parbattanews

খেয়ে না খেয়ে চাকুরি করলাম: তবুও চাকুরিচ্যুতের পাঁয়তারা করা হচ্ছে

রাঙামাটি প্রতিনিধি:

কেউ শুরু থেকে আবার কেউ ১৮ বছর আর কেউ কেউ ২০ বছর ধরে খেয়ে না খেয়ে চাকুরি করে আসছেন, তিন পার্বত্য জেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর আওতাধীন “সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প এর ‘পাহাড়ের বাতিঘর  নামে পরিচিত পাড়া কেন্দ্রে । কিন্তু তাদের চাকুরির মেয়াদ ৪০ বছর পর্যন্ত থাকলেও ২০ বছর আগে তাদেরকে চাকুরিচ্যুতের পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিন পার্বত্য জেলার পাড়াকর্মী ও মাঠ সংগঠকের নেতাকর্মীরা।

বুধবার (০১ আগস্ট) দুপুরে রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ইউনিয়নের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর আওতাধীন “সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প এর তিন পার্বত্য জেলায় কর্মরত মাঠ সংগঠক ও পাড়া কর্মীদের চাকুরি বহাল রাখার দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ অভিযোগ করেন।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, জাকো ত্রিপুরা, ইসমাইল হোসেন, রেখা চাকমা, সোনমনি চাকমা, মুকুল আক্তার, মিলি চাকামা, মিস্কি চাকমা, জয়ী চাকমা প্রমূখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীন তিন পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাড়া কেন্দ্রে নিয়োগের পর দীর্ঘ সময় এবং বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গ্রামীন সমাজের বেড়ে উঠা ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে আসছি এবং নুন্যতম সম্মানী ভাতা নিয়ে শিক্ষার প্রথম স্তরকে মজবুত করে আসছি। বোর্ড কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ সময় পড়ে সম্মানী ভাতা বর্তমানে সাড়ে তিন হাজারে উন্নিত করেছেন। অথচ বর্তমানে সম্মানী ভাতা নির্দিষ্ট অংকের থাকলেও তা নিয়মিত পাচ্ছি না বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের ২১ মার্চ বান্দরবান জেলায় মাঠ সংগঠক ও পাড়া কর্মীদের অনুষ্ঠিত সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊসৈশিং এমপি নতুন নিয়োগ বিষয়ে বলেছেন, নতুন নিয়োগে বর্তমান কর্মরতদের কোন ইন্টারভিউ নেয়া হবে না এবং দিতেও হবে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর ভাইস-চেয়ারম্যান তরুন কান্তি ঘোষ তিনিও একই কথা বলেছেন। কিন্তু এখন এসব ঘটনার সবই যেন উল্টো হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন।

তারা বলেন, বর্তমানে কর্মরত মাঠ সংগঠক এবং পাড়া কর্মীদের বাদ দিয়ে উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ “পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প” এর অধীন তিন পার্বত্য জেলায় নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন যা আমাদের বোধগম্য নয় এবং সম্পূর্ণভাবে কর্মরতদের বাদ দেয়ার একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি বোর্ডের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগে ১৮ থেকে ৫৭ বছর করা হলেও আমাদের বেলাতে কেন ৪০ বছর করা হয়েছে তাই বোর্ডের কেন এই দ্বিমত? তাই অতি শীঘ্রই এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করতে হবে। তা না হলে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গনতান্ত্রিক পন্থায় যে কোন উপায়েই আন্দোলন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি প্রদান করে পাড়াকর্মী ও মাঠ সংগঠক  নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলন শেষে তাদের চাকুরি বহাল রাখার দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নিকট একটি স্মারক লিপিও প্রদান করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি এই তিন পার্বত্য জেলায় বর্তমানে কর্মরত  পাড়াকর্মী ও মাঠ সংগঠকের সংখ্যা ৪ হাজার ৪ শত জন। তৎকালীন ১৯৮২ সালে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালে এই  প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করে তিন পার্বত্য জেলায় ‘পাহাড়ের বাতিঘর’ নামে পরিচিত পাড়া কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

 

Exit mobile version