স্টাফ রিপোর্টার:
টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে হাজারো ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গেল দুইদিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলা সদরের মুসলিম পাড়া, গঞ্জপাড়া, শান্তিনগর, রূপনগর, বাঙ্গালকাটিসহ প্রায় ১০টি গ্রামের কয়েকশ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। শুক্রবার থেকে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে।
এদিকে জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমে যাওয়া ও প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ার কারণে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে জেলা শহরের ৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজন। এতে জেলা জুড়ে বন্যা দূর্গত মানুষের ত্রাণ ও স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন কিছুটা উদ্যোগ নিলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। এ প্রেক্ষিতে এগিয়ে এসেছে সেনাবাহিনী।
শুক্রবার জেলার বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়নের আওতাধীন বিভিন্ন জোন ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গোলাবাড়ী ইউনিয়নে ২০ আগস্ট বন্যার পানির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় উক্ত ইউনিয়নের রাজবাড়ী এলাকার আনুমানিক ৪৫টি ঘরবাড়ি পানির নীচে তলিয়ে যায়। পানিবন্দী মানুষজনকে কোন ভাবেই উদ্ধার করতে না পেরে এবং উদ্ধারকাজে সহায়তা জন্য গোলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞানরঞ্জন ত্রিপুরা তাৎক্ষনিকভাবে সেনাবাহিনীর স্মরণাপন্ন হন। বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কথা জানতে পেরে খাগড়াছড়ি জোনের সেনাসদস্যরা সঙ্গে সঙ্গে উক্ত এলাকায় গমন করে এবং পানিবন্দী গ্রামগুলোর মানুষজনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জোন কমান্ডার খাগড়াছড়ি জোন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং অন্যান্য গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তিবর্গ। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমা সার্বিক সহায়তায় সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন সেনাবাহিনী না থাকলে উদ্ধার কাজ কখনোই সম্ভব হতো না।
এদিন মহালছড়ি জোনের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মোজাম্মেলের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক মহালছড়ি গুচ্ছগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এলাকার বন্যাদূর্গত লোকদের চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে। বন্যাদূর্গতদের পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হয়। এসময় স্যালাইন, ব্যথানাশক ওষুধ, জ্বর ও ঠাণ্ডার ওষুধসহ এন্টিবায়োটিক বিনামূল্যে প্রদান করা হয়।
একইদিন জেলার দিঘীনালা উপজেলার মেরুং এলাকায় সেনাবাহিনীর দিঘীনালা জোন বন্যাদূর্গতদের মাঝে ত্রাণ তৎপরতা চালায়। এসময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা বন্যাদূর্গতদের মাঝে চাল, ডাল ও ভোজ্য তেল বিতরণ করে।
গত এক সপ্তাহের ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ি এবং এর আশে পাশের নিæাঞ্চলের এলাকাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।