ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে রাঙামাটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাতের ৪লক্ষ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ

courruption-220x118

বিশেষ প্রতিনিধি, রাঙামাটি:

সরকার প্রদত্ত হত-দ্ররিদ্র, দুঃস্থ, এতিম, অসহায়দের জন্য রাঙামাটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বরাদ্দকৃত এ বছরের যাকাতের ৪লক্ষ ৬০হাজার টাকা ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে আত্বসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে । যাকাতের এসব টাকা বিতরণে সরকারের সু নির্দিষ্ট নিদের্শনা থাকা সত্বেও কোন  নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে  যাচাই- বাচাই ছাড়াই সংলিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অসাধূ কর্মকর্তার যোগসাজসে এসব যাকাতের টাকা আত্বসাৎ করেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র । একইভাবে গত সাড়ে ৪ বছর ধরে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাতের টাকা আত্বসাৎ করার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

 সরজমিনে অনুসন্ধানে নওমুসলিম, ছাত্রবৃত্তি, দুস্থদের ভুয়া তালিকা তৈরী করে জেলার প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তা, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মন্ত্রির প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয়দানকারী পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক গংরা তাদের বাবা, মা, স্ত্রী, আত্মীয় স্বজন ও ঘরের একাধিক কাজের মেয়ের নামে ভুয়া প্রতিবন্ধী দেখিয়ে যাকাতের এসব টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে ।

 জানা গেছে, ভুয়া ঠিকানা ও স্বামীকে পিতা, আর পিতাকে স্বামী দেখিয়ে সংলিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কতিপয় দূর্নীতিবাজ কর্মচারীদের যোগসাজসে পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মনসুর আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী কামাল, জেলা ওলামালীগ সভাপতি ক্বারী ওসমান গনি, সাধারণ সম্পাদক মৌলভী নাজমুল হক, ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি লুৎফর রহমান ও ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের একাউন্টস অফিসার ক্বারী সোলায়মান পরস্পর যোগসাজসে একটি তালিকা প্রনয়ণ করে। এরপর অফিসের একাউন্টস অফিসার ক্বারী সোলায়মানের সহযোগীতায় বিভিন্ন ভূয়া ঠিকানা ও অসত্য তথ্য দিয়ে ফরম পুরণ করে কোন প্রকার সরকারী নির্দেশনা অনুসরণ না করে, যাচাই-বাচাই ছাড়া সংলিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান  উপ-পরিচালক ক্বারী আলমগীর হোসেন সিকাদারের স্বাক্ষর নিয়ে জেলা প্রসাশক মোস্তাফা কামাল বরাবরে প্রেরণ করেন। আর জেলা প্রশাসক গত ২৭.৫.১৩ তারিখে যাচাই-বাছাই ছাড়া মন্ত্রীর সুপারিশের ভিত্তিতে অনুমোদন স্বাক্ষর করে সংলিষ্ট প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করে।

 এ তালিকায় স্থান পেয়েছে সমাজের বিত্তবান, মোটর মালিক, লক্ষ লক্ষ টাকার সুদি ব্যবসায়ী, কোটিপতি ১ম শ্রেনীর ঠিকাদার আর আওয়ামীলীগ নেতার স্ত্রী-কন্যা-ভাই ও বাসার কাজের মেয়ের নাম।

এ তালিকা ৫মাস আগে পাবর্ত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার কর্তৃক সুপারিশ নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন রাঙামাটি অফিসে জমা দেয় এসব কথিত নেতারা।এ বিষয়টি গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতাদের যাকাতের টাকা আত্বসাৎ শিরোনামে টক অভ দ্যা টাউন হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে শহরময় সাধারণ মানুষের মূখে মূখে। হাটে বাজারে অফিস পাড়াসহ শহর জুড়ে সাধারনের মুখে মুখে একটি আলোচনা, হতদরিদ্র মানুষের কপালে যাকাত নেই, যাকাত এখন আওয়ামীলীগ নেতাদের  পকেটে।

  ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফিস সূত্রে প্রাপ্ত ৩৫জনের তথ্য  সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, শহরের রিজার্ভ বাজার ১নং ওয়ার্ডে ইসলামপুর, পুরাণবস্তি, গীতাশ্রম কলোনী, পোড়া পাহাড় এলাকার ঠিকানায় ১৮জনের নামের তালিকায় মাত্র ৪জনের পরিচয় পাওয়া যায়।  যা ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল হালিম ভোলা কর্তৃক ফাউন্ডেশনে প্রদেয় নামের তালিকার। বাকীদের কোন অস্তিত্ব নেই বললেন এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কমিশনার এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা। এ বিষয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি ৪মাস আগে অতি কষ্টে  আমার এলাকার গরীব তিন জনের জন্য ফাউন্ডেশন থেকে ফরম সংগ্রহ করে মন্ত্রীর সুপারিশ নিয়ে অত্র অফিসে জমা দিই। আমার ওয়ার্ডের ঠিকানা উল্লেখ পূর্বক আরও ২০জনের কাউকে আমরা চিনি না। দীর্ঘ ৫০ বছর আমি এই এলাকায় বসবাস করছি, এসব নামে বা ঠিকানায় কাউকে আমরা সনাক্ত করতে পারিনি। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কোথায় পেল এসব লোক? এ বিষয়ে আপনারা পৌর সাধারণ সম্পাদক মনসুর সাহেব ও ওলমালীগ সভাপতি ওসমান গনিকে জিজ্ঞাসা করলে রহস্য বের হবে’।

 তাছাড়া  বাকী অবশিষ্টদের মধ্যে ২নং ওয়ার্ড এলাকার ১নং, ২নং পাথর ঘাটা, চেঙ্গীমূখ, উন্নয়ন বোর্ড এলাকা (ফাউন্ডেশন সংলগ্ন), মহিলা কলেজ, পুরাণ হাসপাতাল এলাকা ঠিকানায়, যাদের নামে এ যাকাতের টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে  এদের মধ্যে, জেলার প্রতিষ্ঠিত ১ম শ্রেনীর কোটিপতি ঠিকাদারের মা, বাবা ও বোনের ছদ্মনাম  ও রাঙ্গামাটি সিনিয়র মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক দল নেতার নামের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এবং তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ টাকা নগদ গ্রহন করেছেন।

তাছাড়া আব্দুস ছাত্তার রাঙ্গামাটিতে দীর্ঘ ২বছর যাবৎ না থাকলেও ভুয়া ছাত্তারের উপস্থিতি দেখিয়ে যাকাতের টাকার চেক গ্রহণ করেন এই গংটি। চেঙ্গীমূখ ও গীতাশ্রম ঠিকানায় যে ৪টি নামের অস্থিত্ব পাওয়া যায়, তা পৌর আওয়ামীলীগের এক শীর্ষ নেতার বাসার ২টি কাজের মেয়ের  ছদ্মনাম ।

 পুলিশ লাইন এলাকায় যে ৪জনের সন্ধান পাওয়া যায়, তার ২টি ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের এক শীর্ষ নেতার সহধর্মীনি ও আত্মীয়ের নাম, তবে স্বামীর স্থলে ভিন্ন জনের নাম ব্যবহার। এ ছাড়া পার্বত্য মন্ত্রী প্রদেয় সাড়ে ৬ কোটি টাকার ঠিকাধারী কাজের সুবিধাভোগী  যুবলীগ নেতার স্ত্রী পক্ষীয় ২ নিকট আত্মীয়র নাম পরিচয় পাওয়া যায়। বাকী নাম সমূহের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।সূত্র আরো জানায়, এ সব তালিকা প্রনয়নে স্থানীয় মসজিদের ঈমাম ও সংলিষ্ট এলাকার মেম্বার বা কাউন্সিলরের প্রত্যয়ন নেওয়ার নিয়ম নির্ধারণ করা থাকলেও এ নিয়ম মানা হয়নি। এমনকি তালিকায় প্রদত্ত এলাকার কাউন্সিলর সহ মসজিদের ঈমামগন এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।

 যাকাতের এ টাকা আত্বসাতের অভিযোগের বিষয়ে সংলিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উপ পরিচালক ক্বারী আলমগীর হোসেন সিকদার  ও একাউন্ট অফিসার ক্বারী সোলায়মানের  সাথে যোগাযোগ করলে তারা এ বিষয়ে কোন তথ্য দিতে অস্বীকৃতি ও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। ফরম, সুবিধাভোগীর তালিকা, এমনকি প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে যে কয়জনের চেক প্রদান করা হয়েছে তার তালিকা, ছবি প্রদান করতেও অপারগতা প্রকাশ করেন।

 তবে অনেক অনুরোধ ও প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ৩৫জনের নাম প্রকাশ করে অবশিষ্টদের নাম প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করে তিনি বলেন,  এবছর প্রত্যেককে ৫০০০(পাচঁ হাজার) করে  ৯২জনের অনুকুলে সর্বমোট  ৪লক্ষ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে । যার মধ্যে, বিভিন্ন মাদ্রাসার পড়–য়া ছাত্রদের নামে ছাত্রবৃত্তি, চিকিৎসা, দুঃস্থ, প্রতিবন্ধী এসব ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বন্টন হয় বলে আরো জানান তিনি ।

 এসব তালিকা তৈরী কিভাবে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘ভাই আমরা তালিকা তৈরী করিনি, আওয়ামীলীগ নেতা মনসুর, ওলমালীগ সভাপতি ক্বারী ওসমান গনি, সাধারণ সম্পাদক নাজমুলরা এসব তালিকা তৈরী করে মন্ত্রীর সুপারিশ নিয়ে আমাদের দিয়েছে, আমারা শুধু এ তালিকা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের অনুমতিক্রমে তাদের নির্দেশে বিতরণ করেছি’। অনিয়ম ও সাধারণের অভিযোগের বিষয়ে তিনি আরো জানান, ‘যেখানে যাকাতের টাকার জন্য মন্ত্রী সুপারিশ করে, সেখানে আমরা কি নিয়ম পালন করব ? খোদার কসম, আমি এ দূনীর্তির বিষয়ে বুঝতে পেরেছিলাম, কিন্তু সত্যি কি ভাই, আমি ভয়ে তাদের কিছু বলতে পারিনি। এবারের মত ক্ষমা করে দিন, আগামীতে আর হবে না। এটা নিয়ে লেখালেখি কইরেন না, আমাদের ক্ষতি হবে, পারলে মন্ত্রীর কাছে আওয়ামীলীগ নেতাদের বিচার দেন।’

 এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কমিশনার হেলাল উদ্দিন জানান, ‘আমরা রাঙ্গামাটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কোন কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত নই। ফাউন্ডেশনের কর্মকান্ডে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের সম্পৃক্ততা থাকার কথা থাকলেও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। আর আমার ওয়ার্ডের ঠিকানায় যে নামের তালিকা এর মধ্যে ৩/৪ জন ছাড়া বাকী কারোই অস্তিত্ব তালিকার ঠিকানায় নেই। এটি সম্পূন্ন ভুয়া তালিকা। গরীবের হক যাকাতের টাকা আত্বসাৎকারীদের চি‎হ্নত করে শাস্তি আওতায় আনা উচিত সরকারের। না হয় এতে দেশ, জাতি, দলের বদনাম হবে’- বলেও তিনি জানান ।

এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের একাউন্টস অফিসার ক্বারী সোলাইমানের জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি নিজে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘এ বিষয়ে ওলমালীগ সভাপতি ওসমান গনি সাহেব ও পৌর সাধারণ সম্পাদক মনসুর ভাইকে জিজ্ঞেস করেন, আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমরা এক টাকাও খাইনি।’

সাবেক জেলা আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী কামাল উদ্দিন নিজের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোন নাম দেয়নি, আমি ইসলামিক ফাউন্ডেশনে যায়নি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে এটি মনসুর জানে, তাছাড়া এ তালিকা তো মন্ত্রী দিয়েছে এখানে কে আবার কি বলবে।’

ওলমালীগ সভাপতি ক্বারী ওসমান গনি জানান, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা, দয়া করে আমার নামে কোন নিউজ করবেন না।’ ফাউন্ডেশনে সে যে কয়জনের নাম জমা দিয়েছে, তাদের পরিচয় ও তথ্য সম্পর্কে তিনি কোন প্রকার উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে মনসুর ভাই ও নাজমুল জানেন, আমি কিছুই জানিনা।’

আর ওলমালীগ সাধারণ সম্পাদক মৌলভী নাজমুল হক জানান, ‘আমি যে তালিকা দিয়েছি তা অনুসরন করেনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলবনা, আমার সভাপতি মৌলানা ওসমান গনি সাহেবরা ভাল জানেন।’

পৌর সাধারণ সম্পাদক মনসুর আলী সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রির নির্দেশে ও সুপারিশে আমি এসব নামের তালিকা জমা দিয়েছি, চেক নিয়েছি। জবাব দিলে মন্ত্রীকে দেব। কি হয়েছে মানুষকে দেয় নাই, আমার যাকে ইচ্ছা তাকে দেব। আমার বিরুদ্ধে লিখে কিছুই করতে পারবেন না’- বলে হুংকার দেন প্রতিবেদকে।   

 এদিকে এ বিষয়ে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকগন ও আওয়ামীলীগ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কিছুই জানে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।  আওয়ামীলীগ নেতারা যাকাতের টাকা আত্বসাৎ করেছে এ অপবাদের তীব্র প্রতিবাদ করে  ২নং ওয়ার্ড সভাপতি মোঃ কামাল উদ্দিন জানান, ‘মন্ত্রীর সুপারিশ, এটি একটি দীপংকর মলমের মার্কেটিং প্রচারণা, মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে পৌর সাধারণ সম্পাদক মনসুর আলী  এ সাড়ে ৪ বছরে এ ব্যাক্তির বিভিন্ন অপকর্মের জন্য আওয়ামী লীগকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে।’

