parbattanews

খাগড়াছড়িতে ৩৫ সাংবাদিককে প্রাণ নাশের হুমকির ঘটনায় আদালতে অভিযোগ দাখিল

নিজস্ব প্রতিবেদক:

খাগড়াছড়িতে ৩৫ সাংবাদিককে প্রাণ নাশের হুমকির ঘটনায় ৯ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে খাগড়াছড়ির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ার মো. নোমানের  আদালতে দাখিল করা হলে আদালত তা গ্রহণ করেন।

অভিযুক্তরা হলো, দিদার ওরফে কসাই দিদার, দেলোয়ার, নাজিম ওরফে কালা নাজিম, আক্তার হোসেন, ফরিদ, মুসলিম, মিন্টু মিস্ত্রী, ফারুক ও উজ্জল মারমা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন ভূইয়া জানান, তিনি নিখুঁতভাবে অভিযোগটি তদন্ত করেছেন। সিএসআই মন্নী আক্তার জানান, আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে আসামীদের হাজির হওয়ার নৌটিশ দিয়েছেন। হাজির না হলে নিয়ম অনুযায়ী আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হবে।

প্রথম আলোর ফটো সাংবাদিক নীরর চৌধুরীকে মারধরে ঘটনার প্রতিবাদে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর স্থানীয় সাংবাদিকরা খাগড়াছড়ি পৌর শাপলা চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচী চলাকালে মেয়র মো. রফিকুল আলমের অনুগত হিসেবে পরিচিত মো. দিদার ওরফে কসাই দিদারের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৪৫ জন সন্ত্রাসী ‘একটি-দুটি সাংবাদিক ধর, ধরে ধরে জবাই কর, সাংবাদিকদের আস্তানা-জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি শ্লোগান দিয়ে জঙ্গী মিছিল নিয়ে মানববন্ধনস্থলে হাজির হয়।

একপর্যায়ে তারা মানববন্ধন কর্মসূচীতে ব্যবহারের জন্য সাংবাদিকদের আনা মাইক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মানববন্ধনে অংশ নেওয়া প্রত্যেক সাংবাদিককে জবাই করে হত্যা করার হুমকি দিয়ে বক্তব্য দেয় কসাই দিদার।

এ সময় অধিকাংশ সন্ত্রাসীর হাতে ছিল কিরিচ ও লাঠিসোটা। এ সময় পুলিশ শুধু নির্বিকার ছিলেন না, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো সাংবাদিকদের কর্মসূচী সংক্ষিপ্ত করার পরামর্শ দেন।

ঘটনার আকস্মিকতায় সাংবাদিকেরা তাৎক্ষনিক খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলীর সঙ্গে দেখা করে তাদের বিষয়টি জানান এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় ৩৫ সাংবাদিক জিডি করেন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে নীরব চৌধুরীও থানায় আলাদা জিডি করেন।

পুলিশ ৩৫ সাংবাদিকদের জিডি নন জিআর মামলা হিসেবে গ্রহণ করে খাগড়াছড়ির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ার মো. নোমানের আদালতে পাঠানো হলে আদালত তা অনুমোদন দিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

এ ঘটনায় সারা দেশে সাংবাদিক সমাজে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে সম্পাদকীয়ও লেখা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির আলোকচিত্র সাংবাদিক নীরব চৌধুরীকে ধরে নিয়ে পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম কর্তৃক মারধর করে।

Exit mobile version