parbattanews

খোদ প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শুনেছি বাঙালীরাই আদি বাসিন্দা- রাশেদ খান মেনন এমপি

সরকারের মেয়াদেই ভূমি কমিশন আইনের রূপরেখা

পার্বত্য নিউজ রিপোর্ট:

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আদিবাসী’ শব্দটি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের ইশতেহারে একাধিকবার শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
আদিবাসী শব্দটি নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে রাশেদ খান মেনন বলেন, শব্দটি নিয়ে যখন বিতর্ক শুরু হলো, তখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুবিভাগ যুক্তি দেখিয়েছে, এই শব্দ ব্যবহার করা হলে বাংলাদেশকে অনেক আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে হবে। দেশে তা বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করবে। অনুবিভাগকে এসব বুঝিয়েছে সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী। পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতির যৌক্তিকতা প্রমাণে এসব করা হয়েছে।

মেনন বলেন, ‘স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শুনেছি, বাঙালিরাই এ অঞ্চলের আদি বাসিন্দা। কিন্তু “আদিবাসী” ও “আদি বাসিন্দা”—এ দুটির অর্থ ভিন্ন। “আদিবাসী” শব্দের ভিন্ন মর্মার্থ রয়েছে।’

রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস ও আদিবাসীদের ভূমি অধিকার বিষয়ে একটি সেমিনারে এ আশঙ্কার কথা বলেন রাশেদ খান মেনন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসঙ্গে মেনন বলেন, সেখানকার ভূমি-সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। এটাই ওই অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করছে। তিনি জানান, এ সরকারের মেয়াদের আদিবাসীদের ভূমি অধিকার আইনের রূপরেখা বা খসড়া তৈরি করা হবে। আদিবাসীদের ভূমি সংক্ষরণ করতে আমরা প্রথম থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। ভূমি কমিশন আইনের জন্য একটি প্রস্তাবনা এরইমধ্যে সারাদেশে উপজাতি প্রতিনিধিদের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাদের সুপারিশ পাওয়ার পর আমরা একটি আইনের খসড়া তৈরি করে যেতে পারবো বলে আশা করছি। যাতে পরবর্তী সরকার এ কাজ দ্রুত শেষ করে নিতে পারে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি চুক্তি পূর্ববর্তি অবস্থায় চলে যেতে পারে জানিয়ে সরকারের সমালোচনা করে মেনন বলেন, আ’লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল আদিবাসীদের ভূমি সমস্যার সমাধান করা হবে। কিন্তু সরকার কারো ইন্ধনে সেখানে থেকে পিছু হঁটছে।

তিনি বলেন, সরকার ভুলে গেলেও আদিবাসী জনগোষ্ঠী এ প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে যাননি। আগামীতে আদিবাসীদের কাছে ভোট চাইতে হলে এই আইনটি জরুরী ভিত্তিতে করতে হবে।

মেনন বলেন, এই সমস্যা সমাধান রাজনৈতিকভাবে করতে হবে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় একটি রাজনৈতিক দল আদিবাসীদের এ দাবি মানতে চায় না।

কলাম লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, হেফাজতের মতো আদিবাসীরা আন্দোলন করতে পারলে তাদের দাবিও মেনে নিত সরকার। কিন্তু আদিবাসীরা হেফাজতের মতো নয়। তাদের বিশ্বদৃষ্টি আছে। হেফাজতিদের তা নেই।

সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, নারী নেত্রী শিরিন আখতার ও খুশি কবির প্রমুখ।

Exit mobile version