাকাটার জন্যই মার্কেটে এসেছেন ক্রেতারা। পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে কানের দুল, চুড়ি, গলার মালা, টিপ, ব্যাগ, জুতোসহ ঘর সাজানোর অন্যান্য জিনিস কিনছেন তারা।

এছাড়া ছেলেদের প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট, বেল্ট, মানিব্যাগ ইত্যাদি তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায় বলে ছাত্র-তরুণ যুবকসহ অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন মার্কেটে।

ছালাম মার্কেটের বিক্রেতারা জানালেন, ঈদের আগ পর্যন্ত তারা তাদের দোকান রাত দুইটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত খোলা রাখেন। মোট কথা, যতক্ষণ ক্রেতা, ততক্ষণ দোকান খোলা থাকে। ওখানকার গলিতে গড়ে ওঠা বিভিন্ন পোশাকের দোকানের শাটার বন্ধ করতে করতেও রাত ১২টা বেজে যাচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানালেন।

অন্যদিকে রাতে কেনাকাটা করে বাড়ি ফিরতেও আগের তুলনায় ঝুঁকি ঝামেলা কিছুটা কমেছে। ব্যক্তিগত গাড়ি না থাকলেও অসুবিধে নেই, প্রশাসনের নিরাপত্তা সবসময় কাছেই আছে।

কোরালরীফ মার্কেটের ৩য় তলার স্টাইল ক্লাবের বিক্রেতা আমিন সিদ্দিকী বলেন, রাতে মহিলা ক্রেতাদের ভিড় দিন দিন বাড়ছে। চাইলেও দোকান বন্ধ করা সম্ভব হয় না। প্রতিদিন দোকান বন্ধ করতে রাত ২টা বেজে যায়। স্টাইল ক্লাবে দেশি বিদেশী পণ্যের প্রোডাক্ট বিক্রি করা হয়।

মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে বিশেষ বিশেষ আকর্ষন যথা- সিলাইবিহীন সেলোয়ার, কামিজ, ফ্রগ, লেহেঙ্গার জন্য আকর্ষণীয় এর পাশেই রয়েছে শাড়ি টেক্সটাইলের সুতি ছাপা শাড়ি রয়েছে। ফুল, পাতা, কলকা, তাঁতের পাড়, বুটির ছাপায় সুতি শাড়িগুলো পরতে বেশ আরামদায়ক। তাই লক্ষ্য করা যায় মহিলাদের ভিড়। মহিলাদের পাশাপাশি যুবকদেরও ভিড় লক্ষণীয়।

মনির হোছাইন নামের এক ক্রেতা বলেন, তিনি মায়ের জন্য শাড়ি কিনবেন। কিন্তু পূর্বের অভিজ্ঞতা নেই। বান্ধবীর পরামর্শ অনুযায়ী মার্কেটে যান। এসে দেখেন, বয়স ম্যাচ করে নানা দরের শাড়ি টাঙানো রয়েছে তাই যেটা পছন্দ হয়, সেটাই সহজে নেয়া যায়।

কোরাল রীফ প্লাজার চীফ ইঞ্জিনিয়ার আরিফ মাঈন উদ্দিন বলেন, শহরের অন্যান্য মার্কেটের চেয়ে কোরাল লীফ মার্কেটে সকল ধরণের সেবা পায় বলে ক্রেতারা রাতেও এ মার্কেটে ভিড় করে। তাছাড়া পুরো মার্কেট শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, আছে লিফটের অন্যতম ব্যবস্থা; ক্রেতারা এখান থেকে কেনাকাটা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এখানে রয়েছে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, তা জেনে ক্রেতারা খুশি হয়ে এখানে ভিড় করে বলে যতক্ষণ ক্রেতা থাকে মার্কেটের দোকান গুলো ততক্ষণ খোলা রাখা হয়। ক্রেতাদের সেবাই কোরালরীফ প্লাজার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য।

এছাড়া কিছু কিছু পণ্যের মূল্য নির্ধারণ থাকায় দরদাম নিয়েও দোকানিদের সঙ্গে তর্কে জড়ানোর অবকাশ পাওয়া যায়। পানবাজার রোডে অবস্থিত অভিজাত ‘মনে রেখ’ বস্ত্র বিতানের পরিচালক মহিউদ্দিন ভুট্টো বলেন-প্রচুর গরম উপেক্ষা করে ক্রেতাসাধারণ আসছে। এবছর দামও সাশ্রয়ী রয়েছে। আমাদের দোকানে সবচেয়ে শাড়ি ও ত্রি-পিছ-গ্রাউন্ড বিক্রি হচ্ছে বেশি। ঈদ পর্যন্ত আরো বিক্রি বাড়বে ইনশাল্লাহ। কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন-ঈদ বাজারে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সদা প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ বাহিনী।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন