parbattanews

ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক কোটার শূন্য পদ মেধা তালিকা থেকে পুরণ করার প্রস্তাব মন্ত্রীসভায় অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার:

৩৪ ও ৩৫তম বিসিএসে কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে শূন্যপদে কোটা শিথিলের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধা, নারী কিংবা ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক কোটায় কাউকে না পাওয়া গেলে মেধা তালিকা থেকে শূন্যস্থান পূরণ করা হবে।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, নিয়োগ হয়ে যাওয়া ৩৪তম বিসিএসে কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে কোটার বিপরীতে ৬৭২টি শূন্যপদ রয়েছে। এই পদগুলো ৩৫তম বিসিএসের মেধা তালিকা থেকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পূরণ করা হবে। অন্যদিকে লিখিত পরীক্ষা হয়ে যাওয়া ৩৫তম বিসিএসে মোট ১ হাজার ৮০৩টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এই বিসিএসেও কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে কোটার বিপরীতে যোগ্য লোক না পাওয়া গেলে সেগুলোও এই বিসিএসের মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মুক্তিযোদ্ধা, নারী, নৃতাত্ত্বিক ইত্যাদি কোটার বিপরীতে যোগ্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না। এই কারণে পদ শূন্য থেকে যাচ্ছে। এতে সংকট তৈরি হয়েছে। এ সব পদ পূরণে মন্ত্রিসভা থেকে অনুমোদন নেওয়া হলো।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, সরকার সংরক্ষিত কোটা পূরণে বেশ আন্তরিক; কিন্তু সংরক্ষিত কোটায় জনবল না পাওয়া গেলে তা পূরণে বিকল্প ব্যবস্থা থাকা উচিত। কারণ শূন্য পদের বিপরীতে জনবল নিয়োগ দিতেই সরকারি কর্ম কমিশন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে।

যদি কাঙ্ক্ষিত জনবল নিয়োগ দেয়া সম্ভব না হয়, তাহলে ওই পদগুলো শূন্য থেকে যায়। তখন সরকারি কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। জনসাধারণ স্বাভাবিক সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।

সেক্ষেত্রে সংরক্ষিত কোটায় জনবল না পাওয়া গেলে বিকল্প পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করতে মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। যদি প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়া হয়, তাহলে শূন্য পদগুলো সহজেই পূরণ সম্ভব হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর পিএসসি থেকে কোটার শর্ত শিথিল করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ওই অনুরোধপত্রে পিএসসি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানায়, মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য পদ সংরক্ষণের বিধিনিষেধ থাকায় ৬৭২ পদে কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি।

পিএসসি আরও জানায়, ২০১০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণে বিধিনিষেধ আরোপ করে যে আদেশ জারি করা হয়েছে, তা শিথিল করতে হবে। অর্থাৎ কোটা সংরক্ষণের যে বিধিনিষেধ রয়েছে তা শিথিলের অনুরোধ জানায় পিএসসি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মহিলা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য কোটা সংরক্ষণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কোনো আদেশ-নির্দেশ জারি করা হয়নি। শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পদ সংরক্ষণের জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। এর আগে ৩৩তম বিসিএসে জনবল নিয়োগের সময় সংরক্ষিত কোটার যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় সরকারি কর্ম কমিশন কোটার শর্ত শিথিল করে শূন্য পদগুলো পূরণ করছে।

এরই মধ্যে সরকারি কর্ম কমিশন থেকে ৩৫তম বিসিএসে ১ হাজার ৮০৩টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তার মধ্যে কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারের পদের সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৮।

পিএসসির হিসাব মতে, শুধু ৩৫তম বিসিএসে যোগ্য প্রার্থীর অভাবে ৬০৬টি পদ শূন্য থাকছে। এর আগে ৩৪তম বিসিএসেও একই সমস্যার কারণে ৬৭২ পদে কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি।

Exit mobile version