parbattanews

খাগড়াছড়িতে শ্রমিকলীগ নেতা সুরুজ মিয়ার উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়ি জেলা শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহবায়ক সুরুজ মিয়ার উপর হমালার ঘটনাকে কেন্দ্র ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে খাগড়াছড়িতে। হামলাকারীদের গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির অনুসারিরা।

বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি শহরে বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে হামলার জন্য খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল আলম ও তার ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলমকে দায়ী করে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে শহরের কদমতলী এলাকা থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মনির হোসেন খান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা পরিষদ সদস্য মংশেপ্রু চৌধুরী অপু।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাহাব উদ্দিন মিয়া, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. রইছ উদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা মো. শানে আলম, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ক্যাজরী মারমা, সহ প্রচার সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য জুয়েল চাকমা, জেলা যুবলীগের সভাপতি যতন কুমার ত্রিপুরা, সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান হেলাল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার দে, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হোসেন ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি টিকু চাকমাসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

সমাবেশে মনির হোসেন খান অভিযোগ করেন, মেয়র রফিকুল আলম ও তার ছোট ভাই দিদারুল আলমের নেতৃত্বে কালা নাজিম, টোকাই ফারুক ও ফিরোজসহ কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী খাগড়াছড়ি শহরে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৭ টার দিকে জেলা শহরের উত্তর গঞ্জপাড়ায় ৮/১০ সন্ত্রাসী সুরুজ মিয়াকে এলোপাথারী কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গুরতর আহত সুরুজ মিয়াকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করে।

খাগড়াছড়ি হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নয়ন ময় ত্রিপুরা জানান, সুরুজ মিয়ার শরীরের একাধিক স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার অবস্থায় আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মংশেপ্রু চৌধুরী অপু এ হামলার জন্য মেয়র মো. রফিকুল আলমের সন্ত্রাসীদের দায়ী করে অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন।

পক্ষান্তরে জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির লোকজন আগষ্টের দলীয় কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ায় এলাকাবাসী প্রতিরোধ করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি সংগঠনটিকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মো. আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। তবে পুলিশ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

প্রসঙ্গত, গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়ে। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে গত দুই বছরে অন্তত অর্ধশতাধিক বার হামলা-পাল্টা হামলার মামলার ঘটনা ঘটে।

Exit mobile version