parbattanews

খাগড়াছড়িতে এমএন লারমার ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে পাহাড়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত ভুলে শান্তির পথে চলার অঙ্গীকার, প্রভাতফেরী, শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্মরণ সভার মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়িতে পালিত হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর অধিকার আদায় আন্দোলনের পূরোধা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাবেক গণপরিষদ সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ওরফে এমএন লারমার ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী।

দিনটি উপলক্ষে রবিবার (১০ নভেম্বর) সকালে চেঙ্গী স্কোয়ারস্থ মানবেন্দ্র নারায়ণ লামরার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করে জনসংহতি সমিতি এমএন লারমা সমর্থিত নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি আরাধ্য পাল খীসার সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় যুব সতিমির সভাপতি জ্ঞান প্রিয় চাকমার সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তাতিন্দ্র লাল চাকমা।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় রাজণৈতিক বিষয়ক সম্পাদক বিভূ রঞ্জন চাকমা, বিশিষ্ট সমাজসেবক রবি শঙ্কর তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির খাগড়াছড়ির শাখার সাধারণ সম্পাদক সিন্দু কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি চিত্র বিকাশ চাকমা, খাগড়াছড়ি মহিলা সমিতির সভানেত্রী রত্ম তঞ্চঙ্গ্যা, যুব সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দীপু চাকমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় সদস্য দীপন চাকমা প্রমূখ।

মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জাতির পথ প্রর্দশক উল্লেখ করে প্রধান অতিথি তাতিন্দ্র লাল চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, সকল জুম্ম জাতিকে অগ্রগামী করে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন এমএন লারমা।

তাই এমএন লারমার দিয়ে যাওয়া নির্দেশনা অনুসারে রাজনীতিতে জুম্ম জাতির স্বার্থ সংরক্ষণ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত ভুলে শান্তির পথে হাঁঠতে সকলকে আন্তরিক হতে হবে।

এমএন লারমা পাহাড়ে অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব উল্লেখ করে তিনি সকল সম্প্রদায়ের জীবন নিয়ে ভাবতেন মন্তব্য করে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি জুম্ম জাতিকে আরো আন্তরিক হওয়ার আহবান জানান তিনি। এতে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক সভাপতি শ্যামল কান্তি চাকমাসহ অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা অংশ নেয়।

উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালের এই দিনে খাগড়াছড়ি জেলার ভগবান টিলা এলাকায় আভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে আট সহযোদ্ধাসহ নিহত হন মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ওরফে মঞ্জু (এমএন লারমা)। সে থেকে প্রতি বছর দিনটি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা ওরফে মঞ্জু (এমএন লারমা) ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নির্বাচিত প্রথম সংসদ সদস্য। তিনি জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের সংবিধানে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবীতে জাতীয় সংসদ থেকে ওয়াক আউট করেন। এরপর থেকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭২ সালের ৭ মার্চ তাঁর নেতৃত্বে রাঙ্গামাটিতে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারী খাগড়াছড়ির ইটছড়িতে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সংগঠন ‘শান্তি বাহিনী’।যার পরিসমাপ্তি ঘটে ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে।

Exit mobile version