parbattanews

খাগড়াছড়িতে নিহত চিরঞ্জয় ও তার ছেলে কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরার পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন 

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়ির সদর উপজেলায় ব্যবসায়ী চিরঞ্জয় ত্রিপুরা ও তার ছেলে কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা এবং নারীদের গণধর্ষণের মামলার মূল আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ এখনো তাদের গ্রেফতার করেনি। আসামীরা প্রতিনিয়ত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। অন্যথায় পরিবারের সকলকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। ফলে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বেচে যাওয়া পরিবারের সদস্যরা।

খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে শনিবার সকালে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন চিরঞ্জয় ও কর্ণ জ্যোতি ক্রিপুরার পরিবারের সদস্যরা।

তারা জীবনের নিরাপত্তা চান প্রশাসনের কাছে। তবে খাগড়াছড়ি পুলিশ বলেছে, মামলার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত চিরঞ্জয় ত্রিপুরার ছেলে নীহার রঞ্জন ত্রিপুরা।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন নিহত চিরঞ্জয় ত্রিপুরার স্ত্রী ভবেলক্ষ্মী ত্রিপুরা, পুত্রবধূ বিজলী ত্রিপুরা, ছেলে উমেশ ত্রিপুরা, মেয়ে রিনিকা ত্রিপুরা ও নাতি যুব রাজ ত্রিপুরা।

সাংবাদিক সম্মেলনে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, হত্যাকারীরা প্রভাবশালী ও একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। একারণে আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেনা। আসামীরা এখন প্রতিনিয়ত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। অন্যথায় পরিবারের সকল সদস্যকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ও দেখাচ্ছে। ফলে প্রাণ ভয়ে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

অপর দিকে, খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মো. আব্দুল হান্নান জানান, মামলার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ইতিমধ্যে ৯ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৪ আসামী নিজেদের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দ্বি দিয়েছে। অন্য আসামীদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১১ মে শবে বরাতের রাত ৮ টায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের থলিপাড়া বাসিন্দা চিরঞ্জয় ত্রিপুরা ও কর্ণ জ্যোতি ক্রিপুরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাতের খাবার খাচ্ছিছিলেন। এসময় স্থানীয়  ইউপি সদস্য কালিবন্ধু ত্রিপুরার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী চিরঞ্জয় ত্রিপুরা ও কর্ণ জ্যোতি ক্রিপুরা বাড়ীতে হামলা চালায়।

সন্ত্রাসীরা চিরঞ্জয় ত্রিপুরা ও তার পুত্র কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরাকে প্রথমে গুলি করে পরে কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় সন্ত্রাসীরা নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতনসহ ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ চাঞ্চল্যকর ঘটনায় নিহত চিরঞ্জয় ত্রিপুরার বড় ছেলে নীহার রঞ্জন ত্রিপুরা খাগড়াছড়ি সদর থানায় ৬৪ জনকে আসামী করে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা দায়ের করে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, একই বছরের ৭ মে দুপুরে খাগড়াছড়ি শহরে তার পিতা চিরঞ্জয় ত্রিপুরার উপর  সন্ত্রাসীরা চাঁদার জন্য হামলা চালিয়ে আহত করে। হামলায় আহত হয়ে তার পিতা খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।

সুস্থ্য হয়ে ১১ মে খাগড়াছড়ি আমলী আদালতে মামলা করেন চিরঞ্জয় ত্রিপুরা। বিকালে গ্রামের বাড়ীতে ফিরলে ওইদিন রাতে সন্ত্রাসীরা তাদের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে তার পিতা ও বড় ভাইকে গুলি করে হত্যা করে এবং তার ভাবীর উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।

চিরঞ্জয় ত্রিপুরা ও তার পুত্র কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরাকে হত্যাকারীরা অচিরে গ্রেফতার হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শান্তি হবে এপ্রত্যাশা তার পরিবারের।

Exit mobile version