খাগড়াছড়িতে দুর্যোগের টেন্ডারে ১১ কোটি টাকার কাজ ভাগাভাগি

fec-image

অনিয়ম

পার্বত্যনিউজ রিপোর্ট :

খাগড়াছড়িতে গ্রামীণ সেতু ও কালভার্ট নির্মাণে ৫ উপজেলায় প্রায় ১১ কোটি টাকার কাজ ভাগাভাগির অভিযোগ উঠেছে। জেলার মানিকছড়ি উপজেলা প্রশাসনের সদিচ্ছায় সেখানে রেকর্ড সংখ্যক ঠিকাদার দরপত্রে অংশ গ্রহণের সুযোগ পান। একইবাবে মাটিরাঙ্গাতেও উম্মুক্তভাবেই ঠিকাদাররা অংশ নিয়েছেন দরপত্রে।

জানা গেছে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলতি অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় খাগড়াছড়ির ৮ উপজেলায় প্রায় ১৭ কোটি টাকার দরপত্র আহবান করা হয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এগুলো বাস্তবায়ন হয়ে থাকে। গেল বুধবার একযোগে সকল উপজেলায় দরপত্র সিডিউল বিক্রি ও জমাদানের শেষ দিনে খাগড়াছড়ি সদর, লক্ষীছড়ি, পানছড়ি, মহালছড়ি, দীঘিনালায় সমানসংখ্যক শিডিউল জমা পড়ে।।

খাগড়াছড়ি সদরসহ ৪ উপজেলায় প্রত্যেকটি কাজের বিপরীতে ৩টি করে সিডিউল জমা হয়। পানছড়িতে একটি প্রকল্পের বিপরীতে ২টি সিডিউল পড়েছে বলে জানিয়েছেন পানছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। দীঘিনালা উপজেলা শক্তিশালী ঠিকাদারী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে সেখানে প্রতিটি প্রকল্পে জমা পড়ে ২টি করে সিডিউল।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ৮টি প্রকল্পের বিপরীতে সিডিউল জমা পড়েছে ৩টি করে মোট ২৪। পানছড়িতে ৭টি প্রকল্পের বিপরীতে ২০টি সিডিউল জমা পড়ে। লক্ষীছড়িতে ৭টি প্রকল্পের বিপরীতে ২৯টি সিডিউল বিক্রি হলেও শেষতক জমা করা হয় ২১টি সিডিউল। মহালছড়িতে ৪২টি সিডিউল বিক্রি হলেও বুধবার সিডিউল জমা হয়েছে ২৭টি। এদিকে জেলার দীঘিনালায় ৮ প্রকল্পের বিপরীতে মাত্র ১৬টি সিডিউল জমা দেয়ার কথা জানিয়েছেন দীঘিনালা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: মোশারফ হোসেন।

সাধারণ ঠিকাদাররা এবিষয়ে মুখ খুলতে রাজি না হলেও ৩টি হারে সিডিউল জমার বিষয়টি আশ্চর্য্য হওয়ার মতো কোন ঘটনা নয় এমন প্রশ্ন তুলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার। তারা বলছেন, কেউ সিডিউল না কিনলে জমাদানের প্রশ্নই উঠেনা। নিজেদের নাম ও পরিচয় গোপন রাখার শর্তে শাসকদলের অনেক ঠিকাদার বিষয়টিকে নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

‘কোন ধরনের বাধা ছাড়াই সিডিউল বিক্রি হয়েছে উল্লেখ করে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আশেকুর রহমান বলেন, কাউকে সিডিউল জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে তার জানা নেই। দরপত্র বিক্রি বা জমা এতো কম এ প্রশ্নের জবাবে দীঘিনালা উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার হাতে নেই। তবে সিডিউল বিক্রি ও জমা সবই উন্মুক্ত ছিল।

এদিকে মানিকছড়ি উপজেলায় ২ কোটি ৯ লাখ টাকার কাজের বিপরীতে ২৯৬টি শিডিউল বিক্রি হয়। সিডিউল জমা দেয়ার শেষ দিনে সব কটি সিডিউল জমা করেন ঠিকাদাররা। সেখানে সিডিউল বিক্রি থেকে সরকারের আয় হয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। অপরদিকে জেলার মাটিরাঙ্গায় উপজেলায় সিডিউল বিক্রি থেকে সরকারী আয় হয়েছে ৭৭ হাজার টাকা। অন্যদিতে খাগড়াছড়ি সদরসহ অন্য পাঁচ উপজেলা থেকে সিডিউল বিক্রি থেকে সরকারী আয় হয়েছে ১লাখ ৮হাজার টাকা।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মানিকছড়িতে যেখানে প্রায় ৩শ’ সিডিউল বিক্রি হলো, সেখানে অন্যান্য উপজেলায় নগণ্য সংখ্যক সিডিউল বিক্রির খবরটি দু:খজনক উল্লেখ করে বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন