ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলম্যাটসহ যাবতীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম থাকা স্বত্ত্বেও 

খাগড়াছড়িতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে জরিমানার শিকার হলেন সাংবাদিক

fec-image

খাগড়াছড়িতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে জরিমানার শিকার হলেন সংবাদভিত্তিক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর এর খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি নুরুচ্ছাফা মানিক।
শুধু সাংবাদিক নয়, সম্প্রীতিকালে পরিবহনের কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলমেটসহ যাবতীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম থাকা স্বত্তেও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মোবাইল কোর্টে এসব হয়রানি করা হচ্ছে। এ সময়ে একাধিক গণমাধ্যমকর্মীর সাথে পুলিশ অসৌজন্যমূলক আচরণ ও হয়রানি করেছে এমন অভিযোগ রয়েছে।

সংবাদভিত্তিক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর এর খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি নুরুচ্ছাফা মানিক অভিযোগ করে বলেন, ‘৬ জুন (শনিবার) বিকেল ৫টার সময় বৃষ্টি পরবর্তী জলাবদ্ধতা ও নদী-ছড়ায় পানি বৃদ্ধির সংবাদ সংগ্রহের কাজে বের হয়ে জেলা সদরের আরামবাগ এলাকায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান শাকিলের নেতৃত্বাধীন মোবাইল কোর্টে পুলিশের সংকেত পেয়ে থামি। এসময় আমার ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের টাকা জমাদানের কাগজপত্র দেখাই। আমার হেলম্যাট থাকার পরও পেছনে বসা আরেক সহকর্মীর হেলম্যাট না থাকার অজুহাতে সড়ক পরিবহণ ২০১৮ এর ৯২ ধারায় অর্থদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমান আদালত। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এসময় অন্যান্য মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের শুধুমাত্র মৌখিকভাবে সতর্ক করে ছেড়ে দেয়া হয়। এসময় পরিচয় দিয়ে সংবাদ সংগ্রহের কাজে যাচ্ছি এবং আমার সহকর্মীর নিজস্ব মোটরসাইকেল না থাকায় উনার হেলমেট নাই বলার পর অসৌজন্যমূলক আচরণ করে “যা দণ্ড দেয়া হয়েছে তা পরিশোধ করতে” নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি জীতেন বড়ুয়া বলেন, সম্প্রতি সময়ে খাগড়াছড়িতে বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত হয়রানি করেছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি নুরুল আজম বলেন, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটেরর মোবাইল কোর্টে সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত সাংবাদিকদের হয়রানি ও অর্থদণ্ডের প্রতিবাদ জানায়।

খাগড়াছড়ি টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম প্রফুল্ল বলেন, সাংবাদিকরা খাগড়াছড়িকে করোনা মুক্ত রাখতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে-ঘাটে সংবাদ সংগ্রহ করছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে খাগড়াছড়ি জেলায় হাট বাজার ও গণপরিবহনে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত হচ্ছে না। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রতিনিয়ত সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ হচ্ছে। কিন্তু এদিকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের কোন নজরদারি নেই। শুধুমাত্র সাংবাদিক ও জরুরী কাজে অফিস আদালতে নিয়োজিত লোকজনকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে হয়রানি করছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী মেজিস্ট্রেটের মাধ্যমে পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালতে। এটি খুবই ন্যাক্কারজনক।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সাংবাদিকগণ আইনের উর্ধ্বে নয়। সাংবাদিকদের ছেড়ে দিলে সাধারণ মানুষের আইনের উপর আস্থা থাকবেনা। মোটরসাইকেলে দুইজন থাকলে দুজনের হেলমেট থাকতে হবে। যারা আইন মানবেন না-তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দোষের কিছু নয়। তিনি সাংবাদিকদের আইন মেনে চলার পরামর্শ দেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়িতে, জরিমানার, সাংবাদিক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন