খাগড়াছড়িতে কলেজ ছাত্রী ইতি চাকমা হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি রনি চাকমার সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে ডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়িতে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্রী ইতি চাকমা হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি ও ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা রিপেল চাকমা ওরফে রাজু চাকমা ওরফে রনি চাকমার সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে ডিবি পুলিশ। তবে মামলার নথি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে থাকায় রিমান্ড শুনানী হয়নি।

গত শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টায় জেলা শহরের স্টেডিয়াম এলাকা থেকে নিরাপত্তাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে সে আটক হয়। ইতি চাকমা হত্যাকাণ্ড ছাড়াও রাজু চাকমা আরো ১২টি মামলার আসামি।

ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর আবদুর রকী জানান, রনি চাকমাকে গ্রেফতারের পর পূর্বে গ্রেফতারকৃত তুষার চাকমার মুখোমুখি করা হয়েছে। তুষার চাকমা রনি চাকমাকে সনাক্ত করেছে। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের কথা অস্বীকার করায় রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। কিন্তু পূর্বে গ্রেফতারকৃত তুষার চাকমার জামিন আবেদনের কারণে মামলার নথি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে থাকায় রিমান্ড শুনানী হয়নি।

চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে জেলা সদরের আরামবাগ এলাকায় দুর্বৃত্তরা খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ইতি চাকমাকে গলা কেটে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে চট্টগ্রাম বিভাগের সিআইডি’র সহযোগিতা নেয় খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ। পরে মামলাটি ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাহউদ্দিন জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর তুষার চাকমা আটক হলে ইতি চাকমা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়। ১১ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন তুষার চাকমা। এরপর থেকে অন্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান চলে। অবশেষে শনিবার(৪ নভেম্বর) রাতে প্রধান আসামি রনি চাকমাকে নিরাপত্তাবাহিনীর সহযোগিতায় শহরের স্টেডিয়াম এলাকার জনৈক জয় চাকমার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আলী আহমেদ খান জানান, তুষার চাকমার আদালতে স্বীকারোক্তি মতে, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ইতি চাকমার সাথে সহপাঠি রিপেল চাকমা ওরফে রাজু চাকমা ওরফে রনি চাকমার দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রনি  ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি  কলেজ শাখার প্রচার সম্পাদকও। কিন্তু বিভিন্ন কারণে প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় ইতি চাকমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে রনি চাকমা।

সে পরিকল্পনা মতে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে  জেলা সদরের আরামবাগ এলাকায় ভগ্নিপতির বাসায় ইতি চাকমাকে জবাই করে হত্যা করা হয়। এ সময় ভগ্নিপতি অটল চাকমা ছিল বাইরে আর বোন ছিল চাকুরির সুবাদে দীঘিনালায়। হত্যাকাণ্ডে রনি ও তুষার চাকমাসহ ৫জন অংশ নেয়।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মো. আব্দুল হান্নান জানান, ইতি চাকমা হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ প্রতিবাদ সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। মূলত ইতি হত্যাকাণ্ডকে  ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা ছিল তাদের।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন