parbattanews

খাগড়াছড়িতে আম্রপালি আম গাছে মুকুলের রেকর্ডে কৃষকেরা খুশি হলেও বাজারজাত ও চাঁদা নিয়ে শঙ্কায়

Khagrachari Pic 01 (4) copy

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়িতে আমের মুকুল অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিটি আম গাছ মুকুলে ভরপুর। আম গাছ গুলো যেন টুপি পড়েছে। গাছে প্রচুর মুকুল আসায় কৃষকও খুশি। তবে ভালো ফলন হলেও বাজার ব্যবস্থাপনার অভাব ও ব্যাপক চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায়ের কারণে ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে সঙ্কিত কৃষক। অপর দিকে হঠাৎ বৃষ্টিতে কৃষক ক্ষতির আশঙ্কা করলেও কৃষি কর্মকর্তারা বলছে, যত্ম নিলে আম টিকে যাবে এবং আম আকারে বড় হবে।

খাগড়াছড়ির সু-স্বাদু আম্রপালি আমের সারাদেশে সুনাম রয়েছে। এবার  প্রতিটি আম্রপালি আম গাছে মুকুল বা ফুল এসেছে ব্যাপক। যা অতীতে সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। তাই চাষীরা এখন মুকুল রক্ষাসহ গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষক। তবে সুষ্ঠ বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকার পাশাপাশি সরকারী ট্যাক্স ও পথে পথে চাঁদাবাজির কারণে ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছে চাষীরা।

খাগড়াছড়ির বড়পিলাক এলাকার আম চাষী বাবুল গাজী জানান, তিনি এ বছর ২৫ একর জমিকে আম্রপালিসহ বিভিন্ন প্রকারে আম চাষ করেছেন। আম গাছে বিগত বছরগুলোর চেয়ে মুকুল এসেছে। তবে হঠাৎ বৃষ্টির কারণে আম বাগানে বাড়তি ব্যয় বেড়ে যাবে।

জালিয়াপাড়ার আম চাষী মো. শাহাজ উদ্দিন জানান, গত বছর প্রায় ৩০লাখ টাকার আম বিক্রি করেছে। এ বছর মুকুল অনুযায়ী ফল আসলে দ্বিগুন আম বিক্রি করা যাবে।

খাগড়াছড়ি জেলা সদরে আম চাষী অনিমেষ চাকমা রিংক জানান, হঠাৎ বৃষ্টিতে আমের মকুলের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। সে সাথে ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে, এতে আমের ক্ষতি হবে না। বরং আমের আকার বড় হবে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে জনৈক আম চাষী বলেন, খাগড়াছড়িতে আম চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও বাজার ব্যবস্থাপনা অভাব ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপক চাঁদাবাজি রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায়ের কারণে বাইরে ব্যবসায়ীরা না আসার কারণে কৃষকের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না।

খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম জানান, আম ও লিচু চাষীরা যাতে সুফল পায় এ জন্যে তারা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে কৃষক প্রশিক্ষণ করে নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তার মতে, খাগড়াছড়ি জেলায় চলতি বছরে প্রায় ২হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে আম্রপালি আমের পাশাপাশি রাংগুয়া, হীম সাগর, রত্না, মল্লিকা, গোপালভোগ যা গত বছরের চেয়ে প্রায় এক হাজার হেক্টর বেশি। সে সাথে আম্রপালি আম চাষি গত বছরের চেয়ে ৫০টি পরিবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫শ পরিবারে। মুকুল অনুযায়ী যদি ফল টিকে যায়, তাহলে প্রতি কেজি আম ৫০টাকা করে বিক্রি করলেও কৃষক প্রায় দেড়শ কোটি টাকার আম্রপালি আম বিক্রি করতে পারবে।

খাগড়াছড়িতে উৎপাদিত আম্রপালি আম বদলে দিতে পারে দেশের অর্থনৈতিক চিত্র। তবে প্রয়োজন সুষ্ঠ বাজার ব্যবস্থাপনা ও ব্যাপক চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত চাঁদাবাজি বন্ধ।

Exit mobile version