parbattanews

খাগড়াছড়িতে ডাক্তারের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু: হাসপাতাল ও ক্লিনিক ভাংচুর

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়িতে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত এক রোগীকে চিকিৎসা দিতে বিলম্ব হওয়ায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে হাসপাতাল ও একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভাংচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ পরিবহন শ্রমিক ও সাধারণ জনগণ। বুধবার রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দফায় দফায় খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতাল ও নারকেল বাগান এলাকার লাইফ কেয়ার ডায়াগনাস্টিক সেন্টারে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ পরিবহন শ্রমিকরা।

নিহত চাঁদের গাড়ী চালক রূপন দে’র বড় ভাই স্বপন দে অভিযোগ করে বলেন, বিকেল থেকে রোগী নিয়ে হাসপাতালে ছুটাছুটি করতে থাকলেও কোন চিকিৎসক এসে আমার ভাইকে চিকিৎসা দেয়নি। ঘন্টাখানেক পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ত্রিটন চাকমা এক্স-রে করতে হবে বললে আমার ভাইকে নিয়ে লাইফ কেয়ারে যায়। সেখানে খাগড়াছড়ি হাসপাতালের আরএমও ডা. নয়নময় ত্রিপুরা রোগীকে দেখেও কোন চিকিৎসা দেয়নি। সেখানে কোন চিকিৎসা না পেয়ে আমার ভাইকে নিয়ে হাসপাতালে ফিরে আসি এবং বিনা চিকিৎসায় রাত সাড়ে ৯টায় আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শাহ আলম জানান, হাসপাতালে রোগীদের নিয়ে এসে আরএমও ডা. নয়নময় ত্রিপুরাকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি একবার রিসিভ করে মিটিংয়ে আছি বলে কেটে দেন। কিন্তু তিনি তখন লাইফ কেয়ারে প্রাইভেট রোগী দেখায় ব্যস্ত ছিলেন।

খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন সংগঠনের নেতা এসএম শফি অভিযোগ করে জানান, আমার শ্রমিক ভাই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছে। ডাক্তারদের অবহেলায় শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর সুষ্ঠু বিচার না হলে শ্রমিকরা কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবে জানান তিনি।

খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. নিশিত নন্দী মজুমদার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আরএমও ডা: নয়নময় ত্রিপুরাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি হাসপাতালে আসার পূর্বে তাকে আসতে বললেও সে আসেনি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার হবে আশ্বস্ত করে তিনি জানান, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি সদর সার্কেলের এএসপি মো. রইছ উদ্দিন জানান, ডাক্তারের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর খবরে পরিবহন শ্রমিকরা হাসপাতাল ও একটি ক্লিনিকে ভাংচুর চালায়। পরে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে শ্রমিকদের শান্ত করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

এর আগে, বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে শহরের প্রবেশ মূখ চেঙ্গী ব্রিজ এলাকায় বেপোয়ার গতিতে আসা একটি ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকা চাঁদের গাড়ী ও সিএনজিকে ধাক্কায় দিলে চাঁদের গাড়ী চালক রূপম দে, সহকারী উলাচাইং মার্মা, সিএনজির যাত্রী সুমাইয়া আহত হয়। আহতদের খাগড়াছড়ি হাসপাতালে আনা হলে সাড়ে ৯টায় চাঁদের গাড়ীর চালক রূপম দে মারা যান। এখবর ছড়িয়ে পড়লে পরিবহন শ্রমিকরা উত্তোজিত হয়ে খাগড়াছড়ি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ভাংচুর করে।

Exit mobile version