খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধদের মাসব্যাপী দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান শুরু

fec-image

খাগড়াছড়িতে বর্ণিল আয়োজনে পালিত হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা। এ উপলক্ষে ৮৪ হাজার প্রদীপ প্রজ্জলন, নদীতে ময়ূরপঙ্খী’র প্রতিকৃতি (কল্পমন্দির) ভাসানো ও ফানুসবাতি উড়ানো হয়েছে। এখন থেকে মাসব্যাপী দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হবে। কঠিন চীবর দান বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের আষাঢ়ী পূর্ণিমা প্রবারণা পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাসের পর এ প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করা হয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা সাধনা লাভের জন্য এই তিন মাস আত্মশুদ্ধি ও মনের পবিত্রতার জন্য ধ্যান, সাধনা, ভাবনা, নীতি অনুশীলন করেন। এই তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুরা নিজের বৌদ্ধ বিহারের বাইরে অন্যকোন বৌদ্ধ বিহারেও রাত্রী যাপন করেন না।

দিনটি উপলক্ষে রোববার ( ৯ অক্টোবর) দিনব্যাপী ছিল নানা অনুষ্ঠানমালা। সকাল থেকে বিভিন্ন বয়সী নর-নারীরা জাতি -দেশ তথা সকল প্রাণীর হিত সুখ ও মঙ্গল কামনায় বৌদ্ধ পঞ্চশীল গ্রহণের পর বুদ্ধের উদ্দেশ্যে ফুল পূজা, বুদ্ধ পূজা, বুদ্ধমূর্তি দান, অষ্টপরিস্কার দান, সংঘ দান ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিণ্ড দানসহ নানাবিধ দান করেন। এছাড়াও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কাছ থেকে স্বধর্ম শ্রবণ করেন। পরে বিকালে ধর্মপুর আর্য বন বিহারে ৮৪ হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও চুলামনি ধাতু জাদির উদ্দেশ্যে ফানুস উড়ানো হয়। এখন থেকে চলবে মাসব্যাপী দানোত্তম কঠিন চীবর দান।

জেলা শহরের অন্যতম বিহার ” য়ংড বৌদ্ধ”বিহারের অধ্যক্ষ জানান, আমরা আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথি থেকে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত টানা তিনমাস বর্ষাবাসের পরে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করি। এইদিনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিহারে মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করতে আসে।আজকে (প্রবারণা পূর্ণিমা)’র পর থেকে টানা একমাস কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হবে, বিভিন্ন বিহারে।দীর্ঘ তিন মাস বর্ষাবাসের পরে আমরা এই মাসব্যাপী ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে থাকি।

য়ংড বৌদ্ধ বিহারের প্রতিনিধিরা জানান, দিনব্যাপী সকল বয়সী শত শত নারী-পুরুষ ও তরুণ-তরুণীরা বিহারে বিহারে নতুন সাজে, নতুন পোশাক পরে প্রার্থনা করতে জড়ো হয়।এসময় তাদের মাঝে আনন্দের ছোঁয়া দেখা যায়। বিকালের দিকে জেলা শহরে চেঙ্গী নদীতে ময়ূরপঙ্খী, জলপ্রদীপ /কল্প মন্দির মোমবাতি জ্বালিয়ে ভাসানো হয়। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত প্রত্যেক বিহারে জগতের সুখ ও শান্তির কামনায় চুলামণি (ফানুস বাতি) উড়ানো হয়। শূন্য আকাশে চুলামণি (ফানুস বাতি) তাবতিংশ স্বর্গের উদ্দেশ্যে শান্তির প্রতীক হিসেবে উড়ানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কঠিন চীবর দান, খাগড়াছড়ি, বৌদ্ধ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন