খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ‘র বিরুদ্ধে ৭ থানায় ১৬ মামলা, আসামী অর্ধসহস্রাধিক

1457086_534387513322207_204068688_n

স্টাফ রিপোর্টার, পার্বত্যনিউজ :

গত ১১ নভেম্বর সোমবার খাগড়াছড়িতে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা‘র সমাবেশে যোগদান করতে আসার পথে সাধারন জনগণ ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বাঁধা প্রদান, গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, গুলিবর্ষণ, ককটেল বিষ্ফোরণ, সেতুর পাটাতন খুলে ফেলা, গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে অবরোধ সৃষ্টি, হুমকি-ধমকি ও রাষ্ট্রীয় কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে খাগড়াছড়িতে চুক্তিবিরোধী ইউপিডিএফের সশস্ত্র পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ১৬ মামলা দায়ের করেছে পুলিশ ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা। জেলার ৭টি থানায় দায়ের করা এসব মামলায় অর্ধ সহস্রাধিক ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে।

এরমধ্যে খাগড়াছড়ি সদর থানায় ৫টি, মহালছড়ি থানায় ১টি, দীঘিনালা থানায় ৪টি, মাটিরাঙ্গা থানায় ১টি, গুইমারায় ২টি, পানছড়ি থানায় ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে। জেলার লক্ষীছড়ি থানায় ১টি মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানা গেছে। এদিকে অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতারে প্রচেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মো: মিজানুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশের দিন গাছ কেটে সড়ক অবরোধ, গাড়ী ভাঙচুর, হুমকি-ধমকি, বাধা প্রদান, ব্রীজের পাটাতন খুলে ফেলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে স্থানীয় ইউপিডিএফের সশস্ত্র পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে ৫টি মামলা দায়ের করেছে। মামলাগুলোতে ৫০ থেকে ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০/২০০ জনকে অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

১০/১৫ জন ইউপিডিএফের স্থানীয় নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরো ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে জেলার মহালছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান মহালছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ সেমায়ুন কবির।

দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে যোগ না দিতে ভীতি প্রদর্শন, হামলা, সরকারী কাজে বাধাদানের অভিযোগ এনে দীঘিনালা থানায় ৪টি মামলা দায়ের করেছে। এতে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৪০/৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা দেখানো হয়েছে।

সড়ক অবরোধ, জনগণকে সমাবেশে যেতে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ এনে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১৫/২০ জনকে আসামী করে গুইমারা থানায় ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আবু ইউছুফ মিয়া। গুইমারা থানায় আরো ১টি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

সাধারন জনগণকে সমাবেশে যেতে বাঁধা প্রদান, হুমকি-ধমকি ও ভাঙচুরের অভিযোগ এনে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মাটিরাঙ্গা থানায় ১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মাইন উদ্দিন খান। এতে আরো ১০০/১৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিকে আসামী করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

যোগাযোগ করা হলে সহকারী পুলিশ সুপার (রামগড় সার্কেল) মো: শাহজাহান হোসেন পার্বত্যনিউজকে বলেন, বেশকিছু সুর্নিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। সরকার প্রধানের নির্ধারিত কর্মসূচীতে বাধা প্রদানকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহনে প্রশাসন কোন ধরনের শৈথিল্য দেখাবেনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপরাধীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য যে, ইউপিডিএফ সমর্থিত পিসিপি-কে তাদের পূর্ব নির্ধারিত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলন করার অনুমতি না দেওয়ার প্রতিবাদে ১১ নভেম্বর সোমবার খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি দেয়। অবরোধ কর্মসুচীর নামে তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী সেদিন জেলার বিভিন্ন সড়কে গাছ কেটে ও বেইলী ব্রীজের পাটাতান খুলে সড়ক যোগাযোগে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে। এদিন জেলার পানছড়ির নালকাটা এলাকায় পুলিশের রিকুইজিশন করা একটি চাঁদের গাড়ি (গাড়ি নম্বর ঢাকা ড-২৯২৯) অবরোধকারী সন্ত্রাসীরা পুড়িয়ে দেয়। রামগড়ের হাফছড়ি এলাকায় গাড়ি বহরে গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা। এছাড়াও মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি, লক্ষীছড়ি, পানছড়ি, দীঘিনালা ও মহালছড়ি উপজেলা থেকে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে যোগ দিতে আসা লোকজনের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও প্রচারিত হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইউপিডিএফ, খাগড়াছড়ি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন