তিন পার্বত্য জেলার আরো অনেক সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধি আন্ডারগ্রাউন্ডে

খাগড়াছড়ির ইউপিডিএফ সমর্থিত বর্তমান ও সাবেক চার উপজেলা চেয়ারম্যান আন্ডার গ্রাউন্ডে

fec-image

খাগড়াছড়ি জেলার বর্তমান ও সাবেক চার উপজেলা চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন ধরে আন্ডার গ্রাউন্ডে। এ চারজনই প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ’র) নীতি নির্ধারক ছিলেন।

এরা হলেন, খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শান্তি জীবন চাকমা, খাগড়াছড়ির সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমা, পানছড়ির উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা ও লক্ষ্ণীছড়ির উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা। তার মধ্যে সুপার জ্যোতি চাকমা অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, চঞ্চুমনি চাকমা, সুপার জ্যোতি চাকমা ও সর্বোত্তম চাকমা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় অবস্থান করছেন। অপরদিকে ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত জেলার পানছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শান্তি জীবন চাকমা। কিন্তু শপথ গ্রহণের পর দায়িত্ব গ্রহণ না করে তিনিও আত্মগোপনে চলে যান।

সুপার জ্যোতি চাকমা ২০১১ ও ২০১৪ লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চঞ্চুমনি চাকমা ২০১৪ সালে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ও সর্বোত্তম চাকমা পানছড়ি উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। অপরদিকে ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শান্তি জীবন চাকমা ইউপিডিএফ প্রসীত সমর্থন নিয়ে পানছড়ি থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনিও শপথ নেওয়ার পর চলে যান আত্মগোপনে। বর্তমানে ভাইস চেয়ারম্যান চন্দ্র দেব চাকমা পানছড়ি উপজেলা পরিষদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অভিযোগ রয়েছে, পানছড়ির বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলার সাবেক অপর তিন উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন, ইউপিপিএফ’র অন্যতম অর্থের যোগানদাতা। এরা বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধি হলেও কখনো রাষ্ট্র ও বাংলাদেশের প্রতি অনুগত ছিলেন না। বরং ছিলেন, পাহাড়ের সার্বভৌমত্ব বিরোধী সংগঠন ইউপিডিএফ’র পৃষ্ঠপোষক।
নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানায়, লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারী রাতে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে একটি আমেরিকান তৈরী ফাইভ স্টার পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও ৫ রাউন্ড গুলিসহ আটক হন। এ মামলায় তিনি দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। জামিনে বের হয়ে চলে যান আত্মগোপনে। অপরদিকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমা ও পানছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা ২০১৭ সালে আত্মগোপনে চলে যান।

একটি সূত্র জানায়, খাগড়াছড়ির পানছড়ির বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক এই তিন জনপ্রতিনিধি এখন পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে বসে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তবে সম্প্রতি সর্বোত্তম চাকমা পানছড়ি ঘুরে গেছেন বলে জানা গেছে। অপর একটি সূত্র জানায়, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমা, লক্ষ্ণীছড়ির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা ও পানছড়ির বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান শান্তি জীবন চাকমা স্ব-পরিবারের ভারতের ত্রিপুরায় থাকেন। অপর দিকে পানছড়ির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমার পরিবারও প্রায়ই সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেন। এছাড়াও প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ’র অধিকাংশ শীর্ষ নেতা এখন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পেলে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্যে অবস্থান নেন।

 

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইউপিডিএফ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন