খাগড়াছড়িতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে জুয়ার আসর : নীরব প্রশাসন

1385135047_9____sakil__9

জেলা প্রতিনিধি,  খাগড়াছড়ি :

খাগড়াছড়িতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে জুয়ার আসর। স্থানীয় প্রশাসন নীরব থাকায় জুয়ার কারণে বাড়ছে পারিবারিক কলহ ও যুব সমাজের  অবক্ষয়। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে মাসিক মাসওয়ারা দিয়ে এসব জুয়ার আসর চলছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে। এ জুয়ার আসর সামাজিক ক্লাব ছেঁয়ে আবাসিক এলাকাগুলোও রীতিমত দখল করেছে। যারা জুয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক বিচার আচার করে তারাও রীতিমত এসব জুয়ার আসরে সময় কাটাচ্ছে। তবে ভিন্ন কায়দায়। এক এলাকার লোক অন্য এলাকায় গিয়ে জুয়ার আসরে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে বলে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক জুয়ারী জানান। অবিলম্বে এসব জুয়ার আসর চিহ্নিত করে বন্ধ করা না গেলে সামাজিক অবক্ষয় রোধ বন্ধ করা যেভাবে কঠিন হয়ে পড়বে তেমনি পারিবারিক কলহ বিবেদ সমাজকে কলুষিত করবে বলে মনে করেছেন সুশীল সমাজ ।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, খাগড়াছড়ি জেলা সদরের একাধিক স্থানে অনবরত চলছে জুয়ার বোর্ড। এ বোর্ড থেকে কেউ হারিয়ে নিরাশ হওয়ার চিত্র কেউবা কিছু পেয়ে হাস্যজ্জ্বল হয়ে বের হওয়ারও ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। জেলা সদরের শান্তি নগর রোডস্থ জনৈক কালাম মিস্ত্রির বাড়িতে ব্যাচেলর ভাড়া দেয়া হয়েছে। এখানে ৩টি টেবিলে চলে অনবরত জুয়ার আসর। এ আসরটি নিয়ন্ত্রণ করছে জনৈক আনিস। আবাসিক এলাকায় এ ধরনের জুয়ার আসর চলমান থাকায় প্রতিনিয়ত স্থানীয় যুবকের সাথে যোগ দিচ্ছে অন্য এলাকার যুবকরাও। হুমকির মুখে পড়ছে যুব সমাজ, প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে স্থানীয় প্রশাসনের কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা সদরের একাধিক স্থানে জুয়ার আসর চলে। শান্তি নগরে আনিসের নেতৃত্বে, মহাজন পাড়া সাবেক কাউন্সিলর কান্তামনি চাকমার নেতৃত্বে বসে জুয়ার আসর। যা পাজেপ সদস্য বীর কিশোর চাকমা’র বাড়ীর সামনে একটি ক্লাবে। দিনের বেলায় ঢিলেঢালা ভাবে এ জুয়ার আসর চললেও রাতের বেলায় দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। জুয়ারীরা গভীর রাতেও এ আসর থেকে বের হয়ে বাড়ীর ফেরার দৃশ্য চোখে পড়ে। এছাড়াও পানখাইয়া পাড়া নাচনেওয়ালীর নেতৃত্বে জুয়ার আসর, শহীদ কাদের সড়কস্থ রফিক স’মিল সন্নিকটে জুয়ার আসর, গঞ্জপাড়া, কলেজ গেইট, শালবন, সবুজবাগসহ তেঁতুল তলা ও খাগড়াছড়ি অবসর ভবন সংলগ্ন ভাঙারীর দোকনে চলে জুয়া খেলার ধারাবাহিক চিত্র। এসব জুয়ার আসরে খেলোয়ার পরিবর্তন হলেও জুয়ার বোর্ডটিতে থাকে উপচে পড়া  ভীড়। আবাসিক এলাকা ছাড়াও জেলা সদরের বিভিন্ন ক্লাবে জুয়া খেলা চলমান রয়েছে। অনেকেই মন্তব্য করেছেন এসব ক্লাবগুলো লাইসেন্স করা। তাই লাইসেন্স করা ক্লাবগুলোতে জুয়া খেলা বৈধ  বলে অনেকেই  মন্তব্য করেন। খাগড়াছড়ি ঠিকাদার কল্যাণ সমিতিতে টেন্ডার ড্রপিং এর কাজ থাকলেও অধিকাংশ সময় জুয়ার আসর ও  ফ্রেন্ডস ক্যান্টিন ব্যস্ত থাকে ভিআইপি জুয়ার আসর নিয়ে।

জেলা সদরের আবাসিক এলাকায় জুয়ার আসর নিয়ে স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: শাহ আলমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আমি অনেকবার চেষ্ঠা করেছি শান্তি নগর এলাকার জুয়ার আসর বন্ধ করতে। কিন্তু কোন ফলপশ্রু হয়নি। তবে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা পাওয়া গেলে এসব জুয়ার আসর বন্ধ করা সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি সদর থানার  ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  মো: মিজানুর রহমান জানান, জুয়ার আসর বন্ধ করতে আমরা  বদ্ধপরিকর। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা এ্যাকশানে যাব।

শান্তি  নগরস্থ জুয়ার বৈঠক খানা ঘরের মালিক জনৈক আবুল কালাম ও তার  স্ত্রী এ প্রতিনিধিকে  জানান, আনিসের সাথে আমাদের চলতি মাস পর্যন্ত ঘর ভাড়া চুক্তি রয়েছে। ৩১ জানুয়ারীতে ঘরভাড়া চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে তাকে আর ঘর ভাড়া দেওয়া হবে না। তবে তিনি মাসিক ৬হাজার টাকা করে ভাড়া পান বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন