খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলাধীন ৩নং কেয়াংঘাট ইউনিয়নস্থ কেয়াংঘাট গুচ্ছগ্রামে ময়না(১৪) নামের এক যুবতী মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পর সন্দেহজনকভাবে তার স্বামী রবিউল(২২) কে আটক করে পুলিশ। জানা যায়, এই রবিউল বহিস্কৃত কেয়াংঘাট ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতির দ্বায়িত্বে ছিল। পরে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়।
শুক্রবার সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীসূত্রে জানা যায়, কেয়াংঘাট গুচ্ছগ্রামের গরীব শ্রমজীবী ময়নাল হকের মেয়ে এবং বর্তমানে পার্শ্ববর্তী লেমুছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ময়নার সাথে একই গ্রামের প্রাক্তন মেম্বার তোতা মিয়ার ছেলে বহিস্কৃত কেয়াংঘাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউলের প্রেম হয়। এই গোপন প্রেমের ঘটনা এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে এলাকার কতিপয় গণ্যমান্যের সিদ্ধান্ত মোতাবেক উভয়ের বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে উভয়ের পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি কাবিন (বিয়ে রেজিষ্ট্রি) নামা সম্পাদন হয় । তবে এটি এখনো অনিবন্ধিত বলে স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে জানা যায় ।
ঘটনাস্থলে গিয়ে (সকাল ১০টায়) দেখা যায়, টিলা বা পাহাড়ের ধারে ধানি জমির পাশের একটি ছোট্ট কুয়োর স্বচ্ছ পানির মধ্যে নিহতের লাশ (মৃতদেহ) চিৎ হয়ে সামান্য ডুবো অবস্থায় ভাসছে এসময় লাশের নাকে মুখে জমাট বাঁধা রক্ত ও গলায় একটা লাল রঙের ওড়না পেঁচানো রয়েছে দেখা যায়।
খবর পেয়ে একদল পুলিশ ঘটনাস্থর গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরত হাল ও জব্দ তালিকা করেন যার জিডি নং- ৯৯২। লাশ ময়না তদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এলাকার মহিলাদের অভিযোগ করতে শোনা যায়, নিহত ময়নাকে দেখে অন্তসত্ত্বা মনে হয়েছে।
এদিকে মেয়ের মৃত্যু শোকে পাগলপ্রায় নিহত ময়নার বাবা ও মায়েল কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। তাঁরা উভয়ে বিলাপ করতে করতে বলেন তাঁদের মেয়েকে ডেকে নিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। তারা আরও বলেন, রাত আনুমানিক দশ টায় রবিউল ময়নাকে ডেকে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সফি আলম ও বিএনপি নেতা শাহাজাহন মিয়া বলেন, আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধী চিহ্নিত হোক এবং প্রকৃত অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।
মহালছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেমায়ুন কবীর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, নিহত যুবতীর স্বামীকে আটক করা হয়েছে।
থানা সূত্রে সর্বশেষ জানা গেছে, নিহতের বাবা স্বামীকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ করেছেন যা মামলা হিসাবে গ্রহণ করা হরে।