খাগড়াছড়ির বিভিন্ন সড়কে যানবাহনে আগুন-ভাংচুর, নিরাপত্তার দাবিতে সকল সড়কে যান চলাচল বন্ধ

Khagrachari Pic 09 copy

নিজস্ব প্রতিবেদক,খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ’র হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ৯ সদস্য আহত ও ১৯জনকে আটকের জেরে জেলার বিভিন্ন সড়কে যানবাহনে আগুন ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। নিরাপত্তার দাবিতে জেলার সকল সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের মিছিলে পুলিশের হামলায় ১০ শ্রমিক আহত হয়েছে।

বুধবার সকালে খাগড়াছড়ির স্বনির্ভর এলাকায় ইউপিডিএফ সমর্থিত হিল উইমেন্স ফেডারেশন সদস্যদের হামলায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ৯ সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় ১৯জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই জেলার বিভিন্ন সড়কে যানবাহনে আগুন, ভাংচুর ও শ্রমিকদের মারধরের ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তার দাবিতে পরিবহন শ্রমিকরা বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সকল সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।

তবে এ নিয়ে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ লাঠি চার্জ করলে অন্তত ১০শ্রমিক আহত হয় বলে দাবি করেছে পৌর কাউন্সিলর এসএম মাসুম রানা। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে মিছিলে অপ্রীতিকর ঘটনার আঙ্ককা ছিল।

খাগড়াছড়ি সিএনজি চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন জানান, দুপুর থেকে জেলার বিভিন্ন সড়কে ইউপিডিএফ কর্মীরা অন্তত ২৫-৩০টি গাড়ি অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও চালকদের মারধর করে।

৩২বিজিবি অধিনায়ক লে.কর্ণেল হাসানুজ্জামান চৌধুরী জানান, পূর্ব কোনো কর্মসূচি বিহীন হঠাৎ বেলা দশটার দিকে স্বনির্ভর বাজারে সমাবেশ করতে চেষ্টা করে ইউপিডিএফ ও হিলউইমেন্স ফেডারেশন। এ সময় পুলিশ বাঁধা দেয়। কিন্তু পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে বিজিবির কাছে সহযোগিতা চায়। বিজিবি পুলিশের সহযোগিতা করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছা মাত্র সমবেত ইউপিডিএফ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন কর্মীরা আক্রমন করে। এলোপাথারী ইটপাটকেল ও গুলতি ছুড়তে থাকে। এসময় ইটপাটকেল ও গুলতির আঘাতে তিনজন বিজিবি সহ পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়।

খাগড়াছড়ি সদর থানার এসআই আব্দুল আল মাসুদ জানান, হামলায় এসআই হায়াত ও তিনিসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। মহিলা পুলিশের তিনজনসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ১৯জনকে আটক করা হয়েছে। হামলারকারীদের আটকের অভিযান চলছে। তবে ইউডিপিএফ’র তথ্য ও প্রচার সম্পাদক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীই তাদের কর্মীদের হামলা চালিয়ে ১৯জনকে আটক করেছে। তিনি তাদের নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান।

এ দিকে ঘটনার পরপরই মানিকছড়ির পিছতলা এলাকায় কাঁঠাল বোঝাই একটি পিকআপে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন খান।

আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় জেলার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন