parbattanews

গুইমারায় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ

গুইমারা প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ির গুইমারায় হিন্দু যুবক সাগর চৌধুরীর  বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার সন্ধ্যার দিকে খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলা সদরের দার্জিলিং টিলাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শ্রীমানি মাধবী রানী রায় ( পিংকী চৌধুরী) (২৫) ফেনী জেলার ফুলগাজীর নতুন মুন্সির হাটের সতেসপুর গ্রামের শ্রীযুক্ত স্বপনকুমার রায়ের কন্যা।  ঘটনার পর থেকেই গুইমারা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাগর চৌধুরী পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,  ফেসবুকে পরিচয় সূত্রে সাগর চৌধুরীর সঙ্গে পিংকী চৌধুরীর বিয়ে হয় ১০ ই ডিসেম্বর ২০১৭।  বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই দুজনের ফেসবুক ভালোবাসা পালিয়ে যায়।   নানা অজুহাতে  দুজনের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। পিংকীর উপর শারিরীক নির্যাতন চালাতেন সাগর।  এ নিয়ে একাধিকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ-বৈঠকও হয়েছে। বনিবনা না থাকায় মাস দুয়েক আগে স্থানীয় বৈঠকের মাধ্যমে পিংকিকে তার অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন স্থানীয় সমাজপতি, চেয়ারম্যান সহ স্থানীয়রা ।

পরে গত সপ্তাহ খানেক আগে কাউকে না জানিয়ে পিংকী বাবার বাড়ি থেকে স্বামী সাগরের বাড়িতে চলে আসে বলে জানা যায়।

স্বরজমিনে গিয়ে জানা যায়, শনিবার  সন্ধ্যার দিকে কথা কাটাকাটির জের ধরে পিংকীকে রান্নারত অবস্থায় বেধরক মারধর করে সাগর। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত প্রাপ্ত হয়। এক পর্যায়ে মাথার বামপাশে লাঠির আঘাত লাগলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন স্থানীয়রা মেম্বারকে খবর জানায়। খবর পেয়ে মেম্বার জনার্ধন এসে পৌছার আগেই স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সাগর সিএনজি করে মাটিরাঙ্গা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. আনিসুল হক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। রাত সোয়া ৮টার দিকে এক নারীসহ ৪/৫ জন পিংকীর মরদেহ হাসপাতালে রেখে চলে যান বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় দার্জিলিং পাড়ার সমাজপতি বাবু সমীরন পাল বলেন, মেয়েটাকে তার অভিভাবকের নিকট প্রায় দুই মাস আগে সামাজিক ভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে কিভাবে এসেছে কখন এসেছে তারা তা জানতেন না।  তার বড়ভাই বিল্লু চৌধুরী ঘটনার পর সমাজপতিকে জানান যে, সাগরের বাড়িতে একটি দূর্ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনার পর রাত  প্রায় ১০ ঘটিকার সময়ে খাগড়াছড়ি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, স্থানীয় সমাজপতি সমিরনবাবু, ইউপি সদস্য জনার্ধন, সহ পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনা স্থল সাগর চৌধুরীর বাড়িতে গিয়ে ঘটনার আলামত সংগ্রহ করেন । আলামত হিসেবে ঘটনাস্থল  রান্নাঘর ধুয়ে মূছে পরিস্কার করার পরেও বেশ কয়েক স্থানে রক্তের ফোটা লেগে ছিল বলেন জানায় পুলিশ।

গুইমারা থানা অফিসার ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম ( তদন্ত) জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখে ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে সাগরকে আটক করতে পুলিশের অভিযান চলছে।

এ বিষয়ে সাগর চৌধুরীর নিকট জানার জন্য তার মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনার সূত্রপাত পিংকীর মামার সাথে শনিবার দুপুর বেলায় মোবাইল ফোনে ঝগড়া হয় বলেও জানায়।

মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ নিহত পিংকির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছেন। পিংকির মাথার বামপাশে আঘাতে তার মত্যু হয়েছে বলে তার ধারণা । নিহতের অভিভাবকরা আসলে ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Exit mobile version