parbattanews

খাগড়াছড়ির নেতৃবৃন্দের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার শান্তি চুক্তির আলোকে পার্বত্য অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, অবকাঠামো, মোবাইল নেটওয়ার্কসহ সকল খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। রাঙ্গামাটিতে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ভূমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বোর্ডের কার্যক্রম আরো গতিশীল ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন-২০১৪ প্রনয়ণ করা হয়েছে।

পার্বত্য অঞ্চলের যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, সেসব স্থানে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে এবং পাড়াকেন্দ্রের মাধ্যমে এ অঞ্চলের নারী ও শিশুদের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা ও শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের জন্য টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধরণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। সে ক্ষেত্রে চুক্তি স্বাক্ষরকারী অপর পক্ষকেও খোলা মনে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে পাহাড়ে অস্ত্রবাজি ও চাঁদাবাজি বন্ধ হবে। মানুষ চুক্তির সু-ফল ভোগ করতে পারবে।

খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার বলেন, বৈষম্যমূলক ও সংবিধান বিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পাহাড়ে একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর বিপরীতে চার চারটি সন্ত্রাসী বাহিনীর জন্ম দিয়েছে। চুক্তির আগে পাহাড়ের মানুষ একটি পক্ষকে চাঁদা দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারতো। এখন চারটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠিকে চাঁদা দিতে হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পাহাড়ের একটি জনগোষ্ঠিকে সুবিধা দিতে গিয়ে বৃহৎ জনগোষ্ঠিকে নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।

খাগড়াছড়ি দীঘিনালা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কাশেম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি ও উন্নয়ন অনেক এগিয়েছে। পাহাড়ি-বাঙালিরর মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস বেড়েছে। অর্থনীতি সচল হয়েছে। চুক্তির আগে এ অঞ্চলের মানুষ অনেকটা গৃহবন্দি ছিল।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন) কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নিয়ে পাহাড়বাসী হতাশ ও সন্দিহান। শাসক গোষ্ঠি চুক্তির সু-ফল ভোগ করলেও চুক্তির অপর পক্ষসহ পাহাড়বাসী বঞ্চিত হচ্ছে। চুক্তির অনেক ধারা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন অকার্যকর হয়ে আছে। জেলা পরিষদগুলো শাসক গোষ্ঠির নেতারা নিজেদের মতো চালাচ্ছেন।

ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্যামল কান্তি চাকমা বলেন, তৎকালীন সময়ে তৎকালীন পাহাড়ি নেতৃত্বের অনৈক্যের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে বাধ্য হবে।

খাগড়াছড়ি চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক সুদর্শন দত্ত বলেন, চুক্তির পর পাহাড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। অর্থনীতিতে গতি এসেছে। হানাহানি কমেছে।

Exit mobile version