যাকাতের টাকা আত্বসাতের বিষয়ে পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ সোলাইমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। আমার পৌর ওয়ার্ডের সভাপতি,সাধারণ সম্পাদক সহ পৌর এলাকার অন্যান সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ যাকাতের টাকার বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করে আসছে কয়েকদিন ধরে। আমি তাদের এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারছি না । তবে এ যাকাতের টাকা মন্ত্রীর নির্দেশিত তালিকা অনুসরনে প্রদান করা হয়েছে বলে যেটি রটানো হচ্ছে এটি সর্বোতভাবে মিথ্যে। কিছু নেতা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে, মন্ত্রীর ইমেজের চাদরে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে চায় সব সময়। আমাদের নেতা জনগনের, তিনি কখনও যাকাতের টাকার বিতরণ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দিবে এটি এ জেলার কোন সাধারণ মানুষই বিশ্বাস করবে না। এসব বর্নচোর নেতারাই মন্ত্রীর আশ-পাশে থেকে মন্ত্রীকে বিভ্রান্ত করে আসছে দীর্ঘ বছর ধরে। ভবিষৎ এ নেতারাই আওয়ামীলীগের নৌকায় ভোটে ভোটে ভরে দেবে। এ বিষয়ে আমাদের কোন মন্তব্য নেই ‘

এবিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী মুছা মাতব্বর বলেন,  ‘দলের পক্ষ থেকে যাকাতের টাকার জন্য কোন তালিকা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা ছিলনা। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ২২জুলাই ফোনে জানান, ২৯জুলাই একটি চেক বিতরণ অনুষ্ঠান আছে । এতে জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রধান অতিথি, আমাকে বিশেষ অতিথি রাখা হয়েছে। তখনই বিষয়টি আমি জানি। ঐ দিন অনুষ্টান স্থলে গিয়ে দেখি, এলাকার কিছু লোক আমাকে পেয়ে যাকাতের তালিকা সম্পর্কে বিভিন্ন অভিযোগ-অনুযোগ করছে। তখন আমি বিষয়টি সম্পর্কে ডিডি সাহেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে জানান, যাদের এ যাকাতের টাকা দেওয়া হচ্ছে তাদের তালিকা প্রনয়নের সকল প্রক্রিয়া  আগে শেষ করা হয়েছে। এতে মন্ত্রী মহোদয়ের সুপারিশ রয়েছে। আর তালিকা পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মনসুর, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী কামাল, ওলমালীগ সভাপতি ক্বারী ওসমান গনি, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হকরা দিয়েছে। এটি ৩/৪মাস আগে জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে সকল প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। যাদের দেওয়া হচ্ছে তাদের স্ব-শরীরে উপস্থিতির মাধ্যমে ছবি তুলে যেন এ চেক বিতরণ করে কর্তৃপক্ষকে দৃষ্ট্রি আকর্ষণ করা হয়নি। পরে তিনি আমাকে যদি কোন লোক থাকে তাহলে ১০/১২ জনের একটি নাম দিতে প্রস্তাব দেন।’

মন্ত্রীর সুপারিশ বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, এটি পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীকে ব্ল্যাক মেইলিং করা হয়েছে। তিনি একজন অতি ব্যস্ত মানুষ, যাকাত বিষয়ে নাক গলানোর অবকাশ কই তার। এটি বর্তমানে টক অভ দ্যা টাউন হয়েছে গত কয়দিন ধরে। এর সাথে আওয়ামীলীগের কোন সর্ম্পক্ততা নেই। কিছু দুষ্ট লোককের হীনমানসিকতার এহেন জঘন্য কর্মকান্ডের দায়ভার দল কেন নেবে। এদের এসব জঘন্য কর্মকান্ড দলের ইমেজ সংকট সৃষ্টি করছে অব্যাহতভাবে। যদি কোন অনিয়ম হয়,তার জন্য সর্বাগ্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্তাব্যাক্তিরাই দায়ী। সরকারী নির্দেশনা তারা কেন যথাযথ ভাবে অনুসরন  করে দায়িত্ব পালন করেনি। এসব দুস্কৃতিকারীদের অবশ্য বিচার হওয়া উচিত ও এদের সামাজিকভাবে বয়কট করা উচিত আমাদের সকলের। প্রমানিত হলে আমরা অবশ্যই এদের বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন