parbattanews

খাগড়াছড়িতে পাস করলো মায়ের লাশ রেখে পরীক্ষায় অংশ নেয়া সুমাইয়া

মায়ের লাশ রেখে পরীক্ষায় অংশ নেয়া খাগড়াছড়ি পানছড়ি উপজেলার সুমাইয়া আক্তার এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে। তার প্রাপ্ত ফল জিপিএ-৪.০৬।

সুমাইয়া আক্তার পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। সুমাইয়া আক্তার তার এই ফলাফল পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনচারুল করিমকে উৎসর্গ করেছে।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর সুমাইয়া আক্তারের ছিল বাংলা ২য় পত্রের পরীক্ষা। সকাল ১১টায় পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ভাগ্যের নির্দয় পরিহাস সকাল ৯টার দিকে খবর আসে ক্যান্সার আক্রান্ত সুমাইয়ার মা ফাতেমা বেগম চট্টগ্রাম মেডিকেলে মারা গেছেন। মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। তারপর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে স্যালাইন ও ওষুধ দেন।

খবর পেয়ে পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনসারুল করিম সেখানে ছুটে যান হাসপাতালে। তার পাশে গিয়ে সাহস যোগানোর পাশাপাশি পরীক্ষা শুরুর মিনিট দুয়েক আগে নিজেই চালকের আসনে বসে কেন্দ্র্রে নিয়ে এসে যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেন। এ সময় সুমাইয়া হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় পরীক্ষা দেন। ওসি আনচারুল করিমের এই মহানুভবতা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।

অবশেষে সোমবার (২৮ নভেম্বর) এসএসসির ফল প্রকাশের পর জানা যায়, সুমাইয়া পাশ করেছে। তার প্রাপ্ত ফল জিপিএ ৪.০৬। ফলাফলে খুশি সুমাইয়া আক্তার। তবে মা বেঁচে থাকলে ফলাফলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন বলে জানান সুমাইয়া আক্তার।

তার এই ফলাফল পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনচারুল করিমকে উৎসর্গ করবে বলে জানিয়ে সুমাইয়া বলেন, তিনি সহযোগিতা না করলে হয়তো পরীক্ষা দেওয়া হতো না।

মেয়ের ফলাফলে খুব খুশি সুমাইয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম। তিনিও মেয়ের এই ফলাফলে ওসির প্রতি কৃতজ্ঞতার কথা বার বার তুলে ধরেন।

পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনচারুল করিম বলেন, আমি সত্যিই আনন্দিত। অনুভূতি প্রকাশ করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।

Exit mobile version