parbattanews

খাগড়াছড়ির পর্যটন খাতে প্রাকৃতিক দূর্যোগের প্রভাব, হোটেল-মোটেলের আগাম বুকিং বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়ির পর্যটন খাতে এ বছর ভয়াবহ পাহাড় ধ্বস ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের প্রভাব পড়েছে। বিগত কয়েকবছর ধরে বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র খাগড়াছড়ি ও সাজেকের প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র দেখতে দেশ বিদেশের হাজারো পর্যটক খাগড়াছড়িতে আসতে আগ্রহী হলেও এবছর মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। অজানা শঙ্কার কারণ দেখিয়ে বিভিন্ন হোটেল মোটেলের অগ্রীম বুকিং বাতিল হয়েছে। এতে করে কোটি টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন বলে আশঙ্কা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

খাগড়াছড়ি হোটেল মোটেল ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সূত্রমতে, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় হোটেল মোটেল মিলিয়ে ৫০-৬০ এবং সাজেকে নিরাপত্তাবাহিনী, এনজিও ও ব্যক্তি মালিকাধীন শতাধিক হোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজ রয়েছে। সাজেকসহ খাগড়াছড়ির অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রে যাতায়াত করে এমন পরিবহনের সংখ্যা কয়েকশত। পাশাপাশি স্থানীয় ও দূরপাল্লার যানবাহন তো আছেই।

খাগড়াছড়ির একটি বেসরকারি হোটেলের ব্যবস্থাপক স্বপন দেবনাথ জানান, প্রতিবছরের মতো এবছরও ১০ রমজানের পর থেকে অগ্রীম বুকিং শুরু হয় আমাদের হোটেলে। কিন্তু পাহাড় ধ্বসের ঘটনার পর থেকে অর্ধেকের বেশি বুকিং বাতিল হয়ে গেছে। এছাড়া পুরো মাস টানা বর্ষণের কারণে আশানুরূপ পর্যটক ছিল না।

 

আরেক হোটেলের সত্ত্বাধিকারী এস অন্তত ত্রিপুরা জানান, ঈদের ৫ দিন আগ থেকে ঈদ পরবর্তী ৫দিন পর্যন্ত হোটেলের সব রুম বুক ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিনের সব রুম বাতিল হয়ে গেছে।  এবারও পর্যটকদের মনে ভয় থাকায় বিরাট অঙ্কের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি।

খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে চলাচলকারী একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসের ব্যবস্থাপক মো. বাবলু জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রাকৃতিক দূর্যোগের খবর পাওয়ার পর ঈদের দিনসহ পরবর্তী ৩দিনের প্রায় বেশ কিছু আসা যাওয়ার টিকেট বাতিল করেছেন যাত্রীরা।

খাগড়াছড়ি পর্যটর মোটেলের বানিজ্যিক কর্মকর্তা ক্যচিং মারমা জানান, এবার ঈদে কোন পর্যটক মোটেলে উঠছেন না। যারা আগাম রুম বুকিং দিয়েছিলেন, তারাও বুকিং বাতিল করেছে।

খাগড়াছড়ির পর্যটন খাতকে বিকাশিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের আন্তরিকতা কামনা করেছেন সংশ্লিষ্টরা। পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান জানান, প্রতিবারের মতো পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটক ও ঈদ উদযাপনকারীদের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুতি রয়েছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিয়মিত ফোর্সের পাশাপাশি পেট্রলিং বাড়ানো হবে এবং পুরো জেলাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে বলে জানান।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী জানান, পাহাড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যপক প্রাণহানিতে দেশের ভ্রমন প্রিয় মানুষগুলোও শোকাহত। পাশাপাশি মনে আতঙ্কেও রয়েছে। ফলে এবার খাগড়াছড়িতে পর্যটকরা আসছেন না।

তিনি বলেন, পর্যটক না আসায় খাগড়াছড়ির অর্থনীতিতে দারুন প্রভাব ফেলবে।

Exit mobile